× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রেমের অনুগল্প

ব্যাকটেরিয়া

মোস্তাফিজ জুয়েল

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৬ এএম

ব্যাকটেরিয়া

ব্যাকটেরিয়ার নতুন জিন আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে ড. রাকেশ। দুই দিনব্যাপী সেমিনার শেষে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য দেওয়া হবে গবেষণাপত্র। বিশ্বের প্রথিতযশা অণুজীব বিজ্ঞানীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেমিনার কক্ষে সবাই উপস্থিত। দীর্ঘক্ষণ প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর উপস্থিত সবাইকে প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হলো।

‘আপনার গবেষণা সফল হলে কি আর কারও টাইফয়েড হবে না?’

২৫ বছর পরেও এ কণ্ঠ একটুও অচেনা লাগল না ড. রাকেশের। রিনি কেন সেমিনারে?

মস্তিষ্কের টাইম মেশিনে চেপে মুহূর্তে পৌঁছে গেল ২৫ বছর পেছনে। প্রচণ্ড টাইফয়েডে কাঁপতে কাঁপতে বিধবা মায়ের সঙ্গে বেরিয়ে এসেছিল নিজ গ্রাম থেকে। শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির বেশি থাকলেও অন্তর্দহনের কাছে সেটা কিছুই ছিল না। আর কখনও গ্রামে ফিরলে গ্রামবাসী তাদের বাঁচতে দেবে না। একবার কারও টাইফয়েড হলে সে আর বাঁচে না এবং গ্রামের অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে সেটাই রটানো হয়েছিল সারা এলাকায়। একখণ্ড জমি দখলের চক্রান্তের ফলেই বেরিয়ে আসতে হয়েছিল তাদের।

সেদিন গ্রাম ছেড়ে আসার সময় রিনির সঙ্গে দেখা করে আসতে পারেনি রাকেশ। ভেবেছিল হয়তো রিনিরও হয়ে যেতে পারে ভয়ানক টাইফয়েড। চাইলেও সম্ভব ছিল না। কারণ চক্রান্তের অন্যতম প্রধান ছিল রিনির বাবা।

‘আসলে জানতে চাচ্ছিলাম, ব্যাকটেরিয়ার নতুন জিন আবিষ্কারের ফলে রোগতত্ত্বের কী ধরনের অগ্রগতি সাধন হবে? আমি রিনি হক, রোগতত্ত্ব ও অণুজীব বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করছি অস্ট্রেলিয়ায়।’

ড. রাকেশ বাস্তবতায় ফিরে এলে। মনে মনে বলল, রোগতত্ত্বের কতটুকু অগ্রগতি হবে তা হয়তো গবেষণার বিষয়, কিন্তু আজ আমার জীবনতত্ত্বে আমূল অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

হঠাৎই রাকেশ উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলল, আপনাদের সব ধরনের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আগামীকাল দেওয়া হবে।

করিডোরে অপেক্ষায় ছিল রিনি। রাকেশ বেরিয়ে আসতেই বলল, তুমি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করলে তাহলে...

-যার জন্য আমাদের ভালোবাসা শেষ হয়ে গেল আমি তাকে কী করে ছেড়ে দিই?

-সেদিন তোমাদের গ্রাম ছাড়ার খবর জানতে পেরে খুব কেঁদেছিলাম। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছিল যেন। পরে আব্বা আমাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়ে দেয় ছোট ফুপুর কাছে। প্রতিবার দেশে এসে তোমাকে খুঁজেছি কতভাবে। কিন্তু কোথাও পাইনি।

-গ্রাম ছেড়ে আসার পর ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জিতে গেলেও মনে হয় জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত সৈনিক।

-কিন্তু যে ব্যাকটেরিয়া তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিল সে ব্যাকটেরিয়া আমাকে টেনে এনেছে এখানে। কি অদ্ভুত ব্যাপার দেখ। মেইলে আমন্ত্রণপত্রে নাম দেখে তোমার ছবি চেয়েছিলাম ওদের কাছে। তার পর থেকে শুধু প্রহর গুনেছি কবে আসবে সেই দিন!

-তুমি কি একলা এসেছো?

-কেউ থাকলে তো সঙ্গী হবে। আমাকে তোমার বাড়ি নিয়ে যাবে না? দেখাবে না কেমন গুছিয়েছো সংসার?

-একলা মানুষের সংসারে আবার গোছানোর কী আছে!

-কী করবে তাহলে…

-দুজনে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা কি করা যায় এখন?

রাকেশের প্রশ্নে রিনি তার হাত ধরে হাঁটতে থাকল করিডোর ধরে। সামনের দিনগুলোয় অনেক অফুরান আনন্দ যে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা