রুবাইয়া হাসনাইন
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৮ পিএম
অলংকরণ : রাইয়্যা খায়ের, অষ্টম শ্রেণি, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
সাদিয়ার সঙ্গে কাল ঘুরতে যাব, মাকে বলতেই মা রাজি হয়ে গেল। কোথায় যাব? তা কিছু বললাম না, মাও কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। নিজেকে পাখির মতো স্বাধীন মনে হলো। পাখির মতো যেখানে খুশি উড়ে বেড়াব, আহ! কী যে ভালো লাগছিল তখন। সকালে সাদিয়াদের বাসায় গেলাম। সাদিয়াকে নিয়ে ঘুরতে যাব, কোথায় যাওয়া যায়, তা ভাবিনি। সাদিয়ার মা কোনো আপত্তি করলেন না, তবে সাদিয়ার বাবা বললেন, কোথায় যাবে তোমরা? সাদিয়া বলল, স্কুল মাঠে। স্কুল মাঠে কেউ ঘুরতে যায়? সাদিয়ার বাবা বললেন। সাদিয়া বলল, হ্যাঁ বাবা, আজ ১৬ ডিসেম্বর। স্কুল মাঠে গ্রামের বড় ভাইয়েরা নানান আয়োজন করেছে, অনেক লোকজন আসবে, আমরাও সেখানে ঘুরতে যাব। ঠিক আছে যেতে পারবে, তবে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, বলো তো, বিজয় দিবস মানে কী? সাদিয়া বলল, এটা জানি বাবা, বিজয় দিবস মানে শক্রমুক্ত হওয়ার দিন। এই দিনে আমাদের দেশটার জন্ম হয়েছিল। এটা মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। সাদিয়ার বাবার ঠোঁটে তখন নরম হাসি ভেসে উঠল, বলল, ঠিক বলেছ। তুমি পাস নম্বর পেয়ে গেছ, এবার যেতে পারো। সাদিয়া খুশি হয়ে এক দৌড়ে ঘরের ভেতরে যেয়ে দেখে, তার জামাটা মাটিতে পড়ে ময়লা হয়ে গেছে, এখন উপায়? কী পরে যাবে? সাদিয়া কিছু ভেবে পাচ্ছে না। সাদিয়ার মা বলল, তোমার জন্য একটা লাল-সবুজ রঙের ছোট শাড়ি এনেছিলাম, ওটা পরে যাও। সাদিয়া শাড়ি পরতে চাইছিল না। তাই সাদিয়াকে বললাম, তুমি আমার জামাটা পরো, আমি শাড়ি পরে নিই, সাদিয়া রাজি হয়ে গেল। তারপর আমরা স্কুল মাঠে পৌঁছালাম, তখন দুপুর, মাঠে অঙ্ক দৌড়ের খেলা শেষ হয়েছে। হঠাৎ মাঠের দক্ষিণ পাশ থেকে একদল গায়ে কাদা মেখে, কলাগাছ দিয়ে বন্দুক আর মাথায় পতাকার মতো ব্যাচ বেঁধে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল। চেনাই যাচ্ছিল না। আর উত্তর দিকের কোনা দিয়ে পাকবাহিনী সেজে আরেক দল ঢুকে পড়ল মাঠের ভেতরে। উভয় দলের মধ্যে তুমুল লড়াই হলো। প্রতীকী লড়াই, কারা যেন বাইরে থেকে বাজি ফোটাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন সত্যি সত্যি যুদ্ধ চলছে। ভয়াবহ এক চিত্র! অনেকক্ষণ যুদ্ধ করার পর পাকবাহিনী হেরে গেল।
ষষ্ঠ শ্রেণি, ইউরিয়া সার কারখানা কলেজ, পলাশ, নরসিংদী