নাজিয়াম জিহান
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩ ১২:৫৮ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ১৩:০২ পিএম
অলংকরণ : নাফিস আব্দুল্লাহ জীয়ন চতুর্থ শ্রেণি, গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল, ঢাকা
স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটিতে এবার
অনেক দিন পর দাদা বাড়ি গিয়েছি। বাবা তার দোকান নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকেন, তাই
আমাদের পৌঁছে দিয়েই তিনি ঢাকা চলে গেছেন। দাদা বাড়ির উঠোনে এসেই আমি জোরে
জোরে দাদা-দাদিকে ডাকাডাকি শুরু করলাম। আমার গলার আওয়াজ শুনে প্রথমে দাদি
হাজির। এসেই আমার ছোট ভাইকে কোলে নিয়ে কান্না শুরু করে দিলেন। সঙ্গে আমাকেও
জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘কতদিন পর তোদের দেখলাম। দাদা-দাদিরে বুঝি দেখতে মন চায়
না? এইবার তোগরে রাইখা দিমু। সারা দিন আম-কাঁঠাল খাবি।’
আমাদের কথা শুনে
এবার উঠোনে এসে দাদা তো মা, ছোট ভাই আর আমাকে দেখেই অবাক! তারপর সবাইকে
বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলেন। আমাকে দাদা বললেন, ‘দাদুভাই, কাঁঠাল নামাইছি গাছ
থেকে। দাঁড়া এইখানে বস। আমি আনতেছি। এই বলে ভেতর থেকে একথালা কাঁঠাল নিয়ে
এলো।’
আমি তেমন কাঁঠাল পছন্দ করি না। কিন্তু তার আনন্দ দেখে এক কোষ
মুখে দিলাম। মুখে দিয়েই অবাক! এত মিষ্টি! এত মজার কাঁঠাল আমি কখনই খাই নাই।
তাই টপ টপ করে আরও দুই কোষ খেলাম। খাওয়া শেষে এবার দাদা আমাকে বাগানে নিয়ে
গেলেন। গিয়ে দেখি কাঁঠালগাছে শত শত কাঁঠাল ধরেছে। আমি খুশিতে তখনই বলি,
‘দাদা, আমাকে কিছু কাঁঠাল দিও। আমি ঢাকা গিয়ে বন্ধুদের খাওয়াব।’ দাদাভাই
বললেন, ‘এসব তো তোমার। তাই তোমার যত মন চায় নিয়ে যেও। তবে শর্ত একটাই, আমি
তোমার মাথায় তুলে দিব আর তুমি নিয়ে যাবে। এইটা শুনে আমি ফিক করে হেসে
দিলাম। আমি বললাম, জানো দাদাভাই, কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল? আর বিজ্ঞান মিস
ক্লাসে বলেছেন কাঁঠালে অনেক পুষ্টিগুণ আছে। উনি আরও বলেছেন কাঁঠালে প্রচুর
পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন আছে, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।’
দাদাভাই
আমার কথা শুনে খুব খুশি হলেন। হেসে বললেন, ‘আমি তো আর এত কিছু জানি না।
তবে আমার এই দাদুভাই আমাকে একটু শিখালে অনেক কিছু এক দিনেই শিখে যাব।’ আমরা
হাসাহাসি করছিলাম। তখন বাড়ি থেকে দাদির ডাক পড়ল। ‘কইরে আমার দাদুভাই,
কাঁঠালের পিঠা করছি। ঢাকায় তো এসব পাস না তোরা। খাইয়া যা।’ এরপর আরও গল্প
করতে করতে আমরা বাড়িতে চলে গেলাম। আসলে কাঁঠাল খেতে আমার কখনই ভালো লাগে
না। কিন্তু দাদা বাড়ির সেই ভালোবাসা মিশিয়ে থাকা কাঁঠালগুলো কেন এত ভালো
লেগেছে তা জানি না। ঢাকায় আসার সময় সঙ্গে দাদাভাই বেশ কয়েকটা কাঁঠাল
দিয়েছেন। বাবা বাসায় এলেই তার সঙ্গে কাঁঠালের গল্প শুরু করব।
চতুর্থ শ্রেণি
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা