সজীব রাখবে জলপাই তেল

শীতে চুল ও ত্বকের যত্নে জলপাই তেলের জুড়ি মেলা ভার। শুধু শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্যই নয়, তৈলাক্ত ত্বকের জন্যও এ তেল খুব কার্যকর। জলপাই তেল দিয়ে ঘরেই বানানো যায় কিছু প্যাক, স্ক্র্যাবার বা ময়েশ্চারাইজার। এগুলো ব্যবহারে ত্বক থাকবে সতেজ ও সুস্থ। চুলের যত্নেও রয়েছে এর জাদুকরী ক্ষমতা

জলপাই তেলের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন এবং সর্বজনীন ব্যবহারোপযোগী এ তেল। প্রকৃতির অসাধারণ উপহার হিসেবে রূপচর্চা, চুলের পরিচর্যা কিংবা খাবারে অলিভ অয়েলের ব্যবহার সর্বাত্মক। প্রতি ১০০ গ্রাম অলিভ অয়েলে ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে এবং আয়রনের মাত্রা যথাক্রমে ১৪, ৬০ ও ০.৫৬ মিলিগ্রাম। ত্বক ও চুলের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার দেখে নিন-

ত্বকের পরিচর্যায়

ত্বকের সজীবতা এবং তারুণ্য ধরে রাখে জলপাই তেল। এ ছাড়া স্কিন সেলে পুষ্টি জোগায়। ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস প্রতিরোধেও কার্যকর।  ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণে দারুণ ভূমিকা পালন করে অলিভ অয়েল। ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।

• রোদ ও ক্ষতিকর কসমেটিকসের প্রভাবে ত্বকে টান পড়ে। যার ফলে মুখ মলিন দেখায়। এ থেকে সমাধান পেতে রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন জলপাই তেল।
• মেকআপ রিমুভার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর এটি। যাদের সংবেদনশীল ত্বক তারাও নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারেন। মুখে অলিভ অয়েল লাগিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে ম্যাসাজ করুন। তারপর কটন প্যাড কিংবা ফেসিয়াল টিস্যুর সাহায্যে মেকআপ তুলে ফেলুন।
• বডি হেয়ার রিমুভের পর সেখানে অলিভ অয়েল লাগিয়ে নিন। র‍্যাশের সমস্যা, লালচে হয়ে যাওয়ার সমস্যায় আর পড়তে হবে না।
• নিয়মিত মেকআপ এবং সঠিক ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করার ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়। ত্বক পুনরায় প্রাণবন্ত করতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। অন্যান্য তেলের মতো চটচটে ভাব না থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারবেন।
• ঠোঁটের কোমলভাব নষ্ট হয়ে কালো হয়ে যাওয়ার সমাধান পেতে পারেন অলিভ অয়েল ব্যবহারে। রাতে ঘুমাবার আগে ঠোঁটে সামান্য অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
• অনেকের পা-ফাটার সমস্যা রয়েছে। গোসলের পর এবং রোজ রাতে পায়ের গোড়ালিতে অলিভ অয়েল লাগিয়ে রাখুন। ভালো ফল পাবেন।

ঘরোয়া ফেসপ্যাক

১ চা-চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১ চা-চামচ মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ৫-৭ মিনিট রাখুন। তারপর আলতো হাতে স্ক্রাব করুন। ২ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত একবার ফেস-প্যাকটি ব্যবহার করুন।

চুলের যত্নে

চুলের যত্নে এটি খুব উপকারী। স্ক্যাল্পে জলপাই তেল ব্যবহারে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। চুল বৃদ্ধি পায় ও খুশকি দূর করে। এ তেলে থাকা ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ফলে চুল প্রাণ ফিরে পায়।

• সপ্তাহে একবার চুলের গোড়ায় অলিভ অয়েল অ্যাপ্লাই করে ভালোমতো ম্যাসাজ করুন। ২-৩ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। এতে চুলের গোড়া শক্ত হবে। চুল পড়া রোধ হবে।
• শ্যাম্পুর পর ১ মগ পানিতে ১ চা-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। কন্ডিশনারের কাজ করবে।
• চুলের আগা ভঙ্গুরতা রোধে অলিভ অয়েল লাগিয়ে রাখুন।
• রোদ ও ক্ষতিকর ধুলাবালি চুলের প্রাকৃতিক রঙ নষ্ট করে। তাই অলিভ অয়েলের সঙ্গে কালিজিরার তেল মিশিয়ে চুলের গায়ে লাগান। চুলের রঙ ঠিক থাকবে এবং উজ্জ্বলতা বাড়বে।

ঘরোয়া হেয়ার প্যাক

১ কাপ টক দই, ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং সামান্য লেবুর রসের একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। সমস্ত চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি ব্যবহারে চুল হবে নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল।