× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এশিয়া কাপ ল ইন্টারন্যাশনাল মুট কোর্ট কমপিটিশন

এশিয়া চ্যাম্পিয়ন ঢাবি

শাহিনা নদী

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৭ পিএম

আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৭ পিএম

প্রতিযোগিতার বেস্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (অ্যাপ্লিক্যান্ট) ও থার্ড বেস্ট মেমোরিয়ালের (রেসপনডেন্ট) স্বীকৃতিও অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলে ছিলেন ঐশী রহমান, রাফিদ আজাদ সৌমিক, তানহা তানজিয়া ও ফিয়াজ রব্বানী

প্রতিযোগিতার বেস্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (অ্যাপ্লিক্যান্ট) ও থার্ড বেস্ট মেমোরিয়ালের (রেসপনডেন্ট) স্বীকৃতিও অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলে ছিলেন ঐশী রহমান, রাফিদ আজাদ সৌমিক, তানহা তানজিয়া ও ফিয়াজ রব্বানী

ক্রিকেটে এশিয়া কাপ শুরু হয়েছে ৩০ আগস্ট। তার আগেই বসেছিল আরেক এশিয়া কাপের আসর। তবে ক্রিকেটার নয়, আইনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে এ আসর। এশিয়া কাপ ২০২৩। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা। এশিয়া অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইনের জ্ঞান ও উপলব্ধি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে জাপানে আয়োজিত হয় এ প্রতিযোগিতা। এবারের আসরে এশিয়ার বাঘা বাঘা বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মুট কোর্ট সোসাইটি।

টোকিওর ইউনাইটেড নেশন ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এশিয়া কাপে স্বাগতিক জাপান ছাড়াও অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইরান, মঙ্গোলিয়া, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৫টির বেশি দল অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত ওরাল রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হয় ১৬টি দল। ২২ ও ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত ওরাল রাউন্ডে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মোকাবিলা করে ফাইনাল রাউন্ডে কম্বোডিয়ার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ, অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর আগে অন্যান্য স্বীকৃতি থাকলেও এত বড় মাপের প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুট কোর্ট সোসাইটির চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার বেস্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (অ্যাপ্লিক্যান্ট) ও থার্ড বেস্ট মেমোরিয়ালের (রেসপনডেন্ট) স্বীকৃতিও অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলে ছিলেন ঐশী রহমান, রাফিদ আজাদ সৌমিক, তানহা তানজিয়া ও ফিয়াজ রব্বানী। দলের অন্যতম সদস্য ঐশী বলেন, ‘আমাদের এবারের সাফল্য শুধু যে বাংলাদেশের জন্যই বড়, তা নয়। এর আগে এশিয়া কাপে পুরো দক্ষিণ এশিয়া থেকেই আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এটা ভেবেই আমাদের বেশি ভালো লাগছে। প্রস্তুতির জন্য আমরা এতটাই কম সময় পেয়েছিলাম যে ঈদের দিনও ব্যস্ত ছিলাম মেমোরিয়াল নিয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে পেছনে ফেলে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে আনন্দের।’

মুট কোর্ট কমপিটিশন প্রতিযোগিতায় একটি কাল্পনিক মামলা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে যুক্তিতর্ক হয়। সেই কাল্পনিক মামলার বিষয়বস্তু হয় বিশ্বের চলমান কোনো সংকট। বাস্তবের আদালতে একজন আইনজীবী যেকোনো এক পক্ষের হয়ে মামলা লড়েন। আর মুট কোর্টে দলগুলোকে আইন বিষয়ে দক্ষতা প্রমাণে একেক রাউন্ডে বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের হয়ে মামলা লড়তে হয়। এ কারণে মুট কোর্টে প্রথম ধাপে অ্যাপ্লিক্যান্ট ও রেসপনডেন্ট নামে দুটি পক্ষ থাকে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনের এ ধরনের প্রতিযোগিতায় বন্ধুত্বের মেলবন্ধনও ঘটায়। এ ব্যাপারে দলের আরেক সদস্য ও প্রতিযোগিতার থার্ড বেস্ট ওরালিস্ট (অ্যাপ্লিক্যান্ট) সৌমিক বলেন, ‘সমগ্র এশিয়া থেকে অনেক প্রতিভাবান মুটারের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি তাদের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের কথা শোনার সুযোগ হয়েছে। কিছু কিছু দল তো আসার সময় আমাদের বেশকিছু স্যুভেনিরও দিয়েছে। সেখানে অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ায় ফাইনালে তাদের সমর্থনও পেয়েছি। বিশেষ করে আমাদের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার পর তাদের উল্লাস দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সঠিকভাবে সবকিছু প্রক্রিয়া করার জন্য কিছুটা সময় নিচ্ছিলাম। এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে আছি যে এ অনুভূতি লিখে প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। এশিয়া কাপ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা ২০২৩ জেতায় সম্ভবত আমার আজ অবধি সবচেয়ে কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেছি। এটি একটি দুর্দান্ত অনুভূতি এবং আরও শেখার সুযোগ করে দিয়েছিল। আমি সব সময় চেয়েছিলাম বাংলাদেশের হয়ে জিততে। আমি খুব খুশি যে এটা করতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে ঐশী আপুকে প্রথম থেকেই বলেছিলাম আমরা যদি সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করি তাহলে এশিয়া কাপ জিততে পারব। কিন্তু আমরা দুজনই জানতাম আমরা তামাশা করছিলাম। এমনকি স্বপ্নেও আমি ভাবিনি যে আমরা সত্যিই এটি করতে পারি! এমনকি ফাইনাল রাউন্ডের আগেও, আমি সততার সঙ্গে ভেবেছিলাম যে আমরা এটি হেরে যাব।

প্রতিযোগিতাটি খুব চ্যালেঞ্জিং হওয়া সত্ত্বেও শান্ত ও অনুপ্রাণিত ছিলাম। বিশেষ করে ফাইনাল রাউন্ডটি সম্ভবত আমার সবচেয়ে প্রিয় রাউন্ড ছিল বিশেষভাবে, কারণ এর আগে কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। সাইম ম্যাম, রাঘীব ভাই, রাফি মাসুদ ভাইসহ আমি যেসব সাহায্য পেয়েছি তার জন্য অনেকের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। আহসানুল করিম স্যার এবং দিহিদার মাসুম স্যার খুব অল্প সময়ের নোটিসে আমাদের উদারভাবে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন। এটা সত্যিই তাদের ছাড়া সম্ভব ছিল না। আমি সব সময় এ স্মৃতি লালন করব।’

এশিয়া কাপ ল ইন্টারন্যাশনাল মুট কোর্ট কমপিটিশন ১৯৯৯ সাল থেকে হচ্ছে। শুরুতে এর নাম জাপান কাপ ছিল। এবার এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ৫৪টি দল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। সেখান থেকে ১৬টি দল নির্বাচিত হয়। সেমিফাইনালে ইন্দোনেশিয়াকে হারিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল। ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল কম্বোডিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি বেস্ট অ্যাপ্লিক্যান্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড এবং তৃতীয় সেরা রেসপনডেন্ট মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ডও জিতেছে। তৃতীয় সেরা অ্যাপ্লিক্যান্ট ওরালিস্ট হয়েছেন রাফিদ আজাদ সৌমিক।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, অ্যাডভোকেট দিহিদার মাসুম কবির, আইএফআইসি ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দলটি। তাদের বক্তব্য, পৃষ্ঠপোষকদের এমন সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়মিতই এ ধরনের সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা