নুসরাত খন্দকার
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪১ পিএম
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:০২ পিএম
পূজায় টানা কয়েক দিনে ঘোরাঘুরি-সাজ কোনো কিছুর কমতি থাকা যাবে না। তবে তার জন্য আগে থেকে করতে হবে চর্চা। বাড়িতে বসে চটজলদি গ্লোয়িং লুক পাওয়ার সহজ সন্ধান দেখে নিন-
পূজাপার্বণ মানেই সব দুঃখ, কষ্ট, গ্লানিকে ম্লান করে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠা। পূজা আসতে আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। সারা বছর যেমন-তেমনভাবে কাটুক না কেন, এই উৎসব-অনুষ্ঠানের দিনগুলোতে নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে, ঝকঝকে-চকচকে হয়ে উঠতে আমরা সবাই চাই। কিন্তু সব সময় পার্লারে গিয়ে ত্বক বা চুলের পরিচর্যা করা সম্ভব হয় না। তাই স্বল্প সময়ে বাড়িতে বসেই যদি পূজা স্পেশাল রূপচর্চাটা সেরে ফেলা যায়, তাহলে মন্দ কী! তাই এবার বাড়িতে বসেই চটজলদি উজ্জ্বল ত্বক ও চুলের কিছু টিপস জেনে নিই।
সকালের রূপরুটিন
ক্লিনজিং : সকালের রূপরুটিন ক্লিনজিং-স্বাভাবিক ত্বকের ক্ষেত্রে সালফেট ফ্রি ক্লিনজার ব্যবহার করা ভালো। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ক্লিনজিং জেল অথবা ফেসওয়াশ দিয়ে সকালে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্ষার ছাড়া মাইল্ড ক্লিনজার হবে আদর্শ। সেনসিটিভ ত্বকের জন্যও মাইল্ড ক্লিনজার ব্যবহার করলেই ভালো।
টোনিং : স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে অ্যালকোহল বা মধু, গোলাপজল এগুলো টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শসার রস, টমেটোর রস দিয়ে টোনিং করতে পারেন। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য টি-ট্রি অয়েল, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, গ্রিন টি এগুলো ভালো কাজ করে। কম্বিনেশন ত্বকে এসেনশিয়াল অয়েল, টি-ট্রি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
ময়েশ্চারাইজিং : ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজিং কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে মধু, আমন্ড অয়েল, নারকেল তেল দিয়ে ময়েশ্চারাইজিং করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে অরগ্যান অয়েল মিরাকেলের মতো কাজ করে। এ ছাড়া অ্যালোভেরা জেল ও রোজ এসেনশিয়াল অয়েলের মিশ্রণও ভালো ফল দেয়। সেনসিটিভ ত্বকের জন্যে ভিটামিন ই অয়েল, এসেনশিয়াল অয়েল, অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
এগুলো ছাড়াও দিনের বেলা বাইরে বের হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
রাতের রূপরুটিন
দিনের মতো রাতেও ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং জরুরি। এর সঙ্গে রাতে স্কিন সিরাম ব্যবহার করলে খুব দ্রুত উপকার পাবেন। প্রতিদিনের ত্বকের যত্ন ছাড়াও চটজলদি গ্লোয়িং স্কিন পেতে স্ক্রাবিং এবং ফেসপ্যাক লাগানো দরকার।
স্ক্রাবিং : ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে স্ক্রাবিং খুব উপকারী। কারণ এর ফলে ত্বকের এক্সফোলিয়েশন হয়। ত্বকের ওপরের মৃত কোষের স্তর পরিষ্কার হয় এবং ভেতরের উজ্জ্বল কোষস্তর ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
তৈলাক্ত ত্বক- ওটমিল, মধু ও ঘরে পাতা টক দই দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। এরপর আঙুল দিয়ে সার্কুলার মোশনে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট পর ভালো করে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে দুদিন এই স্ক্রাবিং করতে পারেন।
স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বক- ভিজিয়ে রাখা আমন্ড বাদাম পেস্ট করে তার সঙ্গে দুধ, নারকেল তেল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ওপরের পদ্ধতিতে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে ত্বকের এক্সফোলিয়েশনও হবে আর আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।
সেনসিটিভ ত্বক- চিনি ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে তা দিয়ে স্ক্রাব করলে উপকার পাবেন। এ ছাড়া টমেটো কেটে তাতে চিনি মিশিয়ে তা দিয়েও স্ক্রাব করতে পারেন।
সুন্দর, উজ্জ্বল ত্বকের জন্যে ফেসপ্যাক খুব উপকারী। এবার এমনই কিছু ফেসপ্যাকের সন্ধান জেনে নিন-
ডার্ক সার্কেল হবে দূর
আমাদের অনেকেরই চোখের নিচে কালো দাগের সমস্যা রয়েছে। পূজার সাজে এই কালচে ছোপ খুবই বেমানান। তাই মাত্র কয়েক দিনের যত্নে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে যত্ন করতে হবে প্রতিদিন।
চুল থাক সুন্দর
ত্বকের পরিচর্যা তো হলো, কিন্তু সুন্দর ঝলমলে চুল না হলে সব সাজ মাটি। তাই এবার তার কিছু সহজ উপায় জেনে নিন-
এগুলো ছাড়াও সুন্দর ত্বক ও চুলের জন্য সঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া, দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার পানি খাবেন, প্রচুর ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খাবেন। সঙ্গে দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরি। চটজলদি গ্লোয়িং ত্বক ও সুন্দর চুলের সব উপায় এখন আয়ত্তে। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই শুরু করে দিন পুজোর সাজের প্রস্তুতি।