× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রথম বাংলাদেশি দম্পতি

একসঙ্গে ১০০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন

গোলাম কিবরিয়া

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:০৭ পিএম

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৪০ পিএম

১০০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন করলেন রেজাউল বাহার ও শারমীন শাহারিয়াত দম্পতি।

১০০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন করলেন রেজাউল বাহার ও শারমীন শাহারিয়াত দম্পতি।

প্রথম বাংলাদেশি দম্পতি হিসেবে ১০০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলকে পৌঁছলেন রেজাউল বাহার ও শারমীন শাহারিয়াত। আজ (২১ নভেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে ভ্রমণের সেঞ্চুরি উদযাপনে এই বাংলাদেশি দম্পতি। 

রেজাউল বাহার নিজেদের ভ্রমণের পেছনের গল্প  জানাতে গিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শারমীন আর আমি ২০০৫ সালে আমাদের দাম্পত্য জীবন শুরু। তখন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করে আমি চাকরিতে ঢুকেছি। দেশে গিয়ে পারিবারিক সূত্রে পরিচয় শারমীনের সঙ্গে। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে কানেক্টিকাট স্টেটে আমাদের এক সাবলেট নেওয়া বাসায় যৌথ জীবন শুরু করি। তারপর দু’তিনটা বাসা বদলের পর চলে উঠলাম এক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের পাশের অ্যাপার্টমেন্টে। শারমীন তার পড়াশোনা শেষ করবে সেখানে। প্রথম কবছর টানাহেঁচড়ার সংসার, আমার পড়াশোনা শেষে নিজের ঘাড়ে ঋণ, এদিকে থাকা খাওয়া বাসা ভাড়া আর শারমীনের নতুন করে পড়াশোনা। চাপটা কতটুকু তা ঠিক পিছনে ফিরে না গেলে অনুভব করা অসম্ভব। ধীরে ধীরে সেই চাপ কমতে শুরু করল যখন শারমীন পড়াশোনা শেষে চাকরিতে ঢুকল। পার হয়ে গেছে তিন বছর, এই তিন বছরে জীবনের প্রয়োজনের বাইরে অন্য কিছু ভাবা ছিল অসম্ভব। 

রাশিয়া।

 ২০০৮ এ প্রথম আমরা একসাথে বেড়াতে যাই দেশের বাইরে। ক্যারিবিয়ানের বাহামাস দ্বীপপুঞ্জে। তারপর পেরিয়ে গেছে ১৫ বছর, কখনও ভাবিনি বিশ্ব ভ্রমণ করব। এক, দুই, তিন করে বেরিয়ে পড়লাম নতুন দেশে, নতুন গন্তব্যে। 

শারমীন  একজন বিজনেস কনসালটেন্ট, আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার। আমরা দুজনই পূর্ণকালীন পেশাজীবী, দুজনেই চাকরি করি। বছরে ছুটির সময় হাতেগোনা কয়েক দিন। পুরো সময় কাজ করে বিশ্ব ভ্রমণ করা সহজ নয়। তাহলে কীভাবে এটা সম্ভব করব? বরং আরও উপযুক্ত প্রশ্ন- কেনই বা আমরা ভ্রমণ করব? ভ্রমণে তিনটা জিনিস মূলত প্রয়োজন- সময়, শারীরিক সুস্থতা আর আর্থিক সামর্থ্য। জীবনে আমরা দুজন দুপথ থেকে এসে একসঙ্গে চলা শুরু করলেও আমাদের পেছনের জীবনের একটা মিল ছিল - জীবন সংগ্রাম আর পরিশ্রম। 

বার্বাডোস। 

আরও যোগ করে তিনি বলেন, ১৫-২০ বছর চাকরি করে এখন বছরে ছুটির পরিমাণ ২৫-৩০ দিন। মাঝে মাঝে সরকারি ছুটি থাকে। যেই সপ্তাহে সরকারি ছুটি থাকে সেখানেই আমরা বাকি ৪ দিন ছুটি নিই। সারা সপ্তাহ ৫ দিন ছুটি (সোমবার থেকে শুক্রবার), তার আগে আর পরে থাকে দুইটা উইকেন্ড (শনিবার, রবিবার), এতেই হয়ে যায় ৯ দিনের ছুটি। আর এই ৯ দিনের ছুটিতেই যাওয়া যায় এক বা দুইটা দেশে। ভ্রমণ নিয়ে আমি যথেষ্ট রিসার্চ করি, প্ল্যানিংটা গুরুর্ত্বপূর্ণ। আর এভাবেই বছরে ৭-৮ বার আমরা দেশের বাইরে ভ্রমণে বের হয়েছি। প্রতিবছরই ৮-১০টা দেশ ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। ভ্রমণের প্ল্যানিং নিয়ে এখন আমাকে মোটামুটি একজন অভিজ্ঞ বলা চলে। শুধু প্লানিং এর অভিজ্ঞতা থেকে হয়তো একদিন একটা বই লিখে ফেলতে পারব।

মঙ্গোলিয়া।

এই মাইলফলককে উদযাপন করতে ভিন্ন রকমের উদ্যোগ নিয়েছেন রেজাউল ও শারমীন দম্পতি। রেজাউল বাহার বলেন, আমার ছোটবেলার সব বন্ধুরা তাদের ফ্যামিলি নিয়ে আসবে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। এখানেই হবে আমাদের ১০০ মাইলফলকের সেলিব্রেশন। মানুষ হিসেবে, দম্পতি হিসেবে এটা আমাদের অনেক বড় এক প্রাপ্তি। ১০০ একটা সংখ্যা মাত্র। আমরা কখনও সংখ্যার দিকে তাকাইনি। গিয়েছি যত দূরে যাওয়া যায়, তবুও হঠাৎ এই মাইলফলক সামনে এসে দাঁড়াল। বাংলাদেশি দম্পতি হিসেবে আমরাই প্রথম একসঙ্গে ১০০ দেশ ৭ মহাদেশ ভ্রমণ করলাম। ভ্রমণ করলাম নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থে।  অনুপ্রেণায় ছিল এবং আছে অনেক কাছের মানুষ। 

শারমীন ও রেজাউলের ভ্রমণে ভালো লাগার ১০টি দেশ/জায়গা :

১. অ্যান্টার্টিকা [পৃথিবীর ভেতরে পৃথিবীর বাইরের এক জায়গা পড়ে আছে। এ মহাদেশ  মানুষের জন্য নয় ]

২. আলাস্কা (যুক্তরাষ্ট্র) [ বারবার ফিরে যাব, উত্তরে মানুষের কোলাহল কম, পৃথিবীর স্বর্গ এখানে ]

৩. মঙ্গোলিয়া [জীবনের বড় সত্য শূন্যতা, মঙ্গোলিয়ার গোবী মরুভূমি মানেই শূন্যতা, শূন্যতা দেখার জন্য যেতে হবে গোবীতে ]

৪. মিসর [টাইম ট্রাভেল সম্ভব, অতীতে ফিরে যাবার একমাত্র জায়গা মিসর ]

৫. [আইসল্যান্ড [একাকিত্বের সৌন্দর্য ]

৬. মাসাই-মারা, সেরেঙ্গেটি (কেনিয়া, তাঞ্জানিয়া) [পৃথিবীতে বন্য প্রাণী আজ বিপন্ন, এখনও অভয়ারণ্য এখানে ]

৭. মরক্কো [সাহারা মরুভূমি, নিজেকে জানার জন্য হলেও সাহারার কাছে আসতে হবে ]

৮. পাতাগোনিয়া (চিলি) [এই ভূস্বর্গ মানুষের পায়ের চিহ্ন মুছে দিবে, ভূস্বর্গ থাকে অনাগত পথিকের অপেক্ষায় ]

৯. জর্ডান [মঙ্গোল গ্রহে কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবে, জর্দানের ওয়াদিরাম তা বলে দিবে ]

১০. ফারো আইল্যান্ড [ এতটা প্রশান্তি, এতটা অদ্ভুত, শারমীন বলে বসলো আমি যেদিন থাকব না সে চলে আসবে এখানে ]

বারমুডা।

আনন্দের এই ক্ষণেও নিজের শিকড়কে ভোলেননি রেজাউল। পটুয়াখালীর লোন্দায় নিজ গ্রামের মানুষের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন করেছেন। ‘পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সূর্যোদয় দেখেছি লোন্দায়। প্রথম বাংলাদেশি দম্পতি হিসেবে আমরা ১০০ দেশ ঘুরেছি। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। নিজেদের এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে চেয়েছি গ্রামবাসীর সঙ্গে।’ বললেন রেজাউল। অন্যদিকে শারমীন বললেন, ‘১০০ দেশ ভ্রমণ হয়ে গেছে। কিন্তু জগৎটাকে দেখার এই নেশা চলবে। কিন্তু কখনও কোনো চাপ মাথায় নিয়ে ঘুরব না। যা হওয়ার হবে। কখনও কোনো মাইলফলক সামনে এলে ছুঁয়ে দেখব।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা