প্রেমের অনুগল্প
কঙ্কন সরকার
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৯ এএম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৩ এএম
কেবিনেই চিকিৎসা চলছে। কত দিন যে থাকতে হবে! রিভু খুব ভালোবাসে ওর বউকে। কেবল সংসার পেতেছে। তার মধ্যেই অসুখটা ধরা পড়ল। দুরারোগ্যই। তবে স্ত্রীকে সাহস দিয়ে যায় সে। স্ত্রীও ভালোবাসে খুব।
কিন্তু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে নিজেকে অপরাধী ভাবতে থাকে তুষি। কেননা রিভুকে তার প্রাপ্য ভালোবাসাটাও দিতে পারছে না সে। নিজেকে বলে, কেন এমন হলো!
রিভু সকালে যখনই কেবিনে ঢোকে একটা তাজা গোলাপ নেয় তুষির জন্য। গোলাপ ওর প্রিয় ফুল। ফুল হাতে নিতেই চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে তুষির। রিভু কান্না চেপে হেসে অভয় দেয়।
চিকিৎসা চলছে। তবে রোগীর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। রিভু আর সহ্য করতে পারছে না। কিন্তু উপায় কী! দায়িত্বরত নার্স সাহস জোগায় দুজনকেই। তুষির কেন জানি এ নার্সকে খুব আপন মনে হয়। চিকিৎসাসেবার কর্তব্য ছাড়াও কথা হয়, ভাববিনিময় হয়। কাছের হয়।
একদিন তুষিকে বেশ ভালো দেখাচ্ছে। রিভুর আনন্দ হয়- হয়তো তুষি ভালো হয়ে উঠবে!
নার্সও খুশি। রিভু বাইরে গেলে তুষি নার্সের হাতখানা বুকে টেনে নিয়ে বলে, ওর খুব ইচ্ছে একটা সন্তানের। কিন্তু আমি মনে হয় আর বাঁচব না। নার্স তুষিকে থামিয়ে দেয়।
নার্স কিছু বলতে পারে না, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে তুষির মুখপানে।
পরদিন হাসপাতাল থেকে ফোন পায় রিভু। তাড়াহুড়োয় ফুল নেওয়ার কথা ভুলে যায়। কেবিনে ঢুকেই দেখে ডক্তার আর নার্সেরা বিমর্ষ মুখে দাঁড়িয়ে আছে। রিভু কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। তুষি আর নেই। সব মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে। কাঁদতে পারছিল না রিভু। নার্সটি এগিয়ে আসে। রিভুর হাতে ধরিয়ে দেয় একটা গোলাপ। তুষির দেওয়া শেষ উপহার।