শরিফুল ইসলাম পলাশ
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:২৬ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৩৯ পিএম
তুষি হাগিদক, একজন গারো মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও মেলেনি স্বীকৃতি। ছবি : লেখক
‘নিকমিলমাল’, গারো জনগোষ্ঠীর আচিক ভাষায়, যার অর্থ ‘আবছায়া’। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা একদল গারো নারীর ‘যুদ্ধ ও জীবনের গল্প’ এটি। যার প্রধান চরিত্র গারো মুক্তিযোদ্ধা তুষি হাগিদক। আচিক ভাষায় নির্মিত প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রমাণ্য চলচ্চিত্র। তুষি হাগিদকের যুদ্ধদিনের কথা ও প্রামাণ্যচিত্র গড়ে ওঠার গল্প নিয়ে লেখা।
২০১৭ সালের শেষ দিকে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন ধরনের গল্পের সন্ধানে ছুটছি। মুক্তিযুদ্ধের চাপা পড়ে থাকা গল্প হলে তার শেকড় সন্ধানের আগ্রহটা আরও আগের। একদিন ইউটিউবে মিঠুন রাকসাম দাদার দেওয়া ভিডিও ক্লিপ চোখে পড়ে। একজন গারো নারী যুদ্ধদিনের গল্প বলছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি তুষি হাগিদক। গারো ভাষার স্বনামখ্যাত কবি মতেন্দ্র মানখিন তার স্বামী। নম্বর সংগ্রহ করে কথা বলি মতেন্দ্র মানখিন দাদার সঙ্গে। সবকিছু শোনার পর তিনি নিমন্ত্রণ করেন। কিন্তু যাব, যাচ্ছি করে সময় চলে যায়।
এক দুপুরে গিয়ে হাজির হই ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘোষগাঁওয়ে নিতাই পাড়ের ‘ছায়াকানন’-এ। গারোদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় সবে শুরু, তাই ভাষাসহ কিছু বিষয়ে সংশয় তো ছিলই। মতেন্দ্র দাদার আতিথেয়তা আর বীরনারী তুষি হাগিদকের জীবনের গল্প শুনে তা কাটতে সময় লাগেনি। একসময়ের বেসরকারি স্কুলশিক্ষিকার স্মৃতিতে তখনও জ্বলজ্বলে একাত্তরের ভয়াবহ দিনগুলো, ভাঙা বাংলায় অকপটেই বললেন সবকিছু।
গারো মুক্তিযোদ্ধা তুষি হাগিদক
১৯৭১ সালে ১১ নম্বর সেক্টরের ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন নিরঞ্জন সিংহ চৌহানের গড়া কমলা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন একদল গারো নারী। সবাই নেত্রকোণার সীমান্তঘেঁষা কলমাকান্দা উপজেলার লেঙুড়ায় বসবাস করতেন। সবার পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল সীমান্তের ওপারে শরণার্থী ক্যাম্পে। উত্তাল দিনগুলোয় বালুচরা সেক্রেড হার্ট স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক গ্যাব্রিয়েল রাংসার কথায় অনুপ্রাাণিত হয়ে তারা রণাঙ্গনের পথে পা বাড়ান।
যুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও গোপনে পাকিস্তানিদের আনাগোনার তথ্য সরবরাহ থেকে অস্ত্র পরিচালনা সব কাজই করেছেন সমাজ ও পরিবারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে। নারী মুক্তিযোদ্ধাদের দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন মল্লিকা ঘাগ্রা। অন্যদের মধ্যে ছিলেন তুষি হাগিদক, মগ্ধলিনা নেংমেঞ্জা, সঞ্চিতা জরিনা রেমা, পরিচয় চিসিম, সেলিনা হাউই, রিতা নকরেক, জিতা নকরেক, টুনটুনি নকরেক, ছায়া বনোয়ারি, সুজানা জাম্বিল, মুকুল আজিম, রচিতা হাগিদক, বেঞ্জিনা নকরেক, হাসিনা বনোয়ারিসহ ১৫ জন, যাদের অনেকেই এখন প্রয়াত। বেঁচে থাকা অন্য ছয়জন নেত্রকোণা, ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার পর দেশজুড়ে অচলাবস্থায় ভয়-আতঙ্কে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় গোপন করে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান এই বীরনারীরা। স্বাধীনতার পর কেটেছে অর্ধশত বছর। আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি সেই নারীরা। স্বীকৃতির জন্য ঘুরছেন দায়িত্বশীলদের দ্বারে দ্বারে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে এখনও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আপিল-শুনানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ পুরো প্রক্রিয়াটি। সেই বীরনারীদের একজন তুষি হাগিদক। যাদের যুদ্ধকালীন জীবন এবং স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরও বঞ্চিত থাকার গল্প এখনও আদিবাসী নতুন প্রজন্মের অজানা। তুষি দিদির সঙ্গে বেশ সময় নিয়ে কথা বলার পর মুক্তিযুদ্ধের অজানা একটি অধ্যায়ের সন্ধান পাই। শুরু হয় তথ্য-তালাশ, কিন্তু পেশাগত কাজের চাপে সময় ক্ষেপণের মুখে পড়ি।
২০১৯ সালে আরেক দফায় দিদির মুখোমুখি হই। প্রাথমিক প্রস্তুতির জন্য তার জীবিত সহযোদ্ধাদের সম্পর্কে জানাটা জরুরি ছিল। দিদি সাবলীলভাবেই রণাঙ্গনের, প্রত্যাশা ও অপ্রাপ্তির গল্প শোনান।
দিদি বলেন, ‘১৯৭১ সালের এপ্রিল নাগাদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক আর্মিরা আমাদের গ্রামের খুব কাছেই রংরা ক্যাম্পে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। একদিন রাস্তায় এক কিশোরকে কয়েকজন পাকিস্তানি আর্মি, এই ছোকরা লাড়কি হায় না লাড়কি? যা লাড়কি লিয়ে আয় বলে নির্দেশ দেয় তাকে। লাড়কি বলতে জেবি বুঝেছিল লাকড়ি বা খড়ি। জেবি এক বোঝা লাকড়ি মাথায় করে নিয়ে এলো। আর তা দেখে পাক আর্মিরা তাকে ভীষণ মার দেয়। এ ঘটনা গ্রামে জানাজানি হলে আমার ভীষণ রাগ হয়। মনে হয়, মেরে ফেলি পাঞ্জাবিদের। এর পরও ভেবেছি যদি সুযোগ পাই যুদ্ধে যাব।’
তুষি হাগিদক বলেন, একসময় সে সুযোগও পেলাম। একদিন প্রতিবেশী এক দিদি মল্লিকা ঘাগ্রা এসে জানাল, রংরা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন চৌহান পুরুষের পাশাপাশি নারীদের জন্যও একটি ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেছেন। নারীদেরও মুক্তিযুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে। আমি রাজি হয়ে যাই। আমরা ১৭ জন নারী একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। আমাদের ক্যাম্পের নাম ছিল কমলা ক্যাম্প।
তুষি দিদি জানান, তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত পাঠানো হয়নি। তা ছাড়া একসময় যুদ্ধজয়ের সময়টাও ঘনিয়ে এসেছিল। তাদের মূলত তিনটি কারণে রিক্রুট করা হয়েছিল। প্রথমত, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাশুশ্রূষা ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া, দ্বিতীয়ত, গুপ্তচর বা গোয়েন্দাগিরির কাজ এবং তৃতীয়ত, প্রয়োজনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ। যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় তাদের।
তুষি হাগিদকের কথায় আগ্রহটা আরও বাড়ে। কিন্তু কিছু বাধার কারণে বয়ে যায় আরও তিন বছর। যুদ্ধে যাওয়া কেন্দ্র করে পরিবার-সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও অকপট ছিলেন তিনি। এর মধ্যেই সন্ধান পাই ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার রনি’র। বেশ ঝুঁকি নিয়ে নিজের প্রিয় ক্যামেরা বিক্রি করে কাজটা শুরু করি। পরে বেসরকারি সংস্থা ‘বন্ধু’ পাশে দাঁড়ায়। কষ্ট হলেও প্রথম কাজটি প্রকাশ করে বেশ সাড়া মেলে। সেই প্রেরণা পুঁজি করে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে যুদ্ধে যাওয়া ‘রণাঙ্গনের তিন কন্যা’ ইরা কর, গীতা কর ও ভক্তি করের যুদ্ধদিনের গল্প নিয়ে কাজ করি।
এ দুই কাজ আর পেশাগত দায়িত্বের চাপে ‘আবছায়া’র কাজ আর এগোয় না। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে দিদির সঙ্গে দেখা করে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করছি। কয়েক বছরে ঘোষগাঁও ও আশপাশ গ্রাম হয়ে উঠেছে নিজের গ্রাম। নিতাইয়ের মাঝি থেকে দীঘলবাগের ছোট্ট শিশুটিও আপন হয়ে উঠেছে। কিন্তু যেজন্য এত কিছু সেই কাজটি এগোচ্ছে না।
২০২২ সালের মাঝামাঝি প্রিয় মানুষ বিধান সাহার মাধ্যমে আদিবাসী অধিকারকর্মী সোহেল হাজং দাদার সঙ্গে পরিচয় হয়। সবকিছু শুনে থাইল্যান্ডের মানবাধিকার সংগঠন এশিয়া ইন্ডিজেনাস পিপলস প্যাক্ট (এআইপিপি) অফিসে একটি প্রস্তাব দিতে বলেন। পাশে দাঁড়ায় সংস্থাটি।
নতুন কিছু করার তাগিদ থেকেই ঠিক করি এবার গারো জনগোষ্ঠীর ‘আচিক’ ভাষায় প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হবে। মতেন্দ্র দাদাও সম্মত হলেন ভাষা বিষয়ক জায়গাগুলো দেখে একটি চিত্রনাট্য তৈরির জন্য। সবার সহায়তায় জটিলতা উতরে ‘নিকমিলমাল’ হয়ে উঠল গারো ভাষায় প্রথম কোনো মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র।
দৃশ্যধারণের জন্য দুর্গম গ্রাম ঘোষগাঁওয়ে যাওয়ার পর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ি আমরা। দৃশ্যায়ণের জন্য বাঙালি পেশাদার শিল্পী মিললেও এত কম সময়ে ভাষাটা রপ্ত করা অসম্ভব। আদিবাসীদের মধ্যেও পেশাদার শিল্পী কম। নিতাই পাড়ের মেঠো পথে রাতভর আড্ডায় বেরিয়ে আসে নতুন ভাবনা, ঠিক হয় স্থানীয় সাধারণ লোকজনকে দিয়েই চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তোলা হবে। কয়েক দিন ধরে ছবির মতো সুন্দর সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘোষগাঁও ও দীঘলবাগ ঘুরে চলে নতুন মুখের সন্ধান। সংশয় থাকলেও নতুন মুখ নিয়েই শুরু হয় গল্প বলা। সে সময় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে যেগুলো ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ছিল। সীমান্ত এলাকায় ‘ডামি রাইফেল’ নিয়ে চলাফেরাও সহজ ছিল না। কারণ ওপার থেকে দেখলে সেগুলোকে ‘ডামি’ বোঝার কোনো সুযোগ ছিল না। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আন্তরিকতায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে সে কাজটিও সহজ করে দিয়েছেন বিজিবি সদস্যরা।
গ্রামের সাধারণ মানুষ আমাদের যেভাবে সহ্য করেছে সেটা অকল্পনীয়। স্থানীয় অটোচালক, নাট্যকর্মী থেকে চা-দোকানদার সবাই এগিয়ে এসেছেন দিনরাত এক করে। সবাই নিজের মতো করে পুরোনো দিনের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছেন। সবার আন্তরিকতা না থাকলে কাজটি নির্ধারিত সময় ও বাজেটের মধ্যে করা অসম্ভব ছিল।
মাঠের লড়াইয়ের পর শুরু হয় আরেক জটিলতা। ভাষা জটিলতায় কাউকে দিয়ে এডিটিংয়ের কাজটি করানো যাচ্ছিল না। যে কারণে তুষি দিদির ছোট ছেলে বিবাল হাগিদকের সহায়তায় নিজেকেই সে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। গল্প বলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পেয়েছি সহযোদ্ধা শাহানাজ সুলতানার কাছ থেকে। রূপম রায়, শাহী আফজালী,
পূর্ণিমা নকরেক, সৃষ্টি বড়ুয়া রিয়া দিদি ও মতেন্দ্র দার সহযোগিতায় কাটিয়ে উঠেছি সেই জটিলতা। চলচ্চিত্রটির আবহ সংগীতের কাজ করেছেন কানাডিয়ান বন্ধু জ্যাকুলিন-এরিখ দম্পতি।
এ কাজ করতে গিয়ে অবাক হয়েছি, সরল-সহজ এই নারী-পুরুষরা তেমন কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই জীবনে প্রথমবার লাইট-ক্যামেরার সামনে নিজেদের যেভাবে তুলে ধরেছেন। এত শ্রমের পর গারো অধ্যুষিত এলাকায় চলচ্চিত্রটির অন্তত ১০টি প্রদর্শনী করা হয়েছে। আর বিদেশি কিছু চলচ্চিত্র ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে। ইতালিয়ান একটি ফেস্টিভ্যালে ‘বিশেষ মনোনয়ন’ পেয়েছে। সেই সূত্রে মার্কিন একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এটিকে স্থান দিয়েছে। স্থানীয় প্রদর্শনীতে গারো জনগোষ্ঠীর মানুষের প্রতিক্রিয়া নতুন পথচলার প্রেরণা। অনেকে প্রথমবার চেনা নারী-স্বজনদের বীরত্বের গল্পটি জেনেছেন। সব মিলিয়ে ‘নিকমিলমাল’ নতুন পথের দিশা দিয়েছে। যে পথ ধরে একদিন আরও বড় পরিসরে এবং গণমানুষের উপযোগী করে যুদ্ধদিনের গল্প সবার সামনে আনতে পারব।
শেষ করি তুষি হাগিদকের কথা দিয়ে। যুদ্ধ শেষ হলো। স্বাধীন হলো দেশ। তার অন্য সহযোদ্ধা নারীরা ঘরে ফিরে এলেও যুদ্ধে যাওয়ার কারণে সামাজিক বাধায় তুষি হাগিদক ঘরে ফিরতে পারেননি। পরিবার থেকেও ‘না’ করে দেওয়া হয়েছে। অবশেষে স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপে ঘরে ফেরেন। স্কুলে ভর্তি হয়ে ১৯৭৩ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর একটি শিক্ষকতা শুরু করেন স্কুলে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবার নিহত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গারো পল্লীতে। চারদিকে নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। মায়ের কাছে এ খবর শুনে বিচলিত হয়ে যুদ্ধদিনের তথ্যসংবলতি কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেন তুষি হাগিদক। এরপর নিজেকে আড়াল করে হারিয়ে যান কালো আবছায়ায়। প্রায় ৩০ বছর গোপন ছিল তার একাত্তরের বীরত্বের গল্প। ২০১৪ সালে মল্লিকা ঘাগ্রা এসে খোঁজ করেন তাকে ও তার সহযোদ্ধাদের। ওই বছরই আবেদন করেন তারা কয়েকজন। ২০১৮ সালে তথ্যপ্রমাণের অভাবে সেই আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর শুরু হয় তার স্বীকৃতি পাওয়ার লড়াই।
যুদ্ধে যাওয়া প্রসঙ্গে তুষি হাগিদক বলেছিলেন, ‘দেশ তো আমাদের সবার, আমাদের পূর্বপুরুষদের। তাই দেশের প্রতি দায়িত্ব ও ভালোবাসার টানেই মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’ আর তাই তো তিনি অবলীলায় বলতে পারেন, ‘স্বীকৃতি না পেলেও কোনো আক্ষেপ নেই।’ যে কথা এখনও কানে বিষের বাঁশি হয়ে বাজে।