জান্নাতে নাঈম
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৪৬ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ২০:১৪ পিএম
বিস্ময়কর এক প্রাণীর নাম ডলফিন। বিশাল আকারের এই প্রাণীকে আমরা অনেকেই মাছ ভেবে ভুল করি। আসলে এরা কিন্তু মাছ নয়। বাদুড় আকাশে উড়লেও যেমন পাখি নয়, তেমনি ডলফিন জলে বাস করলেও মাছ নয়। বাদুড়ের মতো ডলফিনও স্তন্যপায়ী। আমাদের সঙ্গে এদের অনেকখানি মিল আছে। মাঝে মাঝে এমনসব বুদ্ধির পরিচয় দেয় এই প্রাণী, তাতে আশ্চর্য হতে হয়।
জেনে নিই এদের সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য—
পৃথিবীতে প্রায় ৪০ ধরনের ডলফিন দেখা যায়। জলের প্রাণীদের রক্ত শীতল হয়। ডলফিনের রক্ত কিন্তু উষ্ণ। এরা উষ্ণ তাপমাত্রা পছন্দ করে। তাই তারা জলের উপরিভাগে সাঁতার কাটতে পছন্দ করে। ডলফিনদের সমুদ্র কিংবা বড় নদীর তীরেই বেশি দেখা যায়। সব ডলফিনই সমুদ্রে বাস করে না। তারা বিভিন্ন তাপমাত্রা ও রুচি অনুযায়ী সমুদ্র কিংবা নদী বেছে নেয়। পাঁচ প্রজাতির ডলফিন বড় নদীতে বাস করে। ডলফিনদের আমরা শান্তিপ্রিয় বলেই জানি। কিন্তু এরা সর্বভূক। মানুষের জন্য হয়তো তারা কোনো বড় ঝুঁকি বহন করে না, তবে তারা সমুদ্রের অন্যতম শিকারি প্রজাতি। এদের খাবার তারা মাছ, স্কুইড ও নানা ধরনের সামুদ্রিক শামুক ও ঝিনুকসহ মাছ। দেখে হয়তো কিছু বোঝা যায় না। তবে ২৫০ পাউন্ডের একটি ডলফিন দিনে প্রায় ৩০ পাউন্ডের সমওজনের মাছ খেয়ে থাকে। এরপর শিকারে অভ্যস্ত হলে আলাদা হয়ে যায়। কিলার হোয়েল প্রজাতির ডলফিন সামুদ্রিক সিল কিংবা পেঙ্গুইন শিকারের সময় প্রায় তিন মিটার উঁচুতে লাফ দিতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মানুষের মতো ডলফিনও একে অপরকে নাম ধরে ডাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ’বটলমুখো’ ডলফিনরা মা তার সন্তানকে, এক বন্ধু অন্য বন্ধুকে নাম ধরে ডাকে। এমনকি এ প্রাণী ক্ষোভে-দুঃখে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। এরা সমুদ্রে মানুষের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। সমুদ্রে পথহারা নাবিককে কিনারা খুঁজতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি অথই সাগরে জাহাজডুবিতে হাঙরের মতো হিংস্র প্রাণীর হাত থেকেও মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে ডলফিন। ডুবন্ত নাবিকের চারপাশে ঘুরে তৈরি করে ডলফিন বর্ম। তাই যেখানে ডলফিনের দেখা মেলে, সেখানে অনেকটাই নিশ্চিন্ত সমুদ্রচারীরা।