× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিশুর মনঃসংযোগ বাড়াতে

নুসরাত খন্দকার

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৯ পিএম

আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৫০ পিএম

শিশুর মনঃসংযোগ বাড়াতে

মনঃসংযোগ করতে অসুবিধা হচ্ছে সন্তানের? কীভাবে তার মনোযোগ বাড়াবেন, সে বিষয়ে রইল কিছু টিপস

রোহানের বয়স আট। ওকে নিয়ে একটা সমস্যায় ভুগছেন মা-বাবা। রোহানের মনঃসংযোগ করার ক্ষমতা বেশ কমে গেছে সম্প্রতি। শুধু পড়াশোনায় নয়, গল্পের বই পড়া হোক বা বাড়ির ছোটখাটো কাজে মা-বাবাকে সাহায্য, কোনোটাই ও বিশেষ মন দিয়ে করে না। এ নিয়ে রবিন আর সুমনা, মানে রোহানের বাবা-মায়ের চিন্তার শেষ নেই। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? এমনিতেই নিশ্চয় এমন হয়নি। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন বা স্ক্রিনের প্রতি অ্যাডিকশন হতে পারে একটি কারণ। চলুন দেখে নিই সন্তানের মনঃসংযোগ বাড়াতে কী করা যেতে পারে।

প্রথমত গ্যাজেট-অ্যাডিকশন

মোবাইলের প্রতি বেশি আকর্ষণের ফলে শিশুর মনোযোগের ক্ষমতা কমে। আর করোনাকালে শিশুর গ্যাজেট-অ্যাডিকশন প্রভূত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল। যার প্রভাব রয়েছে এখনও। গ্যাজেটের ব্যবহার একেবারে বন্ধ তো করতে পারবেন না, কিন্তু সময় নির্দিষ্ট করে দিন। আর তার বদলে জিগস পাজল বা ক্রসওয়ার্ড জাতীয় খেলা খেলতে উৎসাহ দিন বাচ্চাকে। এতে মাথা খাটে, মন দিয়ে ভাবতে হয়। তা ছাড়া এক জায়গায় বসে খেলতে হয়। বলে যাকে ‘ফিজেট করা’ বলা হয়, তার প্রবণতাও কমে যায়। এসবের ফলেই মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ে।

পড়াশোনার ক্ষেত্রে পরিবেশটা খুব জরুরি

শিশুর পড়ার সময় তার ঘর, আশপাশের পরিবেশ কেমন সেদিকে লক্ষ রাখুন। বাচ্চা পড়তে বসেছে আপনি হয়তো পাশে বসে কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন বা মিটিং করছেন কিংবা বাচ্চার পাশে বসেই গৃহকর্মীকে নির্দেশ দিচ্ছেন কী কাজ করতে হবে। এতে যদি ওদের মন পড়ার থেকে সরে যায়, দোষ দেওয়া যায় কি? বাচ্চা যখন পড়াশোনা করবে, ওকে তার উপযুক্ত পরিবেশ দিন।

ওর ঘরে তো বটেই, আশপাশেও তখন যেন কোনো গোলমাল না হয়, যাতে ওর মন সরে যেতে পারে। ওকে বলুন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বইখাতা সব হাতের কাছে গুছিয়ে রাখতে, যাতে বারবার উঠতে না হয়, মন সরে না যায়। ছোট বাচ্চা হলে আপনিই তার দরকারি জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখুন। তা ছাড়া একেক বাচ্চার একেক রকম পরিবেশ পছন্দ। ওর ঘরের লাইটিং বা ছবি ওর পছন্দ অনুযায়ী সাজান, যাতে শিশুর মন শান্ত ও খুশি থাকে।

একেকজনের শেখার ধরন ভিন্ন হয়

বাচ্চাদের শেখার ধরন একেকজনের একেক রকম। কেউ শুনে বেশি ভালো মনে রাখতে পারে। কারও ভিজুয়াল এলিমেন্টস, অর্থাৎ ডায়াগ্রাম, চার্ট, গ্রাফ ইত্যাদিতে বিষয়টা বেশি মনে গেঁথে যায়। কেউ আবার কোনো চ্যাপ্টার পড়ার পর যদি নিজের মতো করে লিখে ফেলে, তাহলে তার আত্মস্থ করতে সুবিধা হয়। বাচ্চার এ বোঝার ধরনটা যদি বড়রা বুঝে সে অনুযায়ী তাদের পড়ান, তাহলে তাদেরও মন বসাতে সুবিধা হয়।

যেকোনো বড় কাজ ছোট ছোট ভাগে ভেঙে দিলে সে কাজ করতে বাচ্চার সুবিধা হয়। কাজটাও মন দিয়ে করে তারা। এটা পড়াশোনার ক্ষেত্রে তো সত্যিই, বাড়ির কাজের ক্ষেত্রেও সত্যি। ধরুন আপনি বাচ্চাকে বললেন নিজের আলমারিটা গুছিয়ে ফেলতে। অনেকেই কিন্তু দোনোমনা করবে, কাজটা ফেলে রেখে দেবে। করলেও মন দেবে না। কিন্তু একেক দিন একেকটা তাক গুছিয়ে রাখতে বলুন, অনেক মন দিয়ে করবে। কাজের জন্য ছোট ছোট সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে গেলে ওকে মনোযোগ দিতে হবে।

প্রতিটি বাচ্চার পছন্দের হবি বা অ্যাকটিভিটি এক হয় না। আপনার বাচ্চা ভালোবাসে গিটার বাজাতে, এদিকে আপনি চান ফাঁকা সময়ে ও শুধু বিভিন্ন ধরনের বই পড়ুক। এতে কিন্তু কারওই লাভ হবে না। হ্যাঁ, বই পড়া নিশ্চয়ই খুব জরুরি। কিন্তু আপনি যদি ওর পছন্দের কাজটা ওকে না-ই করতে দেন, ও কিন্তু আপনার পছন্দের কাজটা মন দিয়ে করবে না। তার চেয়ে মধ্যপন্থায় আসুন। ফাঁকা সময়ে ও ভালোবেসে, মন দিয়ে গিটার বাজাক। ভালো ভালো বই ওকে পড়তে দিন, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করুন, মতামত বিনিময় করুন। ধীরে ধীরে ওর আগ্রহ বাড়বে। আর যে বিষয়ে আগ্রহ, তাতে যে মনোযোগও থাকবে, সে তো বলাই বাহুল্য!

কাজের মাঝখানে বিরতি

একটানা যেকোনো কাজ করতে গেলে ক্লান্তি আসে এবং মনঃসংযোগ কমে। সে কাজে মাথা খাটাতে হোক অথবা হাত-পা। তাই বাচ্চা যাতে নিয়মিত বিরতি নেয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিকালে চাইলে একটু খেলে আসুক বা সাইক্লিং করে আসুক। এক্সারসাইজ হলে মন ভালো থাকে, মনোযোগে ঘাটতিও কম হয়। নজর রাখুন শিশুর খাওয়াদাওয়া এবং ঘুমের দিকেও। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খেলে হজমের সমস্যা এবং আরও নানা গোলমাল হতে পারে শরীরে, যার প্রভাব মাথা এবং মনে পড়বেই। একই কথা ঘুমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এমনিই ক্লান্ত লাগবে সারা দিন। কোনো কাজেই মন বসবে না। আর কাজের ভ্যালিডেশন অত্যন্ত জরুরি। যেকোনো কাজ ঠিকভাবে করতে পারলে যদি একবার ‘খুব ভালো’ বলেন, ওর কাজে উৎসাহ বাড়বে। সঙ্গে মনোযোগ।

মনঃসংযোগ বাড়ানো কোনো রকেট সায়েন্স নয়। সন্তানকে একটু সাহায্য করলেই দেখবেন, সে সব কাজেই আগের চেয়ে বেশি মন দিতে পারছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা