× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নখ যখন ক্যানভাস

সুবর্ণা মেহ্‌জাবীন স্বর্ণা

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৪৪ পিএম

আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৫৫ পিএম

মডেল : বাদরিয়া ; মেকআপ : রেড বিউটি সেলুন ; ছবি : ফারহান ফয়সাল

মডেল : বাদরিয়া ; মেকআপ : রেড বিউটি সেলুন ; ছবি : ফারহান ফয়সাল

ফ্যাশনপ্রেমী তরুণীরা কখনও নখের সজ্জায় ব্যবহার করছে একরঙা পলিশ, আবার কখনও সেখানে দেখা মিলছে নানান রঙের আঁকিবুঁকি। ছোট নখগুলো যেন একেকটি ক্যানভাস, যেখানে নকশা ও রঙের শৈল্পিক ছোঁয়ায় প্রকাশ পায় ব্যক্তিত্ব ও রুচি


সাম্প্রতিক সময়ে নখের সজ্জা বেশ জনপ্রিয়। ট্রেন্ডি নেইল আর্ট এখন ফ্যাশনেরই অনুষঙ্গ। আমাদের মুখের পরে সব থেকে বেশি চোখ যায় হাতে। সে হাত যদি সুন্দর না থাকে তবে যতই ভালো পোশাক আর সাজসজ্জা হোক না কেন, তা আসলে বৃথাই যায়। হাতের সৌন্দর্য বাড়াতে নেইলপলিশ বা নেইল আর্টের জুড়ি নেই।
অনেকেই নখে নিত্যদিন পলিশ দিতে পছন্দ করেন। আবার অনেকে বিশেষ কোনো দিন বা উপলক্ষে নখ রাঙান। অন্যদিকে অনেকের নেইল আর্ট কমবেশি সবারই নজর কাড়ে। নেইল আর্ট, নেইল এক্সটেনশন ব্যক্তির পছন্দ, রুচি ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ বটে।




নখের সাজের রকমফের
হঠাৎ শুনলে মনে হতে পারে নখের সাজের আবার রকম কী! নখের সাজেও আছে বৈচিত্র্য। নেইল আর্টে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে সাদাকালো জ্যামিতিক নকশা, গ্লিটার, সিকুইন, একরঙা সাদা বা কালো রঙের পলিশ। এ ছাড়া চোখ কিংবা ঠোঁটের সঙ্গে মিল রেখে নেইল আর্ট করার প্রবণতাও দেখা যায়। গ্রাফিক লাইনস, ফ্রেঞ্চ টিপ, রেডিয়েন্ট ওপাল, বোল্ড মেটালিক, স্পারকাল, লেটারিং, ডটেড ডিজিটস, ইলেকট্রিক প্রিন্ট, মাল্টিকালার স্ট্রাইপসহ বিভিন্ন নকশার ব্যবহার হচ্ছে নেইল আর্টে।
নতুনত্ব আনতে নখ সাজাতে ব্যবহার করা হয় নানা রঙ। কোন রঙে নখ রাঙাবেন, তা একান্তই ব্যক্তির পছন্দ। তবে এখানেও আছে ভিন্ন পথ। রূপবিশেষঞ্জ আফরোজা পারভীন বলেন, ‘নখের ক্ষেত্রে হালকা রঙগুলো এখন বেশি চলছে। একদম একরঙা না করে এগুলোর ওপর নানা ধরনের নকশা ও প্যাটার্ন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এই সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলেল নকশা। এ ছাড়া রংধনু ও মারবেল আর্টও চলছে। একঘেয়েমি দূর করতে চার নখে এক রঙ ও অন্য নখে একটি আলাদা রঙ করা হয়। কখনও আবার এক নখেই ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি রঙ বা একই রঙের ভিন্ন দুটি শেড; যা আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবহার করা হয় গ্লিটার, বিভিন্ন রঙের পাথর ও ছোট ছোট মুক্তা।


নখের আকৃতি
নখের আকৃতি নির্ভর করে মূলত ইচ্ছার ওপর। লম্বা নখের চল সব সময়ই ছিল। তবে বর্তমানে লম্বা সুচালো নখের চল ধীরে ধীরে কমছে। আফরোজা পারভীন বলেন, ‘ছোট নখের চল এখন বেশি। সে ক্ষেত্রে স্কয়ার, স্কয়ার ওভাল, ওভাল, রাউন্ড ও কফিন আকৃতিতে নখ কাটার চল বেশি। আর্ট করতে গেলে প্রথমে নখগুলো কেটে সুন্দর করে শেইপ দিয়ে তারপর করা হয়। এ ছাড়া কৃত্রিম নখ লাগিয়ে চাইলে আর্ট করা যেতে পারে। অনেকের নখ খুব পাতলা হয় বিধায় একটু বড় রাখলেই ভেঙে যায়, তারা নখে আর্ট করতে পারেন নেইল এক্সটেনশন করে। আর্ট করতে মূলত আসল নখই কেটে আকার দেওয়া হয়। আর এক্সটেনশনের বেলায় কৃত্রিম নখে কয়েক পরত জেল ও পলিশ দিয়ে ধাপে ধাপে ইউভি রশ্মির নিচে রেখে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর করা হয় কারুকাজ; যা সময়সাপেক্ষ। তবে নেইল এক্সটেনশন করে সঠিকভাবে যত্ন নিলে তা অনেক দিন হাতের সৌন্দর্যবর্ধন করবে।

এক্সটেনশন করতে ধাপে ধাপে জেলের পরত 

অ্যাক্রেলিক নাকি জেল এক্সটেনশন
অ্যাক্রেলিক নেইল এক্সটেনশন বেশ প্রচলিত। এটি জেল এক্সটেনশনের চেয়ে পুরোনো পদ্ধতি। জেল এক্সটেনশন বেশ আধুনিক ও জনপ্রিয়। জেল এক্সটেনশন কিছুটা হালকা হয় অ্যাক্রেলিকের চেয়ে। এ ছাড়া অ্যাক্রেলিক এক্সটেনশনে নখের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। কারণ এ পদ্ধতিতে এক্সটেনশন করাতে কিছু কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যা নখের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। নিয়মিত যারা নেইল এক্সটেনশন করেন তাদের জেল এক্সটেনশন করানো উচিত। নখ এক্সটেনশন করতে লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। তাই যদি ধৈর্য নিয়ে সব কটি পর্যায়ে জেল এক্সটেনশনের পদ্ধতি ঠিকঠাক মেনে করেন, তাহলে নখে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা থাকে না।

অ্যাক্রেলিক নেইল এক্সটেনশন

যত্ন নেবেন যেভাবে
এক্সটেনশন করলে হাতের কিছু সাধারণ যত্ন নেওয়া উচিত, যাতে এক্সটেনশন দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেমন বেশিক্ষণ পানির কাজ না করা। হাত দিয়ে খাবার না খাওয়া। হাত দিয়ে অন্যান্য কাজ করার সময় আরেকটু বেশি মনোযোগী হওয়া। ধোয়ামোছার কাজ করার সময় হাতে গ্লাভস পরা। আর হাত ধোয়ার পর কিউটিকল অয়েল মেখে নিলে নখগুলো পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়। কিউটিকল অয়েল না থাকলে সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় ভিটামিন-ই। সেটাও যদি না থাকে তো হাতের কাছে থাকা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। এতেও নখ সজীব থাকবে।


নিত্যদিনের নখের সজ্জায় নুড কালার পলিশ বেছে নিতে পারেন। এতে নখে যে নকশাই করেন না কেন তা মানিয়ে যাবে সব পোশাকের সঙ্গে। নকশা হোক বা এক্সটেনশন, রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নখে ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন। এতে নখ সজীব থাকবে, দেখতেও সুন্দর লাগবে। আর ১৫ দিন অন্তর বা মাসে অন্তত একবার পেডিকিউর করা উচিত। এর মাধ্যমে নখ ও হাত সুন্দর থাকবে
আফরোজা পারভীন, রূপ বিশেষজ্ঞ ও কর্ণধার
রেড বিউটি স্টুডিও অ্যান্ড সেলুন

নেইল আর্ট করলে
নখে দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন্ডি নকশা করে দুই দিন পরই যদি তাতে চিড় ধরে আর কিছু জায়গায় রঙ উঠে যায়, তবে পুরো কষ্টই মাটি হয়ে যাবে। সূক্ষ্ম কারুকাজ করা ট্রেন্ডি নেইল আর্টে এমন দশা হলে তা চোখে পড়ার মতো খুঁত। এদিকে নেইল পেইন্ট বাঁচাতে হাত গুটিয়ে বসে থাকারও তো উপায় নেই। তাই নখ রাঙানোর সময়ই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে
নখ বেশি লম্বা না করা
নখের আকার মাঝারি বা ছোট থাকলে তা দেখতে সুন্দর লাগবে আবার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে না। খেয়াল রাখতে হবে, একটি নখ ছোট অন্যটি বড় এমনও যেন না হয়। সঠিকভাবে ট্রিম করা নখে সহজে এবং কম সময়ে নেইল পেইন্টের কোট বসে যায়। পাশ থেকে ঘষা লেগে উঠেও যায় না।


বেজকোট বাদ দেওয়া যাবে না
মসৃণ আর সুন্দর ফিনিশড নেইল আর্টের জন্য প্রয়োজন বেজকোট ব্যবহার। সরাসরি নখের ওপরে পেইন্টের আগে বেজকোট প্রথম লাগাতে হবে। তাহলে নখের নকশা দেখতে যেমন সুন্দর লাগবে তেমনি স্থায়িত্ব বাড়বে।
টপকোট ব্যবহার
টপকোট নির্বাচন করতে হবে সাবধানে, সেটি হতে পারে শাইনি বা চকচকে কিংবা ম্যাট ফিনিশ। এমন টপকোট বেছে নিতে হবে যা নেইল কালার চিড় ধরে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে এবং নখের শক্তি বাড়াবে। নকশার ওপর দুই দিন অন্তর স্বচ্ছ টপকোট লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে মূল নেইল পেইন্ট অক্ষুণ্ন থাকবে।



ফেটে যাওয়া নখ কেটে ফেলুন

যত সুন্দর ও ব্যয়বহুল নেইল আর্ট হোক না কেন চিড় ধরা, নখ ভাঙা বা ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটবেই। এ ক্ষেত্রে চিড় ধরা বা ভাঙা নখ ট্রিম করে বা কেটে ছোট করে ফেলা উচিত। নয়তো সমস্যা বাড়বে এবং বারবার টান পড়ে নখের কোনায় ব্যথা বা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
গ্লাভস ব্যবহার
নেইল পেইন্টের পরে রান্নাঘরের কাজ যেমন ঘষামাজা, কোটা-বাছার সময় গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। এতে নখে অযাচিতভাবে রঙ লেগে যাওয়া, বিবর্ণ হওয়া বা নখ ও কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচা যায়।
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা