পছন্দের লিপস্টিক

নারীর সৌন্দর্যবর্ধনের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ লিপস্টিক। মুখে যতই ক্রিম, সানস্ক্রিন ক্রিম বা ফাউন্ডেশন লাগানো হোক না কেন- লিপস্টিক ছাড়া মেকআপে পূর্ণতা আসে না। তাই ত্বক ও মেকআপ লুকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন লিপস্টিক শেড নির্বাচন করা খুবই জরুরি।

বর্তমানে নানা রঙের, বিভিন্ন কার্যকারিতাসম্পন্ন লিপস্টিক মেলে। রঙের ভিন্নতার সঙ্গে এসবে রয়েছে মানে এবং পরিমাণে ভিন্নতা। এর মধ্যে কিছু লিপস্টিক ঠোঁটকে ম্যাট ফিনিস দেবে, কিছু লিপস্টিক আবার ফুটিয়ে তুলবে সজীবতা। তাই লিপস্টিক কেনার আগে চিন্তা করতে হবে এর স্থায়িত্ব, কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে। এখন ট্রেন্ডি লিপস্টিক হচ্ছে ম্যাট ফিনিস। কিন্তু প্রিয় শেডটির ম্যাট লিপস্টিক যদি পাওয়া না যায়, তাহলে একটি ম্যাট ব্লাশ বা লুজ পাউডার ব্যবহার করে লিপস্টিকে ম্যাট ফিনিস আনতে পারেন। প্রথমে লিপস্টিক ব্যবহার করুন এবং এরপর আঙুল দিয়ে আলতোভাবে পাউডার বা ব্লাশ ঠোঁটে ট্যাপ করে নিন। পেয়ে যাবেন ম্যাট ফিনিস লুক। লিপস্টিক ব্যবহারের কিছুক্ষণ পর অনেকের ঠোঁটে রঙটি ম্লান হয়ে যায়। এ সমস্যা এড়াতে লিপস্টিককে লক করে রাখতে হবে। যা করবেন- লিপস্টিক ব্যবহারের পর অতিরিক্ত লিপস্টিক মুছে ফেলুন। একটি পরিষ্কার টিস্যু নিয়ে তার প্লাই দুটো আলাদা করুন এবং দুই হাতে দুই অংশ রাখুন। একটি লেয়ার ঠোঁটের ওপর রাখুন এবং ট্রান্সলুসেন্ট লুজ পাউডার ঠোঁটের ওপর ব্যবহার করুন। এর পর আরেকটি লেয়ার যোগ করুন। এভাবে লিপস্টিক ব্যবহার করলে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ঠোঁটের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং লিপস্টিককে দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করে।

পছন্দের নিউট্রাল লিপস্টিক শেডটি কি মানাচ্ছে না? এর কারণ হচ্ছে লিপস্টিকের মধ্য দিয়ে ঠোঁটের রঙটা দেখা যায়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য লিপস্টিক ব্যবহারের আগে ঠোঁটে অল্প করে কনসিলার বা ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। এর পর পছন্দের লিপস্টিকটি লাগিয়ে নিন। লিপস্টিকের আসল রঙ সুন্দর করে ফুটে উঠবে। লিপস্টিক যদি লিপ লাইনের বাইরে ছড়িয়ে যায়, তাহলে ফেস প্রাইমার ব্যবহার করুন। পরিষ্কার ঠোঁটে আগে প্রাইমার ব্যবহার করে নিন। এর পর একটা লিপলাইনার দিয়ে এঁকে লিপস্টিক ব্যবহার করে নিন। তাহলে আর লিপস্টিক ছড়িয়ে যাবে না।

আরও পড়ুন : ত্বকের যত্নে ভিটামিন সি

লিপস্টিকের রঙ নির্বাচন 

ত্বকের আন্ডারটোন অর্থাৎ ত্বকের ভেতরকার রঙ সম্পর্কে জানা লিপস্টিক কেনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ওয়ার্ম আন্ডারটোনের হলে কমলা বা লালচে রঙঘেঁষা বাদামি, কমলা, খয়েরি টোনের লিপস্টিকগুলোতে চমৎকার দেখাবে। আর কুল আন্ডারটোনের যারা- তাদের লাল, বেগুনি, গোলাপি টোনের লিপস্টিকে দারুণ মানায়।

এ ছাড়াও লিপস্টিকের রঙ ফুটিয়ে তুলতে আপনার নির্বাচন করা লিপস্টিকের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটা ডিপ কালার পেন্সিল লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁটে ড্র লাইনে ভালোভাবে লাগিয়ে দিন এবং অবশিষ্ট অংশে লাইট কালার শেড ব্যবহার করুন। এতে লিপস্টিকের রঙ আকর্ষণীয় হবে। প্রতিদিন নানা ধরনের লিপস্টিক লাগানো হয় ঠোঁটে। এই নানা লিপস্টিকের ভিড়ে ঠোঁট যেন নিষ্প্রাণ হয়ে না যায়, তাই রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, লিপস্টিক লাগানোর পর ঠোঁট অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে ঠোঁট থেকে চামড়া ওঠে এবং ঠোঁটে কালচে দাগ পড়ে। এ সমস্যা এড়াতে লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপ জেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। 

টিপস :

• ঘুমানোর আগে ভালোভাবে ঠোঁট স্ক্রাব করে লিপ জেল লাগিয়ে নিতে হবে। এতে ঠোঁট নরম ও কোমল থাকবে।
• লিপস্টিক ব্যবহার করার আগে ঠোঁটে ভালোভাবে লিপ জেল লাগিয়ে নিন।
• লিপস্টিক দীর্ঘস্থায়ী করতে লিপ জেল লাগানোর পর অল্প ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন এবং তার ওপর পছন্দের রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করুন।
• লিপস্টিক ব্যবহারের আগে লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিলে লিপস্টিক ছড়াবে না আর দেখতে সুন্দর লাগবে।
• লিপস্টিক আকর্ষণীয় করতে হালকা রঙ ও ডিপ রঙ মিক্স করে ঠোঁটে লাগাতে পারেন।
• খাওয়ার সময় ঠোঁট থেকে লিপস্টিক তুলে ফেলুন।
• কাপড়ে লাগা লিপস্টিকের দাগ তুলতে কাপড়ের যে স্থানে দাগ লেগেছে, সেখানে সামান্য শেভিং ক্রিম লাগিয়ে স্ক্রাব করুন।