রূপসা
নুসরাত খন্দকার
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৩৪ পিএম
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৪৪ পিএম
মডেল: ফারিয়া ও মাফিন; ছবি: মনজু আলম
রোজার মাসে অন্য সময়ের তুলনায় জীবনযাপন থাকে আলাদা। পুরো মাসজুড়ে রোজা থাকায়, প্রভাব পড়ে শরীরে এবং ত্বকেও। অনেক সময় রোজায় নিয়মিত ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে ত্বক হয়ে যায় মলিন আর চুলে দেখা দেয় নানা সমস্যা। এসব সমস্যা থেকে মুক্তির পরামর্শ দিয়েছেন বিউটি এক্সপার্ট শারমিন কচি
ত্বকের সজীবতায়
বেশ গরমের মধ্যে রোজা। সারা দিন রোজা থাকায় শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। এ ছাড়া ইফতারে ভাজাপোড়া ও মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণের কারণে ত্বক ও চুল তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়। তাই এসব সমস্যা এড়াতে হতে হবে একটু সচেতন। রোজা রাখার ফলে দিনের বেলা পানির মিনারেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। পানির অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। অনেক সময় কালো ছোপ পড়ে। এ সমস্যা সমাধানে এক থেকে দুই ঘণ্টা পরপর মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া যেতে পারে। পানির মিনারেল ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারলেও বারবার মুখ ধোয়ার ফলে এটি ত্বকের বাইরে দিয়ে কাজ করে ত্বককে রাখে কোমল। এমনটাই বললেন শারমিন কচি। এ ছাড়া খাবার গ্রহণে হতে হবে সতর্ক। ইফতারের সময় প্রথমে পানি আর খেজুর খেয়ে তার পর অন্যান্য খাবার খেতে হবে। ভাজা আর মসলাযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া ভালো। খাবার তালিকায় রাখতে পারেন পর্যাপ্ত ফল। এ সময় অনেক মৌসুমি পানিজাতীয় ফল পাওয়া যায়। সেসব ফল খেলে একদিকে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হবে; অন্যদিকে ত্বকও থাকবে সজীব। ত্বক কোমল রাখতে দু-একদিন পরপর পানি না মিশিয়ে শুধু হাত দিয়ে মধু ত্বকে মেসেজ করতে পারেন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল হবে। ইফতারের আগে কাজের ফাঁকে বাটা মসুর ডাল ও দুধের সর একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। আবার ইফতারে তরমুজ খাওয়ার পর এর সাদা অংশটুকু ত্বকে লাগাতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকবে। সারা দিনের বাইরের কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে মুখে টমেটো পেস্ট লাগিয়ে নিতে পারেন। ১০ মিনিট পর ম্যাসেজ করে স্বাভাবিক পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব চলে যাবে। একইভাবে শসার রসও ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় ত্বককে সজীব রাখতে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে হবে।
ঠোঁট থাক কোমল
এ সময় ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে দুধের সঙ্গে জলপাই তেল বা নারিকেল তেল মিশিয়ে তুলার বলের সাহায্যে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট মালিশ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ঠোঁট শুষ্ক হবে না, চামড়াও উঠবে না। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন বিট রুট। দুধ ও নারিকেল তেলের সঙ্গে বিটের রস ভালো করে মিশিয়ে তুলার বলে নিয়ে ১০-১৫ মিনিট ধরে ঠোঁটে মালিশ করুন প্রতিদিন বা এক দিন পরপর।
চুলের যত্নে
রোজার দিনে পানির অভাবে চুলে দেখা দেয় শুষ্কতা। এই সমস্যা এড়াতে এক দিন বা দুই দিন পরপর চুলে তেল গরম করে মালিশ করতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন সামান্য পেঁয়াজের রস ও তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। দুই ঘণ্টা রেখে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। কন্ডিশনার হিসেবে চায়ের লিকার ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া আধা কাপ টক দই, দুটি ডিম ও তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এর পর ভালো করে চুল ব্রাশ করে দুই ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিতে হবে। সপ্তাহে একদিন এই প্যাকটি নিলে চুল হয়ে উঠবে সিল্কি ও উজ্জ্বল। চুলের আগা ফেটে গেলে চায়ের লিকার ও লেবুর রস দিয়ে সেই অংশ মালিশ করুন ১৫-২০ মিনিট। মালিশ করার পরিবর্তে আঁচড়াতেও পারেন। সপ্তাহে ২ দিন এ প্যাক ব্যবহার করুন, যত দিন না ফাটা ভাব দূর হয়। দুটি কলা ও আধা কাপ টক দই ভালো করে ব্লেন্ড করেও চুলে লাগাতে পারেন। এপ্লাই করে চুল ভালো করে আঁচড়ে এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে। সপ্তাহে একদিন এই প্রোটিন ট্রিটমেন্টগুলো নিলে চুল হবে সিল্কি আর স্মুথ।