× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মায়াবী মারায়ন তং জাদি

নাকিব নিজাম

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৩১ পিএম

মারায়ন তং চূড়ার পথে অভিযাত্রীরা

মারায়ন তং চূড়ার পথে অভিযাত্রীরা

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬৬০ ফুট বা প্রায় ৫০৬ মিটার অথবা প্রায় অর্ধ কিলোমিটার ওপরে দাঁড়িয়ে দারুণ কিছু অভিজ্ঞতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কেবলই রোমাঞ্চকর নয়, বরং খানিকটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। পাহাড়প্রেমী যেকোনো ভ্রমণপিপাসুর মনে প্রতিকূল অবস্থায় টিকে থাকার মানসিকতা তৈরি হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। নতুন নতুন পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার তীব্র লালসায় নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে এবার আমরা চার কিশোর চলে যাই বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পাহাড় রাজ্যের সর্ব গহিনে থাকা মারায়ন তং জাদি পাহাড়ে 

যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় অর্ধকিলোমিটার এবং এটির সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে আমাদের গুনতে হবে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাহাড়ি ঢালু রাস্তা, যেখানে কোথায় এক সেকেন্ডের জন্য কোনো রাস্তা নিচে নামেনি। যেখান থেকে ট্রেইল শুরু করতে হবে, ওখান থেকে একদম চূড়া পর্যন্ত পুরোটা খাড়া ৭০ ডিগ্রি উঁচু রাস্তা। সম্পূর্ণ নতুন গন্তব্য যেখানে আমরা আগে কখনও যাইনি এবং তেমন একটা জনমানবও দেখা যায় না সেখানে। আছে সাপ কিংবা অজানা ভয়ানক রকমের কীটপতঙ্গের আক্রমণের ভয়। মুখোমুখি হতে হবে অজানা বিভিন্ন রকমের প্রতিকূল পরিস্থিতির।

এতকিছু মাথায় রেখেও মারায়ন তং বিজয়ের কৌতূহল আমাদের চার কিশোরকে আটকে রাখতে পারে না। ঠিক করা হলো বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার মারায়ন তং জাদি পাহাড় সামিট করব আমরা, আশপাশে বোনাস হিসেবে পেলাম আলী গুহার খোঁজ। প্রথমে আলী গুহা, তারপর যাব পাহাড়ে। যথারীতি নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা শুরু হওয়ার আট ঘণ্টার মাথায় আমরা পৌঁছে গেলাম আলীকদমে। বাসস্ট্যান্ড থেকে সকালের নাশতা সেরে নিয়ে নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করা হলো অমানসিক পরিশ্রমের একটা অভিযানের জন্য। আলীকদম যাওয়ার রাস্তাগুলো এতটা আঁকাবাঁকা, ৫০ ডিগ্রি বাঁক থেকে শুরু করে কোথাও কোথাও ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত বেঁকে গিয়েছে রাস্তা।

দুই পাশে গিরি খাদ আর আঁকাবাঁকা রাস্তায় যেখানে নিজের সিটে বসতে হলেও সামনের সিটকে ধরে বসতে হয়, সেখানে আমি সৌন্দর্যের মোহে আকৃষ্ট এতটাই হয়ে গিয়েছিলাম কোন জানালা দিয়ে কোন দিকে দেখব বুঝতে পারছিলাম না। ডানে যেভাবে পাহাড় আঁকড়ে ধরে আছে, একইভাবে বাঁ পাশেও পাহাড়ের সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ। জানালা দিয়ে নিচে তাকাতেই বুঝা যায় এখান থেকে একচুল পরিমাণ পিছলে গেলে কারও বাঁচার কোনো প্রকার উপায় থাকবে না। 

প্রথমত, আমরা আলী গুহার রাস্তা চিনি না। স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করায় একটা সরু রাস্তা দেখিয়ে দিলেন যেটা চলে গেছে সোজা ৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে নিচের দিকে। দ্বিতীয়ত, আগের দিন রাতে বৃষ্টি হওয়ায় মাটিগুলো এতটাই পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল, বুট পরেও গ্রিপ পাওয়া যাচ্ছিল না, একপাশে মাটিতে হালকাভাবে শিকড় গেড়ে ওঠা কিছু গাছকে অবলম্বন করে যে নামব নিচের দিকে তা-ও সম্ভব হচ্ছিল না। ওগুলোতে হাত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো গাছটাই উঠে আসছিল শিকড়সহ। হাতের অন্য পাশে খাদ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আমাদের একমাত্র উপায় বাকি থাকল জুতা খুলে, কাঁধের ব্যাগ মাটিতে গড়িয়ে গিয়ে আমরা নেমে যাব এবং যথারীতি তাই করা হলো। নিচে নেমে দেখা গেল চিকন একটা বাঁশের সাঁকো পার হতে হবে যেটার দৈর্ঘ্য খুব একটা বেশি না হওয়া সত্ত্বেও আমাদের পিচ্ছিল পা দিয়ে পার হওয়াটা একরকম ঝুঁকি হয়ে যাবে। সাঁকো পার করার পর আসলে বুঝতে পারলাম প্রকৃতি আর আল্লাহর সৃষ্টি কী দুর্দান্ত বিষয়। বাইরের প্রচণ্ড তাপে যেখানে সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম, সাঁকো পার করে ঝিরিতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই শরীর একদম বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে যেতে শুরু করল।

শুনেছিলাম ঝিরিতে সাপ বা জোঁকের উপদ্রব খুব বেশি পরিমাণে থাকে, এসব আতঙ্ককে মুহূর্তেই গায়েব করে দিতে যথেষ্ট ছিল দুপাশে পাথরের পাহাড়ের রাস্তা আর এর ভেতরকার শীতল পরিবেশ। ক্রমশই রাস্তা চিকন হওয়া শুরু করলে আমরা যেখান দিয়ে এসেছি একটা করে চিহ্ন ছুড়ে দিতে থাকি যেন ফেরার সময় কোনো অসুবিধা না হয়। রাস্তা একদম সোজা গিয়ে এতটাই চিকন হয়ে গিয়েছিল বাধ্য হয়ে আমাদের সেখান থেকেই ফিরতে হয়েছে। হাতে সময় না থাকায় এবং গুহায় একজন মানুষের দেখা না পাওয়ায় আমরা ভেতরের দিকে যাইনি। এবারের গন্তব্য মারায়ন তং জাদি। স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের একটি তীর্থস্থানও বলা যায় পাহাড়ের চূড়াটিকে।

চূড়ায় দুটো বৌদ্ধ মন্দির আছে, যার দেখাশোনা করেন সেখানকারই একজন স্থানীয় কেয়ারটেকার, যাকে ‘মন্ত্রী’ বলা হয়। তার ভাষ্যমতে, তিনি এই জায়গাটাকে পর্যটকদের থাকার উপযোগী করে রেখেছেন, তা না হলে এটা জঙ্গলে পরিণত হয়ে যেত। ওপরে নেই প্রাকৃতিক কাজ সারার কোনো শহুরে ব্যবস্থা, নেই বিশুদ্ধ খাবার পানি কিংবা রান্না অথবা থাকার কোনো সুব্যবস্থা। এসব কিছুর মানসিকতা নিয়েই আমাদেরকে চূড়ায় আরোহণ করতে হবে। 

আবাসিক বাজার থেকে রাতে খাবারের জন্য শুকনো কিছু খাবার, চারজনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি কেনার পর জানা গেল পাহাড়ের চূড়ায় রাতে অসহনীয় ঠান্ডা পড়ে। আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা হিসেবে কাঠ এবং কেরোসিন কিনে নিয়ে আমরা চূড়ায় ওঠা শুরু করলাম। আমাদেরকে পারি দিতে হবে প্রায় পাঁচ কিলমিটারের মতো পথ। এক কিলোমিটার উঠতেই আমাদের অবস্থা এতটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল যে নিঃশ্বাস নিতে প্রচুর কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। 

দেড় কেজির ব্যাগটাকেও কাঁধে নিতে মনে হচ্ছিল দেড় টনের বোঝা উঠাচ্ছি। অবশেষে দেখা মিলল মুরংপাড়ার কতগুলো বালকের, যারা জানাল ওরা পর্যটকদের ব্যাগ চূড়া পর্যন্ত নিয়ে যায়। মারায়ন তং-এ উঠতে উঠতে পথিমধ্যে কয়েকবার থামতে হয়েছে আমাদের। কখনও ছবি তোলার জন্য, কখনও পেছনে ফিরে ওপর থেকে নিচের এবং আশপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। যত ওপরে উঠছিলাম মনে হচ্ছিল চারপাশ আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠছে। সৌন্দর্যের মোহে আমরা থেমে থেমে উঠে গেছি প্রায় দুই কিলোমিটার। ভরদুপুরে রোদের মাঝে ছায়ার সঙ্গে অবিরাম পা মিলিয়ে চলতে থাকা চার কিশোরের অবস্থা তখন ভয়ানক খারাপ। সঙ্গে নিয়ে আসা ৪ লিটার পানি এবং ১০টা স্যালাইনের মধ্যে ৮টা প্রায় শেষের দিকে।

ওপরে উঠে কীভাবে পানি খাব সে চিন্তা তখন কারও মাথায় নেই। চূড়ায় উঠতে আমাদের গুনতে হবে সর্বমোট ৬টি উঁচু ট্রেইল, যার মধ্যে সবচেয়ে খাড়া ট্রেইলটা ৭২ ডিগ্রি কোণে ভূমি থেকে চূড়ার দিকে চলে গিয়েছে। এই খাড়া পথ বেয়ে উঠতে উঠতে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ। ক্রমেই সবাই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছিলাম, উঠতে পারব কি পারব না, নেমে আসব কীভাবে, আরও চারটা খাড়া ট্রেইল পারি দিতে হবে ভেবেই আমাদের অবস্থা করুণ হয়ে যাচ্ছিল।

যখনই ৩০০ মিটারের এই ট্রেইলটা শেষ করলাম বালকরা আমাদের বলল, “ভাই আপনাদের বোতলগুলা দেন পানি ভইরা আনি”- তাদের জিজ্ঞাসা করায় জানতে পারলাম পাশেই আছে একটা ঝরনার সামান্য একটা ঝিরিপথ যেখান থেকে পানি নিয়ে পাহাড়ের আদিবাসীরা বাস করে। অপেক্ষা না করে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিতে দিতে চলে গেলাম ঝরনার কাছে। ঝরনায় গিয়ে হাত-মুখ ধুয়েই ভিজিয়ে দিলাম শরীরকে। প্রখর তাপের মধ্যে ঝিরি বেয়ে আসা পানিটুকু যে এতটা প্রশান্তি দেবে ভাবতেও পারছিলাম না। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা বিরতি নেওয়ার পর সবাইকে মোটামুটি খুইয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলাম। এবার বেশ ভালো লাগছে সবার শরীর। পায়ের পেশিতে টান লাগলেও মনে হচ্ছে উঠতে পারব। এই ঝিরির পানিটা আমাদের পরবর্তী পথ পারি দিতে অনেক বেশি সাহায্য করেছে। 

পরবর্তী দুইটা ট্রেইল উঠতে বেশ কষ্ট গেলেও আমরা উৎসাহের সঙ্গেই শেষ করলাম। ওপরে উঠে কিছুটা সমতল পেয়ে প্রাচীন অশ্বত্থ গাছের নিচে খানিকটা বিশ্রাম নিতে নিতে উপলব্ধি হলো বাংলাদেশ কতটা সুন্দর এবং সৃষ্টিকর্তা কত সুনিপুণভাবে এসব তৈরি করেছেন। এই ট্রেইলের পরেই মারায়ন তং-এর চূড়া একদম স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। তখনও প্রায় ৮০০ মিটারের মতো পথ বাকি। এখানেই থমকে দাঁড়াতে হলো আমাদেরকে। সামনে থেকে বড় বড় ঘনকালো মেঘের হুংকার দেখে আমরা ক্রমশই বিচলিত হয়ে পড়তে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাগুলোতেই বৃষ্টি বাগড়া দেবে না তো? সবাইকে অবাক করে দিয়ে হুট করেই বাঁ পাশে শুরু হয়ে গেল মুষল ধারে বৃষ্টি এবং উত্তর থেকে বয়ে যাওয়া বাতাসে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো আমাদের গায়ে ছিটে আসতে থাকল।

তখনও আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে প্রচণ্ড উত্তাপের রোদ। আরও কিছুদূর এগোতেই বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা আমাদের গায়ে এমনভাবে আঘাত করতে থাকল যেন মনে হচ্ছিল শীলাবৃষ্টি হচ্ছে এবং শীলগুলো পিঠে কাঁটার মতো এসে বিঁধছে। চারদিকে এতটাই অন্ধকার হয়ে গিয়েছে তখন, মনে হচ্ছিল রাত নেমে এসেছে এবং বড় কোনো ঘূর্ণিঝড় আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। বৃষ্টির মধ্যেই মারায়ন তং জাদির চূড়ায় উঠে গেলাম আমরা। ব্যাগ, তাঁবু সবকিছু ততক্ষণে ভিজে গিয়েছে। বৌদ্ধ মন্দিরের টিনের চাল ছাড়া তখন বৃষ্টি থেকে বাঁচার কোনো উপায় ছিল না। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন আমরাই চূড়ায় সর্বপ্রথম উঠেছিলাম। 

ঘণ্টাখানেক পর বৃষ্টি থেমে আকাশ পরিষ্কার হতেই দেরি না করে আমরা তাঁবু লাগানোর কাজ শুরু করে দিলাম। ততক্ষণে ১২ জনের আরেকটা টিম চূড়ায় উঠে এসেছে। তাদের দেখে কিছুটা সাহস পেলাম। এরপর সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ৯ জনের আরও একটা দল চূড়ায় সামিট করল। তাদেরও পড়তে হয়েছিল বৃষ্টির কবলে। বিকালবেলা সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে যাচ্ছিল, প্রকৃতির অনন্য একটা রূপের দেখা পেলাম আমরা। মনে হচ্ছিল পাহাড় নিজের ছায়াতলে খুব সযত্নে আলতো করে সূর্যটাকে লুকিয়ে রেখে দিচ্ছে। বিকালের স্নিগ্ধ আলো আর সন্ধ্যার রক্তিম আকাশের মিষ্টি একটা পরিবেশ পাহাড়ের চূড়ায় থাকা সবাইকে গভীরভাবে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে। আবছা আলোতে যখন অন্ধকার হবে হবে ভাব, পাহাড়ের চারপাশে তখন মেঘেরা বাসা বাঁধতে শুরু করল। 

অন্ধকার যখন নেমে এলো, রাতের আকাশে সুবিন্যস্ত তারকারাজির ছায়াপথের অমায়িক একটা দৃশ্য ক্রমশই আমাদের ভুলিয়ে দিতে থাকল দিনের বেলার সব পরিশ্রম, সব ভয়াবহতা, সব ধরনের ক্লান্তি-গ্লানিকে। তাঁবুর ছাদ খুলে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে শুধু একটা জিনিসই বারবার চাইছিলাম, সকাল যেন না হয়। এই মধুর পরিবেশ, এই প্রকৃতি ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছে আমাদের কারও করছিল না। তারাগুলো বারবার ভুলিয়ে দিচ্ছিল পাহাড়ের সব নিষ্ঠুরতাকে।

শরীরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সব অত্যাচারকে। পায়ের নিচে মেঘগুলো যখন ছুঁয়ে দিচ্ছিল মনে হচ্ছিল সৃষ্টিকর্তা তুমি ভীষণ অপরূপ। এই অনুভূতিগুলোর কোনো তুলনা হতে পারে না। পরদিন সকালে বাংলাদেশের পতাকা হাতে যখন চারজন একসঙ্গে ছবি তুললাম, সত্যি মনে হচ্ছিল আমাদের কষ্ট সার্থক। আমরা সফল। চূড়ায় দাঁড়িয়ে নিজের দেশের পতাকা ওড়ানোর অনুভূতি ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়। বাংলাদেশ এতটা সুন্দর একমাত্র পাহাড়ের চূড়া থেকেই পুরোপুরি উপলব্ধি করা যায়।

এমন সব মধুর অভিজ্ঞতার কারণেই বারবার পাহাড় আমাদেরকে টানে, হয়তো অন্য কোনোদিন চলে যাব অন্য পাহাড়ে। আবার বাংলাদেশের পতাকা ওড়াব সগর্বে, বুক ফুলিয়ে। এ রকম শখানেক মধুর স্মৃতি নিয়ে পরদিন সকালে সূর্যোদয় দেখেই নেমে এলাম আমরা সমতল ভূমিতে, আমাদের জায়গায়। অবশ্য এই মধুর স্মৃতিগুলো কুড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আমাদেরকে। আগের দিনের বৃষ্টি ইট বিছানো রাস্তাগুলোকে প্রচুর পিচ্ছিল করে দেওয়ায় নামতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

একমাত্র বুট ছিল সুস্থভাবে নেমে আসার একমাত্র অবলম্বন। নামতে নামতে চিন্তা করেছি উঠেছিলাম কীভাবে, এই পথ যেন খুব বেশি কঠিন। এই পথে ওঠা যেন জীবনকে বাজি ধরে ওঠা। অতঃপর একটি সফল অভিযানের মাধ্যমে শেষ হলো আমাদের মারায়ন তং জাদির অভিযান। পাহাড়ে গেলে বুঝা যায় ছোটবেলায় পড়া ভাবসম্প্রসারণের মর্ম, বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। পাহাড় দূর থেকে অনেক সুন্দর, কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভয়ংকর সুন্দর।

ছবি : নাকিব ও ইকরামুজ্জামান 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা