ভাত খাওয়ানোর গল্প
আশিক মুস্তাফা
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৪ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৬ পিএম
অলংকরণ : জয়ন্ত সরকার
ছোটদের ভাত খাওয়াতে মা- বোনেরা মজার মজার গল্প শোনান। গল্পের উপকরণ আশপাশের পরিচিত জগৎ থেকেই নেওয়া। এসব গল্প শুনতে শুনতে কখন যে ছোটরা খাবার শেষ করে ফেলে তা বুঝতেই পারে না তারা! ছোট্ট বন্ধু, তোমার আদুরে ভাই কিংবা বোনটা যদি খেতে না চায়, তবে তাকে এই গল্প শুনিয়ে দেখতে পারো। ভয় পেয়ো না আবার!
নাও, নাও, খেয়ে নাও। আজ বুদ্ধিমান এক মোরগের গল্প শুনবো, চলো। তোমার দিদিভাইয়ের আগে তো এত্তো এত্তো মোরগ-মুরগি ছিলো। এই মোরগ-মুরগিরা দিদিভাইয়ের কথা বুঝতো। দিদিভাইও বুঝতেন ওদের কথা। যখন ওদের খিদে পেতো, তখন ওরা ডেকে বলতো-
কক কক, খক খক...
তোমার দিদিভাই বুঝতেন-
খাবারটা দেওয়া হোক।
অমনি দিদিভাই তাদের খাবার এনে দিতেন। আর তারা গপাগপ খেতে থাকতো। তবে একটা মোরগ খেতে চাইতো না। সে একাকী গাছের ডালে বসে থাকতো। মোরগটা ছিলো খুব সাহসী। আর দেখতেও ছিলো নাদুস-নুদুস। মাথায় ছিলো লাল একটা ঝুঁটি। তো গাছের ডালে বসে লাল ঝুঁটির মোরগটি আশপাশে ইতিউতি তাকাতো। আর একটু পর পর ডাক তুলতো-
কুক-কুরুক-কু...।
অমনি অন্য মোরগ-মুরগিরা খাবার থেকে মুখ তুলে আশপাশে তাকাতো। এভাবে সে ডাকতে থাকতো আর মোরগ-মুরগিরা খাবার থেকে মুখ তুলে নিতো। একসময় ওদের আর ওই খাবারে মনোযোগ থাকতো না। তারা খাবার থেকে মুখ তুলে যার যার মতো চলে যেতো। কেউ ঝোপের দিকে, কেউবা পুকুর পাড়ের বাঁশঝাড়ের দিকে। মা মুরগিরা ছানাদের নিয়ে উঠোনের আশপাশে পা দিয়ে মাটি ছাঁটতো। পোকামাকড় খুঁজতো। আর বুদ্ধিমান মোরগটা তখনই গাছের ডাল থেকে লাফিয়ে নেমে গপাগপ সব খাবার সাবাড় করে নিতো।
সে কিন্তু সব সময় এমন করতো না। যেদিন তার পছন্দের খাবার দিতেন দিদিভাই, কেবল সেদিনই এমন করতো। তার পছন্দের খাবার ছিলো চালের খুদ আর মোটরদানা। তোমার দিদিভাই সেটা বুঝতে পারার পর তার জন্য খাবার আলাদা করে নিতেন। আর তাকে ডেকে বলতেনÑ
লাল ঝুঁটি মোরগটি
নাদুস-নুদুস গা
ডাল থেকে নেমে এসে
মোটরদানা খা...!
লাল ঝুঁটির বুদ্ধিমান মোরগটি গাছ থেকে সাঁই করে উড়াল দিয়ে নেমে অমনি গপাগপ খেতে থাকতো। এবার তুমিও বুদ্ধিমান মোরগটির মতো খেয়ে নাও!