× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাল্যবিবাহ ও পিরিয়ডকালীন সেবার অপ্রতুলতা

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে গ্রামীণ নারী

বাসন্তি সাহা

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২৮ পিএম

আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৪ পিএম

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ নারী দিবস বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে	ছবি : হাবিবুল হক

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ নারী দিবস বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে ছবি : হাবিবুল হক

এই সময়ে এসেও বাংলাদেশের নারীরা নিজেদের অধিকারের প্রশ্নে সোচ্চার থাকেন। সেখানে দেশের প্রান্তিক নারীদের অবস্থা আরও শোচনীয়। বাল্যবিবাহ ও  বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ রচনা...  

গ্রামীণ নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এতদিন দারিদ্র্যকে প্রধানতম চ্যালেঞ্জ মনে করা হলেও এর পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় উঠে এসেছে; যেমন বাল্যবিবাহ, শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া ও মেয়েশিশু হিসেবে ছোটবেলা থেকে যত্ন না পাওয়া, সমস্যা হলে সেটা বলতে না পারা বা বলতে না চাওয়া গ্রামীণ নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

ভালো পাত্র পাওয়া গেছে কেবল এ কারণে বাংলাদেশে বেশিরভাগ মেয়েশিশুর বাল্যবিবাহ হয়। বাংলাদেশে এখনও বাল্যবিবাহের হার আতঙ্কিত হওয়ার মতো। ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ৫৯ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে হয় এবং ২২ শতাংশের ১৫ বছর বয়সের আগে বিয়ে হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ মেয়েশিশু ১৮ বছর বয়সের আগে মা হয়ে যায়। বাল্যবিবাহের সঙ্গে নারীর স্বাস্থ্যের গভীর সম্পর্ক আছে। এর সঙ্গে যুক্ত নারীর লেখাপড়া ও কর্মসংস্থানের সম্পর্ক।

গ্রামীণ নারী দিবস কী এবং কেন

১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর দিবসটি জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয়। 

এ আলোচনা প্রায়ই শোনা যায় যে, নারী দিবস যখন আছে তখন আবার গ্রামীণ নারী দিবস কেন? ভোলার চরফ্যাশন, মনপুরা এবং নোয়াখালীর বিভিন্ন চরের নারীদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি তাদের জীবনের গল্পগুলো অনেক আলাদা। তাদের যুদ্ধটা অনেক কঠিন। তাই শহরের নারী দিবস দিয়ে তাদের যুদ্ধটাকে স্বাীকৃতি দেওয়া যাবে না। 

গ্রামের একজন দরিদ্র নারীকে যুদ্ধ করতে হয়  দারিদ্র্যের সঙ্গে। তারপর আছে বাল্যবিবাহ, শিক্ষা না থাকা, সম্পদে অভিগম্যতা না থাকা, বহুসন্তানের মা হওয়া, অপুষ্টি ও পরিবারে নিজের অবস্থান না থাকা। কিন্তু যুদ্ধটা অনেক বেশি। ঘরে বাইরে শ্রম দিয়ে সবচেয়ে কম খাবার খেয়ে সে টিকে থাকে। তার নিজের কোনো স্বাস্থ্যসমস্যা হলে বলতেও পারে না। একদিকে স্বাস্থ্যসেবা হাতের কাছে না থাকা এবং অন্যদিকে দারিদ্র্যের কারণে নিজের সুযোগসুবিধার কথা না ভাবা। কৃষিসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কাজে নারীর ব্যাপক ভূমিকা থাকলেও তাদের সে কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। গ্রামীণ নারীর কর্মসংস্থান বেশিরভাগ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে; তাই তার মজুরিও হয় না সেভাবে। সবকিছু মিলে তার জীবনের বঞ্চনাগুলো অন্যরকম। তাই গ্রামীণ নারী দিবস বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে।

সেবা প্রাপ্তিতে লিঙ্গ বৈষম্য

নারী বা মেয়েশিশু হওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকে কম খেয়ে, কম পুষ্টিকর খাবার খেয়ে সে বড় হয়। ভালো খাবারগুলো বাবা বা ভাইয়ের পাতে তুলে দেন মা। ফলে ছোটবেলা থেকে বৈষম্যের মধ্য দিয়ে সে বড় হয়ে ওঠে, যার রেশ বহন করতে হয় জীবনজুড়ে। বাংলাদেশের গ্রামীণ নারী কৃষক পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ করলেও নিজেরাই পুষ্টিহীনতার শিকার। বাংলাদেশে ৫০ শতাংশের বেশি নারীই পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। ফুড সিকিউরিটি নিউট্রিশনাল সার্ভিল্যান্স প্রোগ্রাম (এফএসএনএসপি)-এর এক জরিপে দেখা গেছে, দেশে বয়সের তুলনায় খর্বাকৃতির কিশোরীর হার ৩২ শতাংশ, খর্বাকৃতির নারীর হার ৪২ শতাংশ, খাদ্যে কম পুষ্টি গ্রহণকারী নারীর হার ৬০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদে শক্তির ঘাটতি আছে এমন নারীর হার ২৫ শতাংশ।

নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নীতিমালা ও গৃহীত উদ্যোগ

বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(ক) অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবা মৌলিক চাহিদা হিসেবে নিশ্চিত করেছে। উপরন্তু অনুচ্ছেদ ১৮ (১)-এ বিবৃত রয়েছে যে, পুষ্টির স্তর উন্নীতকরণ ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব।

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১-এ নারীর স্বাস্থ্যসেবায় পুষ্টি ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, রূপকল্প-২০৪১-এর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গৃহীত অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও নারীর  প্রজননস্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা; প্রজননস্বাস্থ্যে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাল্যবিবাহ বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা এবং যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য, শিক্ষা ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সবার সমান সুযোগ থাকা এবং অসমতা দূর করতে অধিকতর বিনিয়োগের বিষয়টি এসডিজিতে গুরুত্ব  পেয়েছে। 

এ নীতিমালার আলোকে সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিছু উদ্যোগের সফলতাও আছে। যেমন নারীর স্বাস্থ্যসেবা বিশেষ করে প্রজননস্বাস্থ্য লক্ষ রেখে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন। নারী এখানে নিরাপদ মাতৃত্বজনিত সেবা বিনামূল্যে পাচ্ছেন। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে চালু রয়েছে মাতৃত্বকালীন ভাতা। দরিদ্র গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে এ ভাতা চালু হলেও প্রতিটি ইউনিয়নে মাত্র ১৮ জন মা এ ভাতা পান। ফলে বেশিরভাগ নারী সরকারের এ কর্মসূচির বাইরে রয়ে গেছেন।

কমিউনিটি ক্লিনিক কীভাবে নারীর স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করছেÑ এ বিষয়ে শ্যামনগর ইউনিয়নের দেবীদার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার অনিরুদ্ধ কর্মকার সম্পদ বলেন, ‘দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তিন থেকে চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। সাধারণভাবে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গ্রামের দরিদ্র মানুষকে ২৭ ধরনের সেবা দেওয়া হয়। মা ও শিশুরা তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পেয়ে থাকেন। মায়েদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি সেবা হলো গর্ভ পূর্ববতী ও পরবর্তী সেবা। এ জন্য গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের কোনো বিকল্প নেই। কোনো কোনো ক্লিনিকে প্রসবের ব্যবস্থা আছে। আমাদের গর্ভ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সেবার হার বেড়েছে। আমাদের এই দেবীদ্বার কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন নারী এ সেবা নিয়ে থাকেন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হারও বেড়েছে। তবে জটিল কেস হলে উপজেলা হাসপাতালে রেফার করি।’

গ্রামীণ নারী ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব স্বাস্থ্যসেবা পান

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় মাসে চারবার স্যাটেলাইট ক্লিনিক পরিচালনা করেন চিকিৎসক মো. রাজ্জাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘নিঝুমদ্বীপের বেশিরভাগ নারী প্রসবপরবর্তী জটিলতায় ভুগছেন। নারী চিকিৎসক না থাকার কারণে অনেক নারী সেবা নিতেও চান না। যারা আসেন বেশিরভাগ গর্ভবতীই ১৩ থেকে ১৯ বছরের। মাতৃত্বজনিত জটিলতা যেমন বেশি তেমন শিশুর অপুষ্টিও বেশি। জন্মনিয়ন্ত্রণ বলতে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছ থেকে ইনজেকশন নেয়া। কিশোরীরা মাসিকের সময় অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করে। তাদের রক্তশূন্যতাও মারাত্মক। বেশিরভাগ প্রসব বাড়িতেই হয়। কেউ মামণি ক্লিনিকে যান। অবস্থা জটিল হলে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে রেফার করি। স্থানীয় কবিরাজরাও এ অঞ্চলে গর্ভকালীন সেবা দিয়ে থাকেন।’

দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার স্বাস্থ্যসেবিকা ইয়াসমিন কাজ করছেন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চান্দনী ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে। তিনি বলেন, ‘অপ্রশিক্ষিত দাইয়ের হাতে প্রসব হওয়ার কারণে নারীদের একলাম্পসিয়া ও রক্তক্ষরণ বেশি হয়। রক্তক্ষরণ মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ এখানে। প্রসবের সময় যৌনাঙ্গ ছিঁড়ে যাওয়া, সংক্রমণ ও জরায়ু নেমে যাওয়ার মতো জটিলতা দেখা দেয়; যা একজন নারীকে সারা জীবন বহন করতে হয়। সংসারও ভেঙে যায় কারও কারও।’

নারী অধিকার কর্মী মুশফিকা লাইজু কাজ করছেন স্বল্পমূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি ও বিপণন নিয়ে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাত্র ৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করেন; তাও শহরের নারীরা। গ্রামের নারীরা পিরিয়ডের সময় পুরোনো কাপড় ধুয়ে  ব্যবহার করেন। লোকলজ্জার কারণে কাপড় রোদে শুকাতে পারেন না। এজন্য জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিও  বেড়ে যায়। অন্যদিকে দরিদ্র নারীরা স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পর্কে জানলেও কেনার সামর্থ্য রাখেন না। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও লামা উপজেলার নারীদের কাছে শুনেছি, তারা এখনও কাপড়ে মুড়ে বালি ও ছাই ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে বছরে ৬ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে মারা যান। দেশের জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীর মধ্যে ৯৭ শতাংশের ক্ষেত্রে রোগের কারণ পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার অভাব।’

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘নারীর জীবনমান উন্নয়নে সারা দেশে ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৪০টি ক্যাম্পের মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে প্রায় ২৮ হাজার মহিলার জরায়ুমুখ স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ লাখ ২৬ হাজার ২৬১ মহিলাকে জরায়ুমুখ স্ক্রিনিং পরীক্ষা করা হয়েছে; যা জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানে ভূমিকা রাখছে।’

গ্রামীণ নারীর স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষায় আরও যা করতে হবে

০১. উপজেলা হাসপাতালগুলোয় ডাক্তারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ০২. কমিউনিটির ৬-৭ হাজার মানুষকে কীভাবে ক্লিনিকের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায় ভাবতে হবে। ০৩. সরকারের স্বাস্থ্যসেবার মূলধারায় পুষ্টির বিষয়টি আনতে হবে। ০৪. প্রতিটি স্কুলে বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড দিতে হবে। ০৫. কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবাদানকারীদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে। ০৬. কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা গ্রুপ ও কমিউনিটি ক্লিনিক সাপোর্টগুলোকে সক্রিয় হতে হবে।

লেখক: সমন্বয়কারী, গবেষণা ও ডকুমেন্টেশন দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা