× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক দিনে চাঁদপুর

ইসতিয়াক আহমেদ

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৬ পিএম

আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৭ পিএম

চাঁদপুরে প্রতিদিন বাঁধের ওপর হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যায়। 	ছবি : লেখক

চাঁদপুরে প্রতিদিন বাঁধের ওপর হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যায়। ছবি : লেখক

চাঁদপুরে আমরা কমবেশি অনেকেই ডে ট্রিপ দিতে পছন্দ করি। আজ থাকছে একদিনে চাঁদপুর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। 

সদরঘাট গিয়েই ১০ টাকার টিকিট কেটে ঢুকে পড়লাম লঞ্চ টার্মিনালে। টার্মিনালে ঢুকে গন্তব্য অনুযায়ী লঞ্চ খুঁজে বের করাই প্রথম কাজ। চাঁদপুরের লঞ্চগুলো মূলত লালকুঠি ঘাটের কাছ থেকে ছাড়ে, যা কি না সদরঘাটের টার্মিনালের পূর্বদিকে অবস্থিত। একদম ঘড়ির কাঁটা ধরেই লঞ্চ ছেড়ে দিল। ইট-পাথরের জাদুর শহর ঢাকাকে ফেলে রেখে এবার বুড়িগঙ্গার দূষিত বাতাস খেতে খেতে ছোটার পালা। ঢাকা থেকে চাঁদপুর মাত্র ৩ ঘণ্টার লঞ্চ জার্নি। পথ তুলনামূলক অল্প হলেও এই রুটের লঞ্চগুলো বেশ ভালো মানের ও বড় আকারের।

আমরা মূলত যাচ্ছি বোগদাদিয়া-৭ লঞ্চে করে। লক্ষ্মীবাজার শিপিং করপোরেশনের এই লঞ্চ সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। আর ফিরতি পথ ধরে বিকাল ৫টায়। লঞ্চ থেকে নেমেই ৭-৮ মিনিটের হাঁটা পথ। গন্তব্য এবার বড় স্টেশন। পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনটিই বড় স্টেশন নামে খ্যাত। আস্তানা হিসেবেও এর সুখ্যাতি ছিল। কথিত আছে, একসময় এখানে ভান্ডারি গানের আসর বসত। সেই থেকে এর নাম হয়ে যায় আস্তানা। এবার আমরা মোহনার দিকে এগিয়ে যাই। যে স্থান দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসুরা চাঁদপুরে ঘুরতে যান। এখানে নদী বাঁধ দিয়ে আটকানো। প্রতিদিন বাঁধের ওপর হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যায়। ভিড় করা মানুষ আড্ডা-গল্পে মশগুল হয়ে ওঠেন। এর ঠিক সামনেই পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া তিন নদীর মোহনা।

ক্যাফে আল মদিনাতেই বসে পড়লাম খেতে। গরম ভাত, ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা দিয়ে তৃপ্তিসহকারে দুপুরের খাবার সারলাম।   ছবি: লেখক 

রক্তধারা নামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ এখানে জ্বলজ্বল করছে। রক্তধারা স্মৃতিস্তম্ভটি খুব সুন্দর। গায়ে লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। ঘুরে ঘুরে ঘোরাঘুরি করতে করতে তো মাঝেমধ্যে পেট পুজোও করা দরকার। যেহেতু ইলিশের বাড়িতে চলে এসেছি, তাই ইলিশ ছাড়া দুপুরের খাবার ঠিক জমে না। চলে এলাম নতুন স্টেশনের কাছে। আর ঠিক স্টেশনের সঙ্গেই লাগানো এক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হোটেল। ক্যাফে আল মদিনাতেই বসে পড়লাম খেতে। গরম ভাত, ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা দিয়ে তৃপ্তিসহকারে দুপুরের খাবার সারলাম। এরপর উঠে পড়লাম চাঁদপুরের আরেক বিখ্যাত খাবার খাওয়ার বাসনায়।

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরেই তৈরি হয় বিখ্যাত এ আইসক্রিম। এর নাম ‘ওয়ান মিনিট আইসক্রিম’। মাত্র এক মিনিটেই তৈরি হয় বলে এ নামেই নামকরণ করা হয়। শুধু আইসক্রিম নয়, এখানকার মিষ্টিও চমৎকার এবং সুস্বাদু। চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি এলাকাসংলগ্ন প্রেস ক্লাব সড়কে ‘ওয়ান মিনিট’ নামের মিষ্টান্ন ভান্ডারের অবস্থান। ১৯৬৩ সালের দিকে পূর্বপুরুষের হাত ধরে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি সগৌরবে চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান কর্ণধাররা।

তাৎক্ষণিকভাবেই তৈরি হয় এই আইসক্রিম। বিদ্যুতের সাহায্যে মাত্র এক মিনিট সময় ব্যয় হয়। এজন্য আছে স্বয়ংক্রিয় মেশিন, যা ভারত থেকে আনা হয়েছে। আইসক্রিমটি নরম ও ভিন্ন স্বাদের। প্রতি কাপ আইসক্রিমের দাম ৪০ টাকা।

আইসক্রিম খেয়েই আবারও ধরলাম উল্টো পথ। আবার পুরোনো বড় স্টেশন হয়ে নদী পেরিয়ে মিনি কক্সবাজার যাওয়ার পালা। আপনার হাতে সময় থাকলে ঘুরতে পারেন চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজারখ্যাত হাইমচর থেকে। শুকনো মৌসুমে পানি কমে গেলে হাইমচরের বিশাল এলাকা জেগে ওঠে। বড় স্টেশনের কাছ থেকে ট্রলারে ঘুরে আসতে পারবেন এই চর থেকে। চাঁদপুর জেলায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত এটি। চাঁদপুর ত্রিনদী মোহনা বড় স্টেশন মোলহেড থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে পদ্মা ও মেঘনার মিলনস্থলের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বালুময় ভূমি এটি।অসাধারণ এক জায়গা মিনি কক্সবাজারখ্যাত চাঁদপুরের হাইমচর। দিনের আলো নিভে আসছে এবার ফেরার পথ ধরার পালা। মিনি কক্সবাজার থেকে ফিরেই হাঁটা ধরলাম লঞ্চ টার্মিনালের পথে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা