× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফিটনেসে সঙ্গী

ওয়াসি তানজীম

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৫ পিএম

ফিটনেসে সঙ্গী

নামে গ্যাজেট হলেও দেখতে কখনও তা ঘড়ির মতো, কখনও-বা স্লিক ব্যান্ডের মতো। এই ছোট গ্যাজেটই নিমেষে জানিয়ে দেবে আপনার ব্লাড প্রেশার, হার্ট রেট, স্লিপ সাইকেলের নিখুঁত হিসাব

সকালবেলা মর্নিং ওয়াক করে ঘাম মুছতে মুছতেই হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে নিলেন আজ সকালে ঠিক কতটা ক্যালরি ঝরিয়ে ফেলেছেন, হাঁটার গতিবেগ এবং এই মুহূর্তে আপনার হার্টবিট ঠিক কত। এটা কিন্তু কোনো কল্পবিজ্ঞানের গল্পকথা নয়। আধুনিক ফিটনেস টেকনোলজির কল্যাণে এ ধরনের তথ্য এখন হাতের মুঠোই। ফিটনেসপ্রেমীদের কাছে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচ, বডি অ্যানালাইজার, ফিটনেস ব্যান্ড জাতীয় গ্যাজেট। এই গ্যাজেটগুলো নিমেষের মধ্যে ফিটনেস ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অসংখ্য ডেটা তুলে ধরতে পারে। গ্যাজেটগুলো ডেটা সংগ্রহের পাশাপাশি ডেটাগুলোর বিশ্লেষণ করে সামগ্রিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত একটা পরিষ্কার ছবিও মেলে ধরে। ফলে কতক্ষণ ওয়ার্ক আউট আপনার জন্য উপযুক্ত কিংবা কত কিলোমিটার দৌড়ালে আপনি দিনে কতটা ক্যালরি ঝরাতে পারবেন, তা হিসাব রাখা কিংবা পরবর্তী গোল সেট করার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।

ফিটনেস গ্যাজেট যেভাবে কাজ করে

ফিটনেস গ্যাজেট প্রতি মুহূর্তে আপনার অ্যাক্টিভিটি-সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহ করে। এই ডেটা সংগ্রহের জন্য গ্যাজেটে থাকে বিশেষ ধরনের সেন্সর। ফিটনেস ট্র্যাকার হিসেবে স্মার্টওয়াচ ও রিস্ট ব্যান্ড সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ ধরনের ফিটনেস গ্যাজেটগুলো স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি ট্রেন্ডি লুকের জন্য ক্রমশই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়ে উঠছে। স্মার্টফোনের সঙ্গে পেয়ারড থাকে বলে ইনকামিং কল এবং অন্যান্য নোটিফিকেশনও পাওয়া যায়।

প্রথমে ব্লুটুথের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে ‘পেয়ার’ করে নির্দিষ্ট অ্যাপের সঙ্গে সিনক্রোনাইজ করতে হয়। এই অ্যাপের মাধ্যমে কিছু তথ্য যেমনÑ আপনার বয়স, উচ্চতা, ওজন, বিশ্রাম করাকালীন হার্ট রেট ইত্যাদি জানিয়ে দিতে হয়। এরপর এটি ব্যক্তির অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করে ফিটনেসসংক্রান্ত ডেটার বিশ্লেষণ করে এবং ওয়ার্ক  আউট ও ডায়েটের বিষয়ে পরামর্শ দেয়।

জনপ্রিয় কিছু ফিটনেস গ্যাজেট হলো-

ব্যান্ড : ফিটনেস গ্যাজেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ফিটনেস ব্যান্ড। এগুলো স্মার্ট ব্যান্ড নামেও পরিচিত। দেখতে রীতিমতো স্টাইলিশ এবং ওজনে হালকা হওয়ায় সারা দিন পরে থাকতে কোনো অসুবিধা হয় না। এগুলো প্রতিনিয়ত হাঁটা, শরীরচর্চা, সিঁড়ি ভাঙা, হার্ট রেট, পালস রেট ও ক্যালরি বার্নের পরিমাণ মনিটর করে এবং জানান দেয় নির্দিষ্ট অ্যাপের সাহায্যে। 

স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচ : এই ওয়াচ কাজ করে অনেকটা ফিটনেস ব্যান্ডের মতোই। তবে স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচের ডিসপ্লে তুলনায় অনেকটা বড়। বেশিরভাগ স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচ দেখতে সাধারণ ঘড়ির মতো হলেও সময় দেখানোর পাশাপাশি এটি ক্রমাগত আপনার ক্যালরি, অ্যাক্টিভ থাকার সময়, হাঁটার পরিমাণ, হার্ট ও পালস রেট মনিটর করে। ব্যাকলিট এলসিডি স্ক্রিনে সহজেই দেখতে পাবেন তথ্যগুলো। জিপিএস থাকায় স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচ লোকেশন ট্র্যাক করতে পারে। এ ছাড়াও স্মার্ট স্পোর্টস ওয়াচে নানা ধরনের ফিচার থাকে। এর ‘অটোমেটিক রান রিমাইন্ডার’ ওয়ার্ক  আউট করতে মোটিভেট করে। 

স্মার্ট ওয়েইং স্কেল : দেখতে অনেকটা সাধারণ ওয়েইং মেশিনের মতোই। কিন্তু নামের মতোই এই মেশিন কার্যক্ষেত্রেও দারুণ স্মার্ট। এগুলো ব্লুটুথের মাধ্যমে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফলে স্মার্ট ওয়েইং স্কেলে দাঁড়ানো মাত্র স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন ডেটা নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে পৌঁছে যায় আপনার মোবাইলে। স্মার্ট ওয়েইং স্কেল ওজন মাপার পাশাপাশি রেস্টিং হার্ট রেট, বডি মাস ইনডেক্সও পরিমাপ করে। সাধারণত শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকলে কারেন্টের গতি কমে যায়। স্মার্ট ওয়েইং স্কেল এই রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ পরিমাপ করে। এ সমস্ত ডেটা পৌঁছে যায় নির্ধারিত অ্যাপে। ডেটাগুলো বিশ্লেষণ করে এই অ্যাপই জানিয়ে দেবে আপনার আদর্শ ওয়ার্ক আউট প্ল্যান কী রকম হওয়া উচিত। 

গ্যাজেটের ভালো-মন্দ 

যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাদের মধ্যে এ ধরনের ফিটনেস গ্যাজেট খুবই জনপ্রিয়। ওয়ার্ক আউটের নিখুঁত হিসাব হাতের মুঠোয় পেতে ছোট একটা রিস্ট ব্যান্ড কিংবা স্মার্ট রিং-ই যথেষ্ট। ফলে মানুষ ক্রমেই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন হয়ে উঠছে। যারা শরীরচর্চায় নতুন, তাদের মোটিভেট করতেও এই গ্যাজেটের তুলনা নেই। যেকোনো ওয়ার্ক আউটের ক্ষেত্রে উৎসাহ ধরে রেখে শরীরচর্চা চালিয়ে যাওয়া একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে এই গ্যাজেটগুলো পার্সোনাল কোচের মতো দায়িত্ব নিয়ে উৎসাহ ধরে রাখতে সাহায্য করে। 

ফিটনেস গ্যাজেটগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসা পেলেও এগুলোও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। অনেকেরই অভিযোগ, এক বছর টানা ফিটনেস গ্যাজেট ব্যবহার করেও টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। তা ছাড়া এই গ্যাজেটগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। প্রত্যেকের চাহিদা ও প্রয়োজন এক নয়। কারও কোনো শারীরিক অসুবিধাও থাকতে পারে। তাই ফিটনেস অ্যাপের পরামর্শ মেনে একজন উপকার পেলেও অন্যজন নাও পেতে পারে। আবার ওজন খুব বেশি যাদের বা খুব একটা শরীরচর্চা করে না, তাদের ক্ষেত্রে ফিটনেস গ্যাজেটগুলোর দেওয়া ওয়ার্ক আউটের লক্ষ্যমাত্রা মেনে চলা বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে। কেউ আবার অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মনে রাখবেন, গ্যাজেট আপনাকে মোটিভেট করে গাইড করতে পারে। তাই যেকোনো লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার পর একবার ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এই ছোট বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই ফিটনেস গ্যাজেট আপনার বন্ধু হয়ে উঠবে।



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা