আইন-আদালত
দিলরুবা শরমিন
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ১৩:৪৬ পিএম
পাঠকদের আইনগত সমস্যার সমাধানে এই বিভাগ। নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী দিলরুবা শরমিন
প্রশ্ন : মৃত্যুকালে আমার বাবা বিপুল সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন। আমরা দুই বোন এক ভাই বাবার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সন্তান। দ্বিতীয় পক্ষে দুই ভাই রয়েছে। আর আছেন দ্বিতীয় মা। আমরা মুসলিম। আমাদের দ্বিতীয় মা বাবা বেঁচে থাকতে প্রচুর সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়েছেন, যা আমরা জানতাম না। এখন বাবার মৃত্যুর পর সবকিছু সমান অংশ চাইছেন। আমরা কি করব এখন?
রুমা, দীনা, দীপক : বারিধারা, ঢাকা
উত্তর : ফারায়েজ আইনানুযায়ীই একজন মুসলিমের সম্পদ ও সম্পত্তি বণ্টিত হবে। যদি না আপনাদের পিতা জীবিত থাকাবস্থায় কোনো কিছু কাউকে রেজিস্ট্রি দান বা রেজিস্ট্রি হেবা করে না করে থাকেন। সেই হিসাবে মুসলিম ফারায়েজ আইন অনুযায়ী কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার ওপর ভিত্তি করে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়ে থাকে। এভাবে বণ্টন করাকে ফারায়েজ বলা হয়। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের সূরা নিসাতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে।
১. মৃত ব্যক্তির পর্যাপ্ত সম্পত্তি থাকলে সেখান থেকে তার দাফনকাফনের যাবতীয় খরচ মেটাতে হবে।
২. তিনি যদি জীবিত থাকা অবস্থায় কোনো ধারদেনা করে থাকেন, তাও রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে পরিশোধ করে দিতে হবে।
৩. তার স্ত্রী বা স্ত্রীদের দেনমোহর পরিশোধিত না হয়ে থাকলে বা আংশিক অপরিশোধিত থাকলে তা পরিশোধ করে দিতে হবে। মোট কথা, স্ত্রীর সম্পূর্ণ দেনমোহর স্বামী মৃত অথবা জীবিত যাই হোক, তা স্বামীর সম্পত্তি থেকে আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দিতে হবে।
৪. মৃত ব্যক্তি কোনো দান কিংবা উইল করে গেলে তা প্রাপককে দিয়ে দিতে হবে।
উপরের সব কাজ সম্পন্ন করার পর মৃত ব্যক্তির অবশিষ্ট সম্পত্তি ফারায়েজ আইন অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।
আপনারা একজন সিভিল আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন। সাকসেশন মামলা করে নিজেদের অংশ আগে আদালত থেকে ভাগ করে নিন। তার পর আপস-বণ্টননামার মাধ্যমে ইসলামি ফারায়েজ অনুযায়ী বণ্টন করে নিন। সে ক্ষেত্রে পুত্রের অর্ধেক কন্যা, কন্যার অর্ধেক স্ত্রী- এভাবেই সুষ্ঠু বণ্টন করা হবে। নিজেদের বিষয়, তাই আপসেই সব কিছু হবে আশা করি।