× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মুদ্রায় আঁকা আমাদের বিজয়

এসএএইচ ওয়ালিউল্লাহ

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৭ পিএম

বিজয় দিবম উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত স্মারক মুদ্রা

বিজয় দিবম উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত স্মারক মুদ্রা

মুদ্রা হচ্ছে অর্থনীতির প্রধান বিনিময়মাধ্যম এবং একটি দেশের সার্বভৌমত্বের অন্যতম নিদর্শন। মুদ্রা যেমন একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার বর্ণনা করে, তেমন সে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক ছবিও তুলে ধরে। বাংলাদেশের মুদ্রাও তার ব্যতিক্রম নয়। এ দেশের মুদ্রায় জাতির জনক, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা, আবহমান বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন এবং বিশেষত স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মারক অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাদ যায়নি  বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন মহান বিজয় দিবস।

স্মারক ধাতব ও কাগুজে মুদ্রায় জাতির জনক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাত বীরশ্রেষ্ঠ এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি ব্যবহার করে বাঙালির মহান এ অর্জন নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের অর্জন ও আনন্দ স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত পৃথক দুটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা ও দুটি স্মারক কাগুজে নোট প্রকাশ করেছে।

সর্বপ্রথম ১৯৯১ সালে ২০তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ১ টাকা অভিহিত মূল্যের একটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা প্রকাশ করে। যার মুখ্য পিঠে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং গৌণ পিঠে সাত বীরশ্রেষ্ঠের মুখাবয়ব।

এরপর ১৯৯৬ সালে বিজয় দিবসের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বাজারে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রচারিত (Circulated) স্মারক নোট ছাড়া হয়। লুৎফর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এ নোটটির মুখ্য দিকে (ডানে) টাঙ্গাইলের বিখ্যাত আতিয়া জামে মসজিদের ছবি এবং (বাঁয়ে) জলছাপের নিচের দিকে ‘বিজয় দিবস রজতজয়ন্তী ’৯৬’ কথাটি মুদ্রিত রয়েছে। আর গৌণ দিকে রয়েছে কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ের ছবি।

এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১১ সালে বিজয় দিবসের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৪০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট ও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

৪০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোটের এক পিঠের বাঁ পাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আঙুল তোলা প্রতিকৃতি ও ডান পাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির নিচে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এবং এর নিচে ইংরেজীতে Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman মুদ্রিত রয়েছে।

নোটটির অন্য পিঠে অস্ত্র উঁচিয়ে দণ্ডায়মান জাতির সূর্যসন্তান ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি এবং প্রতিকৃতির ওপর দুই লাইনে ‘বাংলাদেশের বিজয়ের চল্লিশ বৎসর’ ও 1971-2011 লেখা রয়েছে। আর ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতির নিচে ইংরেজিতে BANGLADESH BANK ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে।

১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক রৌপ্যমুদ্রাটিরও এক পিঠে বঙ্গবন্ধুর তর্জনী আঙুল তোলা প্রতিকৃতি ও প্রতিকৃতির ওপর দুই লাইনে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এবং প্রতিকৃতির নিচে ইংরেজিতে Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman এবং এর নিচে বাংলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইংরেজিতে BANGLADESH BANK লেখা রয়েছে। অন্য পিঠে স্থান পেয়েছে পূর্বোক্ত স্মারক নোটের আদলে ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। প্রতিকৃতির ওপর ‘বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় বার্ষিকী’ ও নিচে 40th Victory Anniversary of Bangladesh মুদ্রিত রয়েছে।

এ স্মারক মুদ্রা ও নোটের গৌণ পিঠে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি অঙ্কিত হয়েছে, তা ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের বিজয়ের মুহূর্তের বাস্তব ঘটনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে এ মুদ্রা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে মুদ্রায় স্থান পাওয়া ছয় মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে পাঁচজন যোগ দেন! যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মাহবুব জামান ও ডা. আমানউল্লাহ এবং একাত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র আবু মুসা হাসান।

গাঢ় লাল, কমলা ও সবুজ রঙের সমাহারে সাজানো এ নোটটির আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে ইলেকট্রোটাইপ ১০-এর জলছাপ রয়েছে; যার অর্থ, ১০ টাকার নোট তৈরির অতিরিক্ত কাগজ দিয়ে তৈরি।

মূলত স্মরণ থেকেই স্মারক শব্দের উৎপত্তি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান এবং ঘটনাসমূহ স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনিয়মিত ও অবিনিময়যোগ্য যে মুদ্রার প্রচলন করে তা-ই স্মারক মুদ্রা। 

এ মুদ্রা কোনো প্রকার বিনিময়মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট দেশে বেড়াতে গেলে তাদের কাছে নিজের দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই এসব স্মারক মুদ্রা উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তবে যেকোনো নাগরিক শখের বশে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে এসব মুদ্রা কিনতে পারে।

স্মারক মুদ্রা সংশ্লিষ্ট দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নির্দিষ্ট সময়ের সাক্ষী। এগুলোর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া সময় ও অতীত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা