গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩ ১২:৫৫ পিএম
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৩ ১৬:১১ পিএম
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি গবেষক ও উদ্যোক্তা নবনীতা নাওয়ার
বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বস বুধবার (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত) কানাডার টরন্টোর অনূর্ধ্ব ৩০ বছর বয়সি ৩০ তরুণ নেতার তালিকা প্রকাশ করেছে। ফোর্বস এই প্রথমবারের মতো ‘৩০ আন্ডার ৩০ লোকাল টরন্টো’ তালিকা প্রকাশ করল। এতে কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি গবেষক ও উদ্যোক্তা নবনীতা নাওয়ার স্থান পেয়েছেন। এ তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি তিনি।
ফোর্বসের ওয়েবসাইটে তালিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৩০ বছরের কম বয়সি টরন্টোর ৩০ তরুণ নেতার সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিন। তাদের কেউ শহরে নিরাপদ ড্রোন চলাচলে সহায়তা করেন, কেউ উচ্ছিষ্ট খাবার থেকে বিকল্প প্লাস্টিক বানান, কেউবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে লেখা শনাক্তকারী নির্মাণসামগ্রী তৈরি করেন। টরন্টোকেন্দ্রিক প্রথম এ তালিকায় আর্থিক, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ক্রীড়া ও কলা ক্ষেত্রে সফল তরুণদের নির্বাচিত করা হয়েছে। নবনীতা এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), পিমুয়াপা প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও)।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে কানাডায় ব্যবসা ও প্রযুক্তি জীবনের কেন্দ্রে অবস্থান করছে টরন্টো। এখানে তরুণরা নানা উদ্ভাবনী ধারণা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ (স্টার্টআপ) নিয়ে কাজ করছে, যা ভবিষ্যৎ দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেবে। সে কারণেই টরন্টোর জন্য আলাদা তালিকা করেছে ফোর্বস।
এ নিয়ে নবনীতা টুইটারে লিখেছেন, ‘এই অসামান্য স্বীকৃতির জন্য ফোর্বসকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি যারা আমাদের যাত্রার অংশ হয়েছেন তাদের সবাইকে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা ও বেড়ে ওঠা এক সংখ্যালঘু নারীর টরন্টো এবং বিশ্বের বুকে এই স্বীকৃতি পরাবাস্তবতার মতোই।’
ফোর্বস ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, টরন্টোকেন্দ্রিক প্রথম এই তালিকায় আর্থিক, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ক্রীড়া ও কলা ক্ষেত্রে সফল তরুণদের নির্বাচিত করা হয়েছে। এইচডিএএক্স থেরাপিউটিকস নামে টরন্টোভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নবনীতা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা। তার সঙ্গে আছেন থাই বংশোদ্ভূত পিমুয়াপা মানসিয়ংকুল। দুজনকেই তরুণ গবেষক ও উদ্যোক্তার তালিকায় রেখেছে ফোর্বস।
ফোর্বসের তালিকায় নবনীতা ও পিমুয়াপার নাম ও ছবি যুক্ত করে এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস সম্পর্কে লেখা হয়েছে, এইচডিএএক্স থেরাপিউটিকস প্রথমবারের মতো পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির (পিএন) চিকিৎসা বা ওষুধের উন্নয়নে কাজ করছে। বিশ্বের ৩ কোটির বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। কেমোথেরাপি, ডায়াবেটিস, কোনো আঘাত বা জিনগত কারণে মানুষের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে পিএন রোগ হয়। এতে পিএন রোগীরা ব্যথা, বোধহীনতা, পক্ষাঘাত ও প্যারালাইসিসে ভোগে। এ রোগের এখনও কোনো ওষুধ নেই। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এইচডিএএক্স এ রোগের ওষুধ বাজারজাতের চেষ্টা করছে।
নবনীতা নাওয়ারের টরন্টো-জীবন ১০ বছরের। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এই গবেষক কানাডায় পারমানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে ১৯৯৪ সালের ১১ নভেম্বর জন্ম নবনীতার। বাবা মাহবুবুর রহমান তৈরি পোশাক কারখানার মালিক, মা গুলশান পারভীন গৃহিণী। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে নবনীতা বড়। ২০২১ সালে বিয়ে করেছেন ওয়াসিফ আজম চৌধুরীকে, তিনি একজন প্রকৌশলী।
ঢাকার আগা খান স্কুল থেকে এ–লেভেল উত্তীর্ণ হয়ে নবনীতা ২০১৩ সালে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে আংশিক বৃত্তি নিয়ে স্নাতক পড়তে যান। বিষয় ছিল বায়োমেডিক্যাল কেমিস্ট্রি। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিনাল কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। চালিয়ে যেতে থাকেন গবেষণা। ২০২১ সালে গড়ে তুলেছেন এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস।