প্রেমের অনুগল্প
কুমার প্রীতীশ বল
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৭ এএম
হাসি মারা গেছে গত সন্ধ্যায়। ওর ঘরের দরজা বন্ধ। হৃদয় ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি এখনও জেগে আছি।
আদমের মুখে কথাগুলো শুনে হাওয়া বলল, আর কত সময় জেগে থাকবে? জেগে থেকেই বা কী করবে?
আদম তাকে বলল, ধরো আমি নেই। তুমি কী করতে?
সাপ আমাকে ডাকছে বাগানে যেতে। হাওয়া বলল।
যেতে পারো। ও তোমার জানা পথ।
সে পথে সন্ধ্যা নামে। ভুল করে নিষিদ্ধ ফল খেয়ে ফেলি যদি?
চলো তাহলে দুজনে এগিয়ে যাই। একেবারে সূর্যোদয়ের দিকে। যত ভুল সব অন্ধকারে।
তারপর আদম আর হাওয়া বেরিয়ে পড়ে। প্রথমে সাদা পাথর। তারপর জৈন্তা পাহাড়। জাফলং। সারাটা পথ একে অন্যকে হারানোর ভয়ে ভীত ছিল। সূর্যকে মাথায় নিয়ে ঘুরেছে হাওয়া আর আদম। আদম আর হাওয়া। হারানোর ভয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে মধুচন্দ্রিমা। রাতের শামিয়ানা গ্রহণ করেনি সন্ধ্যা নামে যদি!
বকুল এতটুকু বলে থেমে গেল। কেমন যেন মনটাও বিষণ্ন হয়ে পড়ে।
জরির ধৈর্যে আর কুলায় না। সে অস্থির হয়ে ওঠে।
তারপর? তারপর? বলতে বলতে বকুলকে ঝাঁকি দিতে ছিল জরি।
সাপ ওদের পিছু নিয়েছিল। বিষণ্ন বকুল বলল।
জরি চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকে বকুলের দিকে। নিঃশ্বাসও পড়ে না।
তারপর বকুল বলল, সাপ কয়েদ করল ওদের রাতের পিঞ্জিরায়।
জরির প্রশ্ন, কী করে? কী করে?
বকুল বলল, ওরা রাতারকুলে প্রমত্তা হাওরে তখন সাঁতার কাটছিল। জলকেলিও করছিল। চোর-পুলিশ খেলছিল। জলাধারে লুকিয়ে রাখে একে অন্যকে গাছের ছায়ায়। লতায়-পাতায়। নিস্তব্ধ-নীরবতা, অচেনা পাখির গান। আটকে পড়ে সন্ধ্যার মায়াজালে। বিভ্রান্ত হয় হাওয়া। ভুল করে আদমও।
বকুল তারপর থেমে যায়।
জরি এবার আর বিরক্ত করল না। বিষণ্ন বকুলের নীরবতা ভাঙল না।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে জরি।
তারপর আপনমনে বলল, হাওরেও সন্ধ্যা নামে।