শঙ্খনীল
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫৮ এএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১২:০৩ পিএম
অলংকরণ : আনিসা জামান স্পর্শ, ষষ্ঠ শ্রেণি, সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী
প্রত্যেকবার আমার জন্মদিনে আম্মু আমাকে মজার মজার উপহার দেয়। গতবার জন্মদিনে আমি অপেক্ষা করেছিলাম নিশ্চিয়ই আম্মু এবারও আমার জন্য দারুণ একটা উপহার আনবে। আমি বারবার ঘড়ি দেখছিলাম অফিস ছুটি হয়েছিল। তবু আম্মু আসছিল না। আমার খুব চিন্তা হচ্ছিল। তখন হঠাৎ দরজার বেল বাজল। আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখি আম্মু দাঁড়িয়ে আছে, আম্মুর হাতে একটি পাখির খাঁচা। আম্মু আমার হাতে খাঁচাটি দিয়ে বলল, এটা তোমার জন্মদিনের উপহার।
খাঁচার ভিতর ছিল একটি ময়নাপাখি। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, পাখি আবার জন্মদিনের উপহার হয় নাকি। আম্মু আমার মন খারাপ দেখে বলল, এটা একটা ময়নাপাখি, এই পাখি কথা বলতে পারে। আমি বললাম- সত্যি আম্মু? তা হলে কথা বলছে না কেন?
আম্মু বলল, এখনও কথা বলতে শেখেনি।
তুমি ওকে কথা বলা শেখাবে।
আমি বললাম কীভাবে?
আম্মু বলল, তুমি প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে ওকে গল্প শুনাবে। প্রতিদিন ওর সঙ্গে কথা বলবে। তখন দেখবে ও কথা শিখে গেছে।
তার পর, আমি প্রতিদিন ময়নাকে খাবার দেই, পানি দেই, আর ওকে গল্প শুনাই। অনেক দিন হয়ে গেলে কিন্তু ময়না কথা বলে না। আমি আম্মুকে বললাম, ময়না কথা বলে না কেন? আমি ওকে আর পালব না। তুমি ওকে ছেড়ে দাও।
আম্মু বলল, এত অধৈর্য হলে কি চলবে। তুমিও তো অনেক দিন পরে কথা শিখেছ। আমি কি তাতে অধৈর্য হয়েছি।
গত সপ্তাহে আমাদের মিডটার্ম পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তারপর থেকে শুরু হয়েছে রিহার্সেল। সামনে পহেলা বৈশাখ। আমাদের স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। আমার প্রতিদিন গান ও কবিতা আবৃত্তি প্র্যাকটিস করি। আমি সেদিন বাসায় ফিরে ময়নাকে গান শুনালাম। ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো, কবিতাও শুনালাম একটা। ময়না তখনও কিছু বলল না। আমি ভেবেছিলাম ও আর কোনোদিন কথা বলবে না। আমি নিজের ঘরে যেতে যেতে বললাম শুভ নববর্ষ। আর ঠিক তখনি ময়না বলল, শুভ নববর্ষ ।
আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আবার বললাম শুভ নববর্ষ। ময়না বারবার বলতেই থাকল- শুভ নববর্ষ শুভ নববর্ষ।
আমি আম্মুকে চিৎকার করে ডাকলাম। আম্মু এসে শুনল ময়না কথা বলছে। আমার কী যে ভালো লাগছিল!
অষ্টম শ্রেণি, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা