কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
মো. আমান উল্লাহ
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:০২ পিএম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ছয়টি অনুষদ
বাংলাদেশে কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) রয়েছে ছয়টি অনুষদ। প্রতি বছর ১ হাজার ১১৬ শিক্ষার্থী ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুরা বাকৃবিতে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ভর্তিচ্ছুদের পছন্দের বিষয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে আগ্রহের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ। এরপর পশুপালন, মাৎস্যবিজ্ঞান, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ।
কৃষি অনুষদ
দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে ও কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাকৃবিতে ১৯৬১ সালে কৃষি অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কৃষিতে ১৭টি বিভাগ রয়েছে। অনুষদ থেকে কৃষি স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়ে থাকে। সকল বিভাগ (ভাষা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ বাদে) থেকে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করে।
ক্যারিয়ার ও চাকরি : কৃষিতে স্নাতক শেষ করার পর নিজস্ব বিষয়সহ যেকোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই চাকরির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বিসিএস), বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিউট (বিনা), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)সহ বিভিন্ন গবেষণা ইনস্টিটিউটে চাকরির ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মিডিয়া যেমন ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও), ডিসকভারি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ইত্যাদিতে চাকরির সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক ও বিভিন্ন সার, বীজসহ কীটনাশক কোম্পানিতেও রয়েছে চাকরি।
ভেটেরিনারি অনুষদ
প্রাণিসম্পদে টেকসই উন্নয়ন ও অসুস্থ প্রাণীকে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদানে ১৯৬১ সালে বাকৃবিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ভেটেরিনারি অনুষদ। কারণ একজন দক্ষ ভেটেরিনারি চিকিৎসক পারেন দেশের প্রাণিসম্পদ এবং মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে সমৃদ্ধশালী জাতি ও দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে। ভেটেরিনারি অনুষদে রয়েছে আটটি বিভাগ।
ক্যারিয়ার ও চাকরি : বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) এ ভেটেরিনারি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য স্পেশাল ক্যাডারসহ (ভেটেরিনারি সার্জন) অনান্য ক্যাডারেও প্রতিযোগিতা করতে পারবে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (এলআরআই) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মিডিয়াতে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
পশুপালন অনুষদ
বাংলাদেশের প্রাণিজ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম বাকৃবিতে পশু পালন অনুষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই অনুষদে মোট পাঁচটি বিভাগ রয়েছে।
ক্যারিয়ার ও চাকরি : কৃষির বিকাশ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উত্তীর্ণ গ্র্যাজুয়েটরা দেশের বিভিন্ন কৃষি সেক্টরে তাদের দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে দেশে ও দেশের বাইরে শিক্ষকতার সুযোগ রয়েছে।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
বাকৃবিতে ১৯৬৪ সালে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের লক্ষ্যে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই অনুষদ থেকে বিএসসি এগ্রি. ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিএসসি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নামে দুটি ডিগ্রি দেওয়া হয়। পাঁচটি বিভাগের অধীনে পড়ানো হয়। এ ছাড়া রয়েছে এমএস ও পিএইচডি করার সুযোগ।
ক্যারিয়ার ও চাকরি : কৃষি প্রযুক্তিকরণের লক্ষ্যে বাকৃবির গ্র্যাজুয়েটরা দেশের বিভিন্ন কৃষি সেক্টরে তাদের দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার এক্সটেনশন (ডিএই), বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি, আরডিএ।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
উপমহাদেশের প্রথম উচ্চতর মৎস্য শিক্ষা ও গবেষণার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিখ্যাত বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ। ১৯৬৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু করেছিল মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ। এ অনুষদেও পাঁচটি বিভাগ থেকে মাছ উৎপাদন, সংরক্ষণ, প্রজনন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করা হয়।
ক্যারিয়ার ও চাকরি : বিসিএসে টেকনিক্যাল ও সাধারণ কোটায় আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা।
কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
এ দেশ কৃষিনির্ভর হওয়ায় দারিদ্র্য দূরীকরণ ও গ্রামীণ উন্নয়নে কৃষি অর্থনীতির গুরুত্ব অনেক। এ অনুষদে পাঁচটি বিভাগ রয়েছে।