গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৮ পিএম
আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা একাকিত্ব পছন্দ করে। তবে কিছু কিছু সময়ে একাকিত্ব এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে জীবন দুঃসহ হয়ে ওঠে। তখন চারপাশের মানুষের আনন্দে সে হতাশা অনুভব করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারি হঠাৎ করেই বিশ্বের মানুষকে সামাজিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এ কারণেই একাকিত্ব বেড়েছে অনেকের মধ্যে। বেশিরভাগ মানুষই একাকিত্বের কাছে হেরে যায়। তাই নিজেকে ভালো রাখতে নিজেই এগিয়ে আসুন।
নিজেকে মেলে ধরুন
একাকী ব্যক্তিরা সব সময় নিজের সঙ্গে সময় কাটাতেই ভালোবাসেন। তারা মনের কষ্টে অন্যদের এড়িয়ে চলেন। এমনটি না করে নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরুন। নিজের ভেতরের সৃজনশীল গুণগুলো প্রকাশ করুন। যদি ভেবে থাকেন নিজের ভেতরে কোনো সৃজনশীলতা নেই, তাহলে চিন্তা করে বের করুন কোন কাজটায় আনন্দ পান। ধরুন গান করতে বা শুনতে ভালো লাগে, তাহলে তা-ই করুন। সৃজনশীল যেকোনো শাখায় নিজেকে মেলে ধরতে নগরে এখন অনেক পাঠশালা রয়েছে। যোগাযোগ করে সময় মিলিয়ে যুক্ত হয়ে নিন।
সামাজিক কাজে যুক্ততা
নিজের সময়কে অর্থবহ করে তুলতে একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যেকোনো সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হতে পারেন। এতে একাকিত্ব যেমন দূর হবে, সঙ্গে মানসিক প্রশান্তিও পাওয়া যাবে।
ডিজিটাল আসক্তি কমান
বর্তমানে ছোটবড় সবাই ডিজিটাল টেকনোলজিতে আসক্ত। এর ফলে পাশের মানুষটি কী করছে, কেমন আছে অনেকেই বুঝতে পারে না; যা অনেকের জীবনেই খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ডিজিটাল আসক্তি কমিয়ে পাশের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। খুব বেশি একা থাকতে ইচ্ছে করলে বই পড়ুন। বই মানুষকে নতুন পৃথিবীর সন্ধান দেয়। বেঁচে থাকার শক্তি জোগায়।
প্রাণের সাহচর্যে
কারও যত্ন নেওয়া একাকিত্বের অনুভূতি কমাতে পারে। তাই ঘরে একটি পোষ্য রাখতে পারেন। দেখবেন পোষ্যের যত্ন নিতে নিতে সময় কেটে যাবে আপনার। এ ছাড়া বাসার বারান্দায় বা ছাদে বিভিন্ন গাছের বাগান করতে পারেন।
গন্তব্য হোক স্থির
একটি অর্থপূর্ণ জীবনের জন্য উদ্দেশ্য ঠিক করা জরুরি। আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। যখনই ভাববেন জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, তখনই নতুনভাবে জীবন গড়ার বিষয়ে ভাবুন। খুবই নিঃসঙ্গতা বোধ করলে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। চাইলে নতুন বন্ধুও খুঁজে নিতে পারেন।
ইতিবাচক হোন
কোনো বিষয়কে হতাশাজনক দৃষ্টিতে না দেখে বরং ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখুন। গ্লাসের অর্ধেকটা পানি থাকলে তা অর্ধেক খালি হিসেবে নয় বরং অর্ধেক ভরা হিসেবেই দেখুন। উৎসাহমূলক বক্তব্য শুনুন এবং মনের নেতিবাচকতা কাটিয়ে উঠুন।
প্রয়োজনে পরামর্শ নিন
আপনার একাকিত্ব যদি আত্মহননের পথে নিয়ে যায়, তাহলে দ্রুত থেরাপিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মনোবিদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে দেখবেন আপনি আবারও বেঁচে থাকার আনন্দ ফিরে পাবেন।