হুমায়রা রহমান
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩১ পিএম
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:০১ পিএম
গল্পটির জন্য সুন্দর ছবিটি এঁকেছে নাফিস শাহরিয়ার নিশাত। সে বগুড়ার বীট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ল শোভন। শোভনের বয়স ছয় বছর। সে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। গত রাতে সে এ ছড়াটি পড়েছেÑ ‘সকাল সকাল ওঠে যারা/সকাল সকাল ঘুমায় যারা/ধনে জ্ঞানে স্বাস্থ্যে তারা/হবে হবেই সবার সেরা।’ ছড়াটি পড়ে সে বুঝেছে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে এবং উঠতে হবে খুব ভোরে। তাহলে শরীর ভালো থাকবে এবং সেরা হওয়া যাবে। তাই শোভন তখন দেরি না করে ঘুম থেকে উঠল। উঠেই মায়ের কাছে গেল। মা শোভনকে দেখে অবাক! বললেন, শোভন তুমি এত সকালে উঠলে! ব্যাপার কী? তুমি তো ছুটির দিনে কখনও বেলা ১১টার আগে ওঠো না।
শোভন হেসে বলল, মা আমি একটা ছড়া জানি। মা উৎসুক হয়ে ছড়াটি শুনতে চাইলেন। শোভন ছড়াটি আবার বলল। মা ছড়াটি শুনে হেসে হাততালি দিলেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তার ছোট শোভন এখন আর ছোট নেই। মা শোভনকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, বাবা, এখন তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস। এই তো তুই ছড়া শিখে শোনাচ্ছিস।
শোভন বলল, মা আমি আপুর বই থেকে ছড়া পড়তে চাই। শোভনের আপু ক্লাস ফোরে পড়ে। তার বইয়ে আরও মজার মজার ছড়া আছে। মা বললেন, বেশ। কিন্তু তুমি এক দিনে ওই ২০ লাইনের ছড়া মুখস্থ করতে পারবে না।
শোভন বীরের মতো বুক ফুলিয়ে বলল, পারব আমি। শোভন বই পড়তে লাগল। এত বড় ছড়া! মাত্র দুবার পড়ল। কিন্তু দুবারে যে মুখস্থ হবে না তা শোভন বুঝেছে। সে আরও দুবার পড়ে নিল। পড়তে আর ভালো লাগছে না শোভনের। তাই সে বইয়ের পাতা ওল্টাতে লাগল। কত সুন্দর যে ছড়া-গল্প রয়েছে। সেগুলো পড়ে অনেক মজা পেল সে। মনে মনে বলল, আপুর মতো রঙিন বই আমারও চাই। কী সুন্দর! অবাক হয় শোভন।
হঠাৎ সে ডাকতে লাগল প্রকৃতি মাকে। প্রকৃতি মা সবুজ পাতার মতো ডানা মেলে উপস্থিত হলো। পায়ে গোলাপ ফুলের মতো জুতো। চোখের পাতা হাসনাহেনার পাপড়ির মতো। পরনে সাদা কাপড়। আকাশি পাজামা। হাতে গোলাপি রঙের নেইলপলিশ। গালে লাল রঙের জরি। আর চোখে নীল রঙের আইশ্যাডো। ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক। শোভন হাঁ করে প্রকৃতি মায়ের দিকে চেয়ে আছে। দেখছে তার অপরূপ সুন্দর চেহারাটা। কারণ সে কখনও এত সুন্দর মানুষ দেখেনি। প্রকৃতি মাকে সে বলল, আপুর মতো আমার রঙিন বই চাই। আর সুন্দর সুন্দর ছড়া।
প্রকৃতি মা হেসে বলল, আচ্ছা। শোভন আসলে স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখল সত্যি সত্যি একটা বই তার বিছানায়। রঙিন। আর সেখানে অনেক অনেক ছড়া। শোভন খুব খুশি হলো।
অষ্টম শ্রেণি, কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, নাটোর