× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বপ্নের উড়োজাহাজ

ইমরুল কায়েস রাফসান

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩ ০৯:৪৪ এএম

স্বপ্নের উড়োজাহাজ

আমি জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছি। সামনের মাঠে ভিড় করছে সবাই। ছোটরা-বড়রা নেমে এসেছে ঘর থেকে। সবাই পশ্চিম দিকে তাকিয়ে আছে। মাঠে দাঁড়িয়ে মসজিদের মিনারের উঁচুতে তাকাচ্ছে সবাই। ছোটরা বাবা-মায়ের কোলে উঠে সেদিকে তাকাচ্ছে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামছে। মা রান্নাঘরে ব্যস্ত। বাবা তখনও ফেরেনি। আমার জুতো কেনা হয়নি। মা বলছে, বাবার অফিসে কী একটা ঝামেলা হয়েছে, তাই বেতন হলো না। তাই এবার ঈদ নেই। পাশের বাড়িতে যাকে আমরা নানা বলে ডাকি তিনি এসে সেমাই চিনি-দুধ দিয়ে গেছেন। মা আমার জন্য দুধ সেমাই রান্না করেছে।

বাবা ফিরছে না কেন? আমি ভাবছিলাম, আমাকে নতুন জুতো কিনে দিতে পারেনি বলেই বুঝি ফিরছে না। মার কাছে জানতে চাইলাম, আমি যদি ঘুমিয়ে পড়ি তাহলে কি বাবা ফিরবে? মা কোনো উত্তর না দিয়ে চামচ বাড়িয়ে দিল আমার দিকে, সেমাইয়ের মিষ্টিটা ঠিক হলো কি না! সেমাই মুখে দিয়ে স্বাদ পেলাম না। কাগজের একটা উড়োজাহাজ বানাতে বানাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম!

উড়োজাহাজ উড়ে যাচ্ছে। আমি ওর ভেতরে বসিনি। ওপরে বসেছি। ঘোড়ার পিঠে বসার মতো। উড়োজাহাজ উড়ে যাচ্ছে, নিচে ধানক্ষেত, নদী, খাল পেরিয়ে যাচ্ছে। নদীর বুকে পালতোলা নৌকা। লঞ্চ ভেসে যাচ্ছে। আমরা ঈদে এমন লঞ্চে করেই বাড়ি যাই। এবার যাচ্ছি উড়োজাহাজে। আমি একা। বাবা-মা কোথায়? তাদের কি ঢাকায় রেখে এলাম? নাকি উড়োজাহাজের পেটের ভেতর?

মেঘের ভেতর দিয়ে যখন উড়োজাহাজ যাচ্ছে, শরীর কেমন ভিজে যাচ্ছে। একদম নদীতে গোসল করার মতো। কে যেন আমাকে কোলে করে নিয়ে নদীতে নামছে। আমি ভয়ে চিৎকার করে উঠলাম। নদী পেরিয়ে সবুজ ধানক্ষেতের ওপর উড়োজাহাজ। মেঘ থেকে নেমে কিছুটা নিচু হয়ে যাচ্ছে। নৌকায় করে যাওয়ার সময় যেমন খালের জল, কলমি বা ধানক্ষেত ছুঁয়ে যাই; এখনও তেমন করে ধানক্ষেত ছুঁতে ইচ্ছে করছে। নুয়ে পড়েও ছুঁতে পারলাম না। উড়োজাহাজ বুঝি আমার ইচ্ছে বুঝতে পেরেছে, তাই নিচ দিয়ে একদম ধানক্ষেত ছুঁয়ে গেল। ধানের শীষের ধারে আমার হাত কেটেই গেল। এমন কতবার কেটেছে। আমি ভয় না পেয়ে উড়োজাহাজ থেকে আমাদের গ্রামের তালগাছ দেখা যায় কি না দেখছি। বাঁশঝাড় পেরিয়ে তালগাছ। বিশাল একটা বাঁশবাগান পার হতেই চোখে এলো তালগাছটা। তালগাছের নিচে কেউ দাঁড়িয়ে নেই। ওমা, দিদু জানে না আজ আমি বাড়ি আসব! আমি দিদু বলে চিৎকার করে উঠলাম। দেখি সামনে মা-বাবা দাঁড়িয়ে হাসছে। বলল, কী স্বপ্ন দেখছিলে? ওঠো দেখো নিচে কে দাঁড়িয়ে আছে। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ছোট মামা সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মামার হাতে লাল দুটি জুতো। জুতোতে সিংহ, ডাইনোসর ও ক্যাঙারুর ছবি বসানো। আমি তখনই ওই জুতো পরে চলে যাই মাঠে। এবারও আমার সেই ছোটবেলার মতো ঈদ এসেছে।

আমার ইচ্ছে করছে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি ছোট মামার মতো। শুধু রঙিন জুতো, জামা নয়, মুঠো ভরা আনন্দ-হাসি পৌঁছে দিই তোমাদের বাড়ি। তখন সবাই মিলে আনন্দ করব, নিজেরাই হয়ে যাব একেকটা উড়োজাহাজ।


সপ্তম শ্রেণি

এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজ, মিরপুর, ঢাকা


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা