গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২০ এএম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২০ এএম
ছবি : জেনারেল ইউনিয়ন অব প্যালেস্টিনিয়ান স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশ
দূর দেশে পড়তে এসেছেন। মা-বাবার ফোন এলে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ বাড়ির ফোন পেলে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা দুর্ভাবনায় পড়ে যান। কোনো খারাপ খবর এলো না তো? এরকমই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কাটছে বাংলাদেশে থাকা ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের দিন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খালেদ আবুসাওয়াশ। তিনি এসেছেন গাজা উপত্যকা থেকে। দিন কয়েক আগেই ইসরায়েলি হামলায় তার দাদা মারা যান। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার্থে আসা ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সংগঠন জেনারেল ইউনিয়ন অব প্যালেস্টিনিয়ান স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ফিলিস্তিনের ১২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। মূলত চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়েন তারা। এর মধ্যে শুধু বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজেই রয়েছেন প্রায় ৩০ জন।
জেনারেল ইউনিয়ন অব প্যালেস্টিনিয়ান স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি মাহমুদ ইহসান আহমতের মা গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় নিহত হন। এরকমই বিভিন্ন শোকসংবাদে উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন বাংলাদেশে পড়তে আসা ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীরা। জেনারেল ইউনিয়ন অব প্যালেস্টিনিয়ান স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদ আবুমিত্তেক গাজায় হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনি নরনারী ও অসহায় শিশুদের ওপর ইসরায়েলিদের হামলা, অমানবিক নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে বরিশালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে আয়োজিত কর্মসূচিতে মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরাও তাদের দেশের পতাকা নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ফিলিস্তিনে অবস্থানরত তাদের স্বজন ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বনেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. জি এম নাজিমুল হক বলেন, ‘ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষের ওপর হামলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা সহযোগিতা করছে। যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে এ হামলা ও দখলদারি মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু মুসলিম বিশ্ব চুপ করে আছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। শিক্ষার্থীদের আয়োজনে আমরা সমর্থন জানিয়েছি। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
ফিলিস্তিনের সহপাঠীদের এ দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশের স্থানীয় বন্ধুরা নিয়মিত তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। বাংলাদেশে পড়তে আসা ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখেন তারা চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষের সেবা করবেন। একসময় ফিলিস্তিনে শান্তি ফিরে আসবে। যুদ্ধাহত কোনো মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না আর।