পাঠকের লেখা
সাহিদা সাম্য লীনা
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩ ১১:০৯ এএম
যখন লিখতে চাই, কত কিছুই না ইচ্ছে করে লিখতে। কিন্তু সবকিছুই কি আর লেখা যায়! যেমন একটু আগে লিখলাম। জীবন এমনি এক বৈচিত্র্যময় গল্প- যেখানে কখনও ছন্দের মিল থাকে আবার কখনও থাকে না। তেমনি সম্পর্কেও। যা লিখতে চাইলে কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে, যুগের তালে কি-বোর্ডে চাপতে, নোট প্যাডে লিখতে আঙুল ব্যথা হবে। তবু জীবনের গল্পটা শেষ হবে না, সে তো ফুরিয়ে যাওয়ারও নয়।
সময় আর জীবন ছুটে চলে আপন গতিতে। ঝরনা যেমন চলার পথে কোথাও বাধা পেয়ে তৈরি করে সরোবর আবার কোথাও গহিন অরণ্যে সৃষ্টি করে গভীর খাদ; তেমনি মানুষও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলার পথে জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে তৈরি করে কত না গৌরবময় সৃষ্টি, আবার কখনও কখনও কুৎসিত কদাকার মানুষের বীভৎস রূপ।
জীবনে অনেক অপূর্ণতা থাকবে। শতভাগ সফল জীবন কারও নেই। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, গান, কবিতা, স্মৃতি সবই থাকে জীবনে। আসে আর যায়। স্থায়ী থাকে না। জীবন কখনও সুখের কখনও দুঃখের হতেই পারে, তাই বলে থেমে থাকা যায় না। কখনোই না। কিছু ভালোবাসা, কিছু স্মৃতি আর কিছু কষ্ট- যা মানুষের সবসময় মনে থাকবে। এটা ভোলা যায় না। ভালোবাসা এমন একটা অনুভূতি, যেটা কারও সঙ্গে সারাজীবন থেকেও আসে না। আবার কারও সঙ্গে হয়তো কিছু মুহূর্তই যথেষ্ট- যা কখনও জোর করে হয় না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, হয় না। সাময়িক অতিথি হতে আসে ওরা।
মানুষের জীবনে অনুশোচনা করার মতো অনেক ঘটনাই থাকে- যা নিজেকে তিলে তিলে পুড়িয়ে মারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর উল্টোটাও ঘটতে পারে। অনুশোচনার দহনে পুড়ে খাঁটি সোনা হয়ে উঠতে পারে। আসলে সবটুকুই নির্ভর করে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। আমি মনে করি কেউ একজন ভুল করলে তার প্রতি সমাজের রূঢ় আঙুল না উঠিয়ে ভুলটা শুধরে দেওয়া উচিত। যদি তাও সম্ভব না হয়, অন্তত ভুলটা ধরিয়ে দেওয়া কিংবা তাকে অনুশোচনার সুযোগ দেওয়া উচিত। যে অপমান সইতে পারে, সে-ই তো জীবনের বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে বহুদূর যেতে পারে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, জীবনে কেউ কখনও হারে না। হয় তো জেতে, নয় তো শেখে।
অতীত কোনো ঘটনায় অনুশোচনাকে কেন্দ্র করে জীবন থামিয়ে দেওয়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কেননা অতীতকে যে পরিবর্তন করা যায় না তা ধ্রুব সত্য। তাই অতীতকে অনুশোচনার মাধ্যমে বর্তমানকে শুধরে ভবিষ্যৎকে আলোকময় করার চেষ্টা করা উচিত। জীবনে নিজের নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তকেই ছোট করে দেখা ঠিক নয়, কেননা তোমার জীবন তোমার দুনিয়া। অন্যের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার চেয়ে নিজের সিদ্ধান্তে বারবার হোঁচট খাওয়াটা অনেক ভালো। নিজের পৃথিবী, নিজের ইচ্ছা, নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে চলতে হবে। তবেই একজন মানুষ সফল হবে। সামনে অবারিত সম্ভাবনার হাতছানি, এইতো সময় এগিয়ে যাওয়ার সুন্দর-সুখী জীবনের পানে।