× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রচ্ছদ

প্রাত্যহিক স্বাচ্ছন্দ্যে

শাহিনা নদী

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৫৮ পিএম

আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৩ ১৯:১৬ পিএম

প্রাত্যহিক স্বাচ্ছন্দ্যে

ট্রেন্ড ও ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারীরা বেছে নিচ্ছে নিত্যনতুন পোশাক। রঙ, নকশা ও প্যাটার্নে পোশাকগুলোয় দেখা মিলছে নতুনত্ব। কিন্তু শুধু ট্রেন্ডে গা ভাসালেই তো চলবে না, প্রতিদিনের ব্যবহারের পোশাকটিকে একই সঙ্গে হতে হবে ফ্যাশনেবল ও স্বচ্ছন্দের

প্রাত্যহিক জীবনে নারীরা এখন ঘর সামলে সমানতালে কাজ করে বাইরেও। সেজন্য প্রতিদিনই পরিকল্পনা থাকে বের হওয়ার জন্য কেমন পোশাক পরবে, পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মেকআপ লুক কেমন হবে। সঙ্গে পোশাকটা হবে কতটা স্বস্তিদায়ক, তাও গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ, আবহাওয়ার মতো বিষয়গুলো পোশাক নির্বাচন ও পরিধানের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। কখনও প্রচুর বৃষ্টি, কখনও বা রোদের দাবানলে অতিষ্ঠ প্রকৃতি। সেজন্য এ সময় পোশাক নির্বাচন করতে হবে একটু বুঝে; যা প্রচণ্ড রোদে যেমন কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে অন্যদিকে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে দ্রুত শুকিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতেও সহায়তা করবে। সঙ্গে ট্রেন্ড ও ফ্যাশনের দিকটিও খেয়াল রাখতে হবে।


চ্যালেঞ্জিং এই সময়টায় সহজে বহনযোগ্য ফ্যাশনেবল ও আরামদায়ক পোশাকের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় কুর্তি, টিউনিক ও টপস ঘরানার পোশাক। ফিউশন ডিজাইনে টিউনিক, টপস ও কুর্তি এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। রঙের ক্ষেত্রে গাঢ় ও হালকা উভয় ব্যবহার করা হলেও গরম ও বৃষ্টির দিক বিবেচনায় প্রাধান্য দিতে হবে হালকা রঙগুলোকে। ফিউশন ডিজাইনের এসব পোশাক প্রাত্যহিক জীবনে অফিস কিংবা কলেজে পরার জন্য বেশ উপযোগী। এ ছাড়া বন্ধুদের আড্ডা, ঘোরাঘুরিতে টপস বা কুর্তি পরে স্বচ্ছন্দে থাকা যায়। সব থেকে সুবিধা হলো, এ ধরনের পোশাকে পছন্দসই প্যান্ট ও ওড়না দিয়ে পরে ভিন্ন ভিন্ন লুক আনা যায়। যেমন একই পোশাক কখনও পালাজ্জো, কখনও বা প্যান্ট কিংবা স্কার্টের সঙ্গে পরে ভিন্ন ভিন্ন লুকে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে পারেন।  

টপস/টিউনিক 

আরামদায়ক ও ট্রেন্ডি পোশাক ভাবলেই আগে মাথায় আসে টপসের কথা। এখন টপসে নানা ধরনের ফিউশন ডিজাইন করা হয়। বিভিন্ন কাটিং ও প্যাটার্নে তৈরি হচ্ছে নানা ঢঙের টপস। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আকর্ষণীয় করে তুলতে কখনও গলায়, কখনও হাতায় অথবা বটমলাইনে আসছে বৈচিত্র্য। টপসের ক্ষেত্রে সিল্ক, স্যাটিন, জর্জেট, সুতি কাপড়ের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। বটমে ঝিকমিকসহ বিভিন্ন শেপ করা হচ্ছে। কুচি, প্লিট, এলাস্টিক, বেল্ট, ইয়োক, পুঁতি-চুমকি, প্যাচওয়ার্কসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহারে যোগ করা হচ্ছে নতুনত্ব। আরামের দিক বিবেচনা করে বেশিরভাগ টিউনিক টপস খুব বেশি ফিটিংভাবে তৈরি না করে একটু ঢিলেঢালা রাখা হচ্ছে। শুধু টপসই নয়, যেকোনো পোশাকেই এখন ডিজাইনাররা রাফলস ব্যবহার করে আশির দশকের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

কুর্তি

নিত্যদিন পরার জন্য কুর্তি হলো সব থেকে আরামদায়ক। পছন্দমতো রঙের ও নকশার কুর্তি সারা দিন স্বচ্ছন্দে ক্যারি করা যায়। অনেকেই কুর্তি আর টপস গুলিয়ে ফেলেন। কুর্তি টপসে মূলত সামনে বেশি ঘের এবং পেছনে বা সামনে দৈর্ঘ্য কম কিংবা পেছনে লম্বা ঘের নেমে যায় গোড়ালি পর্যন্ত। প্লেন লম্বা শেপের বদলে কুর্তি এখন তিন কোনা, একপাশে শর্ট, একপাশে লম্বা, সামনের দিকে কোনাকুনি কাটা এমন নানা আঙ্গিকে তৈরি হচ্ছে। কিছু কুর্তিতে নানা ডিজাইনের কলারও ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে রাফ অ্যান্ড টাফ রূপ জুড়ে দেওয়া হচ্ছে নকশাদার কটি। গতানুগতিক জ্যামিতিক, ফ্লোরাল মোটিফেও বৈচিত্র্য রয়েছে।


পশ্চিমা ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে দেশের ফ্যাশন আইডিয়া। আর সেই হাওয়ায় দেশি ফ্যাশনে এসে মিশেছে পাশ্চাত্য ডিজাইন। পোশাকে পাশ্চাত্যের সঙ্গে দেশি সংস্কৃতির আঁচড় দিয়ে ফিউশন করছেন আমাদের ডিজাইনাররা। টপস, কুর্তি, সিঙ্গেল কামিজ, পঞ্চ, টিউনিক এগুলো নতুন কিছু নয়। তবে নতুন রূপে এগুলোকে তৈরি করা হচ্ছে। এ ধরনের পোশাকে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্যাটার্নে। আরামদায়ক ও ট্রেন্ডি ফিউশন আনতে টপস ও কুর্তিতে জর্জেট কাপড়, ক্রেপ সিল্ক, ভিসকস কাপড় ইত্যাদির ব্যবহার অনেক বেশি করা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু কিছু টপস ও কুর্তি সুতার কাপড়েও ডিজাইন করা হচ্ছে।

দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরলে চোখে পড়বে নানা ঢঙের ও নকশার টপস বা কুর্তি; যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য খুব আরামদায়ক। এ বিষয়ে ফ্যাশন হাউস লা রিভের ডিজাইনার মারুফা শিল্পী বলেন, সব বয়সের মানুষ এখন টিউনিক বা কুর্তি পরছে। কেননা এ পোশাকগুলো খুব আরামদায়ক। তা ছাড়া বর্তমানে ফিউশন সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে টিউনিকে। সেজন্যই মূলত সব শ্রেণির মানুষের কাছে এটি গ্রহণযোগ্য। টিউনিক বা টপস পরার ক্ষেত্রে ম্যাচিং করার কোনো প্রয়োজন নেই। পছন্দমতো যেকোনো রঙের বা ডিজাইনের সালোয়ার, প্যান্ট, পালাজ্জো ইত্যাদি পরতে পারে। এ পোশাকগুলো ডিজাইনের সময় আরামের কথা মাথায় রেখে ঢিলেঢালা, ফিউশনধর্মী, মডার্ন ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রেন্ডের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়। পরিবেশ ও সামাজিকতার সঙ্গে যেন মিশে যায় ডিজাইনে লক্ষ রাখা হয় সেদিকেও। এ ছাড়া ড্রেসের ডিজাইন আমরা এমনভাবে করি যেন সেটা দেখেই চোখে শান্তি লাগে। গরমে আরামের কথা মাথায় রেখেই সব হাউস পোশাক তৈরি করছে। টিউনিকের ডিজাইনে ট্রায়ার প্যাটার্ন, হেংকার শেপ, এ লাইন ইত্যাদি প্যাটার্ন বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এ ছাড়া কাফতানের সঙ্গে স্লিভে পেল্ট, শর্ট কিমনো স্লিভ, বিল স্লিভ, টাই স্লিভ, পাফ স্লিভ ইত্যাদি বেশি ব্যবহার হয়েছে। 

ফেব্রিক 

গরমে সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক ফেব্রিক হলো ভিসকস। সেজন্য পোশাকে ভিসকস ফেব্রিকের ব্যবহার হচ্ছে বেশি। এ ছাড়া কটন, ক্রেপ সিল্ক ইত্যাদি ফেব্রিকের ব্যবহারও দেখা যায়। এ সময়ের আবহাওয়া এমন যে, যখন তখন হুট করে বৃষ্টি নামছে। একদিকে গরম এবং অন্যদিকে বৃষ্টিÑ এ দুই পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে জর্জেট ফেব্রিকেও পোশাক তৈরি করা হচ্ছে; যা গরমে কিছুটা স্বস্তি দেবে আবার হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও দ্রুত শুকিয়ে যাবে।


রঙ

রঙের ক্ষেত্রে এ সময়ে হালকা রঙগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ফ্যাশন হাউসগুলোয় দেখা মিলছে টার্কিশ ও প্যাস্টেল শেডের রঙগুলোর ব্যবহার। পাশাপাশি পোশাকে লাইট অরেঞ্জ, গোলাপি, লাল, হলুদ, ম্যাজেন্টা, সবুজ, নীলসহ উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত সফট এবং আর্টি কালারগুলোই টিউনিক, টপসগুলোকে ট্রেন্ডি করেছে। এ ছাড়া এমনভাবে রঙ নির্বাচন করা হয়েছে যেন সেটা চোখে না লাগে বরং চোখের জন্য শান্তি দেয়।

মোটিফ

একটি পোশাক আকর্ষণীয় হয় তার ফেব্রিক, নকশা, রঙ, মোটিফ সবকিছুর মিশেলে। দেখা গেল পোশাকের রঙ অনেক সুন্দর, ফেব্রিকও আরামদায়ক কিন্তু মোটিফ সুন্দর না হলে পোশাকটি তত আকর্ষণীয় লাগবে না। তাইতো অনেক ডিজাইনার এখন মোটিফভিত্তিক ডিজাইন তৈরি করছেন। পোশাকে প্রধানত তিনটি মোটিফ বেশি দেখা যায়। যার মধ্যে রয়েছে ফ্লোরাল মোটিফ, জিওম্যাট্রিক মোটিফ ও ট্রাডিশনাল মোটিফ। ফ্লোরাল মোটিফে নানা রঙের ব্যবহার পোশাকগুলোকে আকর্ষণীয় করে তোলে। এ ছাড়া বিভিন্ন রেখা বা জ্যামিতিক আঁকিবুঁকিতে পোশাকে দেখা মেলে নতুনত্বের ছোঁয়া।

মানানসই সাজ

প্রতিদিনের সাজগোজের ক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হবে স্বচ্ছন্দের ব্যাপারটি। নিজেকে পরিপাটি রাখতে টুকটাক মেকআপ করতেই হয়। তা ছাড়া কোন পোশাকের সঙ্গে সাজ কেমন হবে তা নির্ভর করে পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর। একই পোশাকে পার্টিতে পরিধানের ক্ষেত্রে যেমন সাজ মানাবে, সেই সাজেই অফিসে গেলে বেমানান লাগবে। সেজন্য মূলত স্থানভেদে মেকআপ লুকের পরিবর্তন হয়। নিত্যদিনের জন্য নুড বা নো মেকআপ লুকের কোনো বিকল্প হয় না। চাইলে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। অথবা ক্রিম, সানস্ক্রিন লাগিয়ে ফেস পাউডার ব্যবহার করে নিলেও সুন্দর দেখাবে। অফিস কিংবা ক্যাম্পাসের জন্য সাজ যত সিম্পল হবে তত দেখতে ভালো লাগবে। এ ক্ষেত্রে চোখে ঘন করে মাশকারা দিয়ে একটু কাজল লাগালে চোখ দেখতে বড় মনে হবে। চাইলে চোখে আইলাইনার লাগাতে পারেন। আবার চোখের কোনায় টেনে শুধু উইংস করলেও চোখ দেখতে টানাটানা লাগবে। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে নুড কালারের চলই এখন বেশি; যা মানিয়ে যায় সব পোশাকের সঙে। চাইলে একটু গাঢ় রঙের লিপস্টিকও পরতে পারেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা