× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এমন লক্ষ্য ঠিক করো যা তোমার কল্পনার চেয়েও বড়

সাহিদা আক্তার

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৩ ১৩:৫৯ পিএম

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক পি গেলসিঙ্গার

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক পি গেলসিঙ্গার

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে বক্তৃতা দিয়েছিলেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক পি গেলসিঙ্গার। যিনি চাকরি হারিয়ে আবার ফিরেছিলেন সিইও হিসেবে। তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগানো তাঁর বক্তব্যের সংক্ষেপিত অংশ আজ তুলে ধরা হলো

এই মঞ্চে পৌঁছানো পর্যন্ত আমার যাত্রাটা খুব সাধারণ। পূর্ব পেনসিলভানিয়ার একটি শহরে আমার জন্ম। ঘটনাচক্রে একবার একটা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিই, পেয়েও যাই। কয়েক দিন পর জানতে পারি, নিয়ম অনুযায়ী সেই পরীক্ষাটা আসলে আমার পরের বছর দেওয়ার কথা ছিল। আমার গাইডেন্স কাউন্সেলর বললেন, ‘কিছু কমিউনিটি কলেজ হয়তো তোমাকে নিতে পারে। চেষ্টা করে দেখো।’ মনে হলো আমাকে তিনি বিদায় করতে পারলেই বাঁচেন! অতএব ১৬ বছর বয়সে আমার কলেজজীবন শুরু হলো। প্রযুক্তি আমাকে মুগ্ধ করে।

প্রতিটি ক্লাসেই আমি মজা পেতে থাকি। প্রথমবার যখন একটা কম্পিউটার ছুঁয়ে দেখলাম, থমকে গেলাম। দুই বছরের ডিগ্রি নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া গেলাম ইন্টেলে সাক্ষাৎকার দিতে। ভাগ্যিস বিমানের টিকিটের খরচটা ইন্টেলই বহন করেছিল। তাই সে সময় আমার প্রথম বিমানে ওঠার অভিজ্ঞতাটা হলো। সাক্ষাৎকার যিনি নিয়েছিলেন তিনি আমার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ছেলেটা বুদ্ধিমান, একগুঁয়ে, খ্যাপাটে। এ রকম লোকই তো আমরা চাই।’ প্রযুক্তি আমি এতই ভালোবাসতাম যে ইন্টেল দ্রুতই আমার দ্বিতীয় পরিবার হয়ে উঠল। তার চেয়ে বড় কথা, আমাকে ঘোড়ার লাথি খেতে হচ্ছে না, গরুর গুঁতো খেতে হচ্ছে না, খড়ের গাদার ময়লায় মাখামাখি হতে হচ্ছে না, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসে কাজ করছি, আর কী চাই!

একসময় ইন্টেলের প্রথম প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেলাম। মাইক্রোপ্রসেসরের ১৪টি জেনারেশন তৈরির যাত্রায় আমি সঙ্গী ছিলাম। ওয়াই–ফাই কিংবা ইউএসবি প্রযুক্তি তৈরির পেছনে কাজ করেছি। আমার নাতনি যখনই ইউএসবি প্লাগ ব্যবহার করে, বলে ‘ধন্যবাদ দাদা’।

স্বপ্ন ছিল ইন্টেলের সিইও হব। কিন্তু ২০০৯ সালে ৩০ বছর কাজের পর, আমাকে বের করে দেওয়া হলো। মন ভেঙে গেল। ইন্টেলের বাইরে আমার জীবনের ১১ বছর কেটেছে। প্রথমে ইএমসিতে, এরপর ভিএমওয়্যারের সিইও হলাম। এই ১১ বছর ছিল আমার জীবনে শেখা, পরিণত হওয়া এবং নিজেকে গড়ে তোলার এক অনন্য সময়। বছর দেড়েক আগে আমাকে আবারও ইন্টেলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলো, সিইও হিসেবে— আমার স্বপ্নের জায়গা। অতএব আমি এখনও স্বপ্নের মধ্যে আছি।

মানুষের জীবনের সবকিছুই ধীরে ধীরে ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠছে। প্রযুক্তি কখনও ভালো বা মন্দ হয় না। প্রযুক্তিকে ভালো কাজে লাগানোর দায়িত্বটা আমাদের। যদি ভালো কাজে লাগাতে পারো, বিশ্বাস করো, এটি জাদুর মতো! আর এই ওহাইওতেই তৈরি হবে ভবিষ্যতের জাদু। এই ওহাইওতেই আমরা হাজার একরের বেশি জায়গা নিয়ে একটা কেন্দ্রীয় কার্যালয় গড়ে তুলছি, যেটা ডিজনিল্যান্ডের চেয়ে সাত গুণ বড়। আমরা চাই, এটা হবে পৃথিবীতে সেমিকন্ডাক্টরের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকেন্দ্র। ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেছে, এমন কিছু পরামর্শ আমি তোমাদের দেব। আমি একে বলি ক্যারিয়ার ম্যাপ। ম্যাপ, মানে এমএপি।

‘এম’ মানে মেন্টর (পরামর্শক)। একজন মেন্টর খোঁজো, তাঁর কথা শোনো। আমার জীবনে পাঁচজন বিশেষ মেন্টর আছেন। দুঃখজনকভাবে তাঁদের মধ্যে মাত্র একজন এখনও আমার সঙ্গে আছেন। প্রতি শুক্রবার সকালে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলি। ‘এ’ মানে অডিসিয়াস গোল, দুঃসাহসিক লক্ষ্য। ২৫-২৬ বছর বয়সে আমি কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমাদের দ্বিতীয় সন্তান পৃথিবীতে আসি আসি করছে। তবে নিশ্চিত ছিলাম না, ক্যারিয়ারের বাকি অংশটা নিয়ে আমি কী করব। সেই সময়ই জীবনের লক্ষ্য ঠিক করি।

পরের ২৫ বছর খাতায় আঁকিবুঁকি করার সময় আমি ইন্টেলের সিইওর আসনটাই এঁকেছি। এটাই প্রতিদিন আমাকে এগিয়ে নিয়েছে। এমন লক্ষ্য ঠিক করো, যেটা তোমার কল্পনার চেয়েও বড়। ‘পি’ মানে প্যাশন (Passion)। এমন কিছু খুঁজে বের করো, যেটা তুমি ভালো পারো, যা নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসো। সেই ১৮ বছর বয়সে ইন্টেলে যে রোমাঞ্চ নিয়ে পা রেখেছিলাম, ৪০ বছর পর সেই একই রোমাঞ্চ নিয়ে আমি অফিসে ঢুকি। যে রোমাঞ্চ তোমার জীবনকে গতিশীল করে, সেটা কখনও হারিয়ো না।  

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা