শুনতে কী পাও
দেবাশীষ দত্ত
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:১৮ এএম
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৫ পিএম
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় কুষ্টিয়ার নদী কালীগঙ্গায় এখন মৃতপ্রায়
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর শাখা নদী কালীগঙ্গায় এখন মৃতপ্রায়। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শেষ প্রান্ত কুমারখালী উপজেলার ছেউরিয়া গ্রামে কালীগঙ্গার উৎসমুখ।
অভিযোগ রয়েছে, বাঁধ দিয়ে রেলপথ ও সড়ক নির্মাণের পর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নদী দখল করে মাছ চাষ, ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। এরপর থেকেই প্রায় ৩৫০ মিটার চওড়া নদীটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। ক্রমাগত এ অবস্থা চলতে থাকলেও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদীর গতিপথ সচলসহ অন্য বিষয়গুলো দেখে থাকে। কাজের অংশ হিসেবে নদীর দুই পাশের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।’
নদীর পাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছে, ২৫-৩০ বছর আগে কালীগঙ্গা নদীর উৎসমুখ বন্ধ করে দিলে নদীটি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ে। নদীর উৎসমুখ বন্ধের আগে লাহিনী এলাকায় নদীর মাঝখানে বাঁধ দিয়ে ১৮৭০ সালে ব্রিটিশ সরকার রেললাইন নির্মাণ করে এবং বাঁধের পাশে মহাসড়ক স্থাপন করা হয়েছে। তখন থেকে কালীগঙ্গা গতিপথ হারায়।
নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া অংশের ছেউরিয়া থেকে শুরু করে লাহিনী, সাঁওতা, কমলাপুর, পিয়ারপুর, শালঘরমধুয়া, বাঁশগ্রাম, কুশলীবাসা, হরিনারায়ণপুর পর্যন্ত নদীটির দুই পাড়ে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নদী দখল করে বিভিন্ন ফলফলাদির গাছ লাগিয়ে বাগান তৈরি করেছে প্রভাবশালীরা। কেউ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।
বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল (বিআরটিএন) কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি খলিলুর রহমান মজু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কালীগঙ্গা নদীর উৎসমুখে প্রতিবন্ধকতা অপসারণ, গতিপথ সচল রাখা, নদী প্রশস্তকরণ ও কালীগঙ্গাকে নতুন রূপে জাগিয়ে তুলতে আন্দোলনে নামে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর দাবি তুলে ধরা হয়। ’
পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও দেশীয় মাছের উৎপাদন বিকাশে কালীগঙ্গা নদীর গতিপথ সচল ও নদী প্রশস্তকরণের বিকল্প নেই। অনেক দিন ধরেই এই দাবি উঠেছে। দখলবাজদের আগ্রাসনে নদীর অস্তিত্ব এখন নর্দমায় রূপ নিয়েছে। কালীগঙ্গাকে বাঁচাতে বারবার দাবি উঠলেও কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।