দিনে
বেশ গরম আর ভোররাতের
দিকে হিম হিম বাতাস।
হেমন্তের মাঝামাঝিতে গরম কাপড় বা
লেপ-কম্বল ব্যবহারের প্রয়োজন এখনই হয়তো পড়ছে
না। তবু সেসব নামিয়ে
গোছগাছ করে নেওয়ার এই
তো সময়
গত বছরের শীতের পোশাক, লেপ-কম্বল ভালোভাবে
সংরক্ষণ করা সত্ত্বেও এতে
ধুলার আস্তরণ জমতে পারে। এ
ধুলা হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকির
কারণ। তাই ধুলা পরিষ্কার
করতে হবে প্রথমে। ধুলা
ঝাড়ার সময় নাক-মুখ
ঢেকে নিতে হবে। আর
তখন যেন শিশুরা আশপাশে
না থাকে। এ ছাড়া পুরোনো
শীতের পোশাক ও লেপ-কম্বল
ব্যবহারের আগে সেগুলো ব্যবহারোপযোগী
করে নিতে হবে।
লেপ
ও কভারের যা কিছু
লেপ
বের করে আগেই কড়া
রোদে মেলে দিন। গত
মৌসুমে রোদে রেখে সংরক্ষণ করা
হলেও এ বছর ব্যবহারের
আগে রোদ পোহাতে হবে।
কড়া রোদে লেপ মেলে রাখার
পর তা গরম হয়ে
যাওয়া পর্যন্ত রোদেই রাখুন। এরপর ঠান্ডা স্থানে
আনুন। লেপের মধ্য থেকে রোদের
উষ্ণতাটা চলে যাওয়ার পর
কভার পরিয়ে ব্যবহার করুন।
লেপ-কম্বল
তুলে
রাখা লেপ, কম্বল, কাঁথা
বের করে কড়া রোদে
দিতে হবে। রোদ থেকে
আনার পর এগুলো রাখার
জন্য আলমারিতে একটা নির্দিষ্ট স্থান
নির্বাচন করে রাখতে হবে।
- বাড়ির ছোট সদস্যের গত
বছরের কম্বলটা হয়তো পুরোনো হয়ে গেছে, কিংবা
ছোট মনে হচ্ছে। অথবা
পরিবারে যোগ হয়েছে কোনো
নতুন সদস্য। লেপ, কাঁথা, কম্বল
যথেষ্ট পরিমাণে না থাকলে কিনে
নিতে হবে এখনই।
- লেপ রোদে দেওয়ার
পর অবশ্যই রোল করে ভাঁজ
করে রাখতে হবে।
- কম্বলের কভার, লেপের কভার এগুলো ধুয়ে
রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
- কম্বল রোদে দেওয়ার পর
ঝাড়লে এর লোমগুলো যেন
উঠে না যায়, সেজন্য
নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে।
- অনেক দিন তুলে
রাখা হলে লেপ বা
কম্বলে পোকা ধরতে পারে।
প্রয়োজনমতো ঠিক করিয়ে নিন
বা নতুন কিনে নিন।
- বাড়িতে কম্বল ধোয়ার সুযোগ থাকে না। তাই
আগে থেকে ড্রাইওয়াশ করিয়ে
রাখা ভালো। ড্রাইওয়াশ করানো থাকলেও ব্যবহারের আগে কম্বল রোদে
দিয়ে নেওয়া উচিত।
- কম্বল ব্যবহারের দুয়েক দিন আগে থেকেই
সেটি রোদে দেওয়া ও উন্মুক্ত আলোবাতাসে
রাখা প্রয়োজন।

শীতপোশাক
- সোয়েটার, শাল, চাদর, জ্যাকেট
ইত্যাদি পোশাক বের করে কড়া
রোদে রাখতে হবে। রোদ থেকে
তোলার পর ভালোভাবে ঝেড়ে
নিন।
- সোয়েটার, শাল, চাদর এগুলো
পুরোনো হয়ে গেলে প্রয়োজনে
এখনই কিনে নিতে পারেন।
- ভোরে কিংবা সকালে
ঘর থেকে বেরোনোর সময়
সুতির পাতলা হালকা ফ্যাশনেবল শালগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এগুলো কেনা না থাকলে
এখনই কিনে নিতে হবে।
- যেখানে এ পোশাকগুলো রাখা
হবে সেখানে এয়ার ফ্রেশনার, ন্যাপথলিন এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এতে পোকার সংক্রমণ হবে না। আবার
পোশাকগুলো থেকে সুন্দর ঘ্রাণ
আসবে।
- অনেক দিন তুলে
রাখা শাল ব্যবহার না
করলে হলদেটে দাগ পড়ে যায়।
এমন হলে শালটি ড্রাইওয়াশ
করিয়ে নিতে হবে।
- উল বা ফ্লানেলের
যেকোনো কাপড় ব্যবহারের আগে ভালো করে
ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে
হবে।
- ছেলেদের কোট, ব্লেজার ব্যবহারের
আগে ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে
রোদে শুকাতে হবে। রোদ থেকে
আনার পর এগুলো হ্যাঙ্গারে
ঝুলিয়ে রাখুন।
- মাফলার, কানটুপি, হাতমোজা, পা-মোজা সব
সময় হাতের নাগালেই রাখতে হবে। আগের বছর
কেনা থাকলেও দেখে নিন সেগুলো
ছিঁড়ে বা ফুটো হয়ে
গেছে কি না। তাহলে
নতুন কিনে নিতে হবে।
- ঘরের মেঝে যেহেতু
এ সময় ঠান্ডা থাকে,
তাই মেঝেতে ব্যবহার করতে পারেন কার্পেট,
শতরঞ্জি কিংবা ফ্লোর ম্যাট।
- শীতে ব্যবহার্য সামগ্রী
যেমন ওয়াটার হিটার, গিজার, ইলেকট্রিক শাওয়ার, রুম হিটার এগুলো
ঠিক আছে কি না
এখনই খেয়াল করুন।
- শীতে উষ্ণতা পেতে
ঘরে পর্যাপ্ত রোদ আসার ব্যবস্থা
করতে হবে।
শিশুর
শীতের পোশাক
শিশুদের
ব্যাপারে কোনোরকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। যেকোনো
পোশাক পরানোর আগে অবশ্যই ভালোমতো
দেখে নিন পোশাকটিতে ধুলাময়লা
বা কোনো ধরনের পোকামাকড়
রয়েছে কি না। গত
মৌসুমের শীতের পোশাক এ মৌসুমেও তার
গায়ে লাগবে এবং সে ব্যবহার
করতে পারবে বলে মনে হলে
পুরোনো কাপড়গুলো অবশ্যই রোদে রাখুন। কাপড় উষ্ণ হয়ে যাওয়ার
পর ভালোভাবে ঝেড়ে নিয়ে সেটি ঘরে
আনুন। শিশুকে ফ্লানেল, উল, ভেলভেট বা
যেকোনো কৃত্রিম তন্তুর তৈরি শীতবস্ত্র পরানোর
আগে পাতলা ও নরম প্রকৃতির
সুতি কাপড় পরিয়ে নিন। নইলে শীতবস্ত্রের
কারণে শিশুর ত্বকে অস্বস্তি হতে পারে। আর
যদি কিনতে হয় তাহলে কানটুপি,
হাতমোজা, পা-মোজা এখনই
কিনে রাখুন। হঠাৎ শীত নেমে
এলে তারা যাতে কষ্ট
না পায়।
নতুন
কিছু কিনলে
নতুন
শীতপোশাক ব্যবহারের আগে আলোবাতাসসমৃদ্ধ স্থানে
মেলে রেখে ভালোভাবে ঝেড়ে
নিতে হবে।