আব্দুস সবুর
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৩২ পিএম
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৫ পিএম
অলংকরণ : নিশাত, নবম শ্রেণি, বীট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া
সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে ফাহিমের দৃষ্টি পড়ল একটি শালিকছানার ওপর। ছানাটি একটি গাছের ডালে বসে চেঁচামেচি করছিল। পাখির প্রতি ফাহিমের খুব লোভ। সে পাখি পুষতে চায়। পাখিকে নিজের কাছে নিয়ে আদর করতে চায়। কিন্তু যখন সে পাখির কাছে যায় তখনই পাখি উড়ে চলে যায় অনেক দূর। ফাহিমের ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যায়। কিন্তু আজ ফাহিম বদ্ধমূল প্রতিজ্ঞা করল এই ছানাটি সে ধরবেই। সে আস্তে আস্তে উঠে পড়ল। নিঃশব্দে সে ছানাটির দিকে হাত বাড়াল। ছানাটি কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে খপ করে ধরে ফেলল।
বাসায় এনে সে ছানাটিকে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করল। কিন্তু ছানাটি একটি দানাও মুখে দিল না। সে শুধু চেঁচাতে লাগল। সারা রাত এভাবেই কেটে গেল তবু ছানাটি কিচ্ছু খেল না। এমনকি তার চেঁচামেচিও থামল না। অসহায় ছানাটির প্রতি ফাহিমের মার খুব দয়া হলো। সকালবেলা তিনি ফাহিমকে ছানাটি তার আপন স্থানে রেখে আসতে বললেন। কিন্তু ফাহিম শুনল না। সে বলল না আমি ওকে আমার কাছেই রাখব। আমি ছানাটিকে সযত্নে বড় করে তুলব। ফাহিমের মা বুঝতে পারলেন এভাবে বললে সে বুঝবে না। তাকে কৌশলে বোঝাতে হবে। তিনি ফাহিমকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। বললেন, আচ্ছা ফাহিম বলো তো একটি মানবশিশু সবচেয়ে বেশি আনন্দে থাকে কখন? ফাহিম উত্তর দিল যখন সে তার মায়ের নিকটে থাকে। ফাহিমের মা আবার জিজ্ঞেস করলেন যদি তাকে তার মায়ের কাছ থেকে দূরে রাখা হয় তখন সে কী করে? ফাহিম উত্তর দিল অত্যন্ত কষ্ট পায় এবং কাঁদতে থাকে। এবার মা ফাহিমকে বললেন মনে রেখো পাখিরও মা আছে। যদি পাখিকে তার মায়ের কাছ থেকে দূরে রাখা হয় তখন পাখিও কষ্ট পায় এবং কান্নাকাটি করে যেমন এই ছানাটি কাঁদছে।
যাও ছানাটিকে তার মায়ের কাছে রেখে আস। তা না হলে সে তো না খেয়ে মারা যাবে। আর ওর মাও হয়তো ওর জন্য কিছু খায়নি নিশ্চয়।
মায়ের কথায় ফাহিম তার ভুল বুঝতে পারল। সে সঙ্গে সঙ্গে ছানাটিকে যেখান থেকে নিয়ে এসেছিল সেখানেই রেখে এলো। সঙ্গে সঙ্গে সে এ প্রতিজ্ঞাও করল, সে আর কখনও ছানাপাখি ধরবে না। মা পাখিও না। এরপর সে আর কোনোদিন পাখি ধরেনি।
পঞ্চম শ্রেণি, ধুনট পাইলট হাইস্কুল, ধুনট, বগুড়া