বিশেষ আয়োজন
আহমাদ শামীম
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩ ১৪:৫৮ পিএম
চা ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করা যায় না। কারণ পানির পরই যে চা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। ২১ মে বিশ্ব চা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে চা নিয়ে বিশেষ আয়োজন।
চায়ের গন্ধমাখা একটা জীবন আমাদের। সকালে চা, দুপুরে চা, বিকালে চা, এমনকি রাতের বেলা ঘুমানোর আগেও যেন এক কাপ চা চাই। চাপ্রেমী মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সংখ্যার হিসাবে তা হবে হয়তো দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।
আমাদের খাদ্য ও পানের সংস্কৃতিতে চায়ের আগমন হয়তো খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু এর জন্য আকুলতার কারণে মনে হয় চায়ের সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক যেন হাজার বছর পুরোনো।
একটা সময় রেল বা বাসস্টেশনে কান পাতলে শোনা যেত ফ্লাস্ক হাতে ভাসমান চা বিক্রেতাদের ‘এই চা গরম…চা গরম…’ আওয়াজ। এখন হয়তো তা কমেছে। কিন্তু গ্রাম-শহর-বন্দরের অলিগলি কোথায় না পাওয়া যায় চা।
সকালের নাশতায় চা-মুড়ি, দুপুরের খাবারও চাইলে সেরে নিতে পারেন চা-রুটি দিয়ে। শরীরে ক্লান্তি দূর করতে পান করুন চা। মন খারাপ কিংবা ভালো তখনও চাই চা। বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে, বারান্দায় চায়ের কাপ হাত বসে কল্পনায় চলে যান অচিন কোনো দেশে। ঘরে অতিথি এলে কিছু দিয়ে আপ্যায়ন করুন বা না করুন, চা তো লাগবেই ভাই! বলা হয় যে, যখন কোনো কাজই থাকবে না তোমার, তখন জীবন চালাতে একটা চায়ের দোকান দিয়ে দাও। চায়ের শক্তি এখানেই।
ভাবতে অবাক লাগে, সেই সুদূর অতীতে কবেকার কোন দেশে নাম না জানা একটি গাছের পাতা থেকে ঘটনাক্রমে আবিষ্কৃত হয়েছিল এই চা। সেই চা হাজার বছর পরে, হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে, লাখো মানুষের শ্রমে-ঘামে ভিজে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে যে চা বিনা পয়সায় খাওয়ানো হতো, সেই চা আজ হয়ে উঠেছে আমাদের খাদ্য সংস্কৃতির নিত্যদিনের বিষয়। ফ্যাশনেবল ড্রিংক হিসেবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজা-রানি ও অভিজাত শ্রেণি পান করতে, সেই চা-ও মিশে গেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনজীবনের সঙ্গে।
এক কাপ চা সামনে রেখে যখন এই লেখা লিখছি, তখন কামনা করতেই পারি, চায়ের সুবাসে মুখরিত হোক সবার জীবন। চায়ের স্বাদ যেন টিকে থাকে পৃথিবী ধ্বংসের দিনেও।