ইতা-রিতার নতুন জামা

এক দেশে ছিল একটি গ্রাম। সেই গ্রামে থাকতো ইতা আর রিতা। ওরা ছিল খুব গরিব। ওদের মা ছিল একজন তাঁতী। কাপড় বেচে টাকা পেত। ইতা আর রিতার খুব শখ, মায়ের বানানো জামা পরার। কিন্তু তাদের মা তাদেরকে কিছুতেই জামা বানিয়ে দিত না। একদিন সকালে ইতা মাকে বলল- মা আমার জামাটা পুরাতন হয়ে গেছে, আমাকে নতুন জামা বানিয়ে দাও। তার মা রেগে বললেন, তোকে জামা বানিয়ে দেবো কেনো রে? একদিকে খাবার পাস না, আরেকদিকে জামা চাস!

ইতা মনের দুঃখে সেখান থেকে চলে যায়।

সেইদিন রাতে ইতা এবং রিতা দুইজনে মায়ের ঘর থেকে জামা চুরি করার জন্য মায়ের ঘরে যায়। তারা জামা খুঁজে পাচ্ছে না। রিতা আলমারির উপর তাকায়। রিতা ইতাকে বলল, ঐ দেখ মায়ের হাতে তৈরি জামা।

তারপর তারা দুজন দেখতে পেল আলমারির উপরে জামা। 

ইতা বলল, আলমারির উপরে জামা। আমাদেরকে এটা পারার জন্য টুল লাগবে। তারপর ইতা টুলের উপর দাঁড়ায়। রিতা ধরে ছিলো টুলটা। কিছুক্ষণ পরে টুলটা নড়াচড়া করে। তাদের মায়ের ঘুম ভেঙে যায়। মা বলল, এতো আওয়াজ কেনো? মা এসে দেখতে পেলো যে, ইতা এবং রিতা। তাদের মা ভীষণ রাগ করলেন এবং বললেন,

তোরা দুইজন মিলে আমার মাথা খেয়েছিস! তোরা আমার জামার পিছু ছাড়বি না? তোরা দুজন এক্ষুণি ঘুমিয়ে পড়। 

ইতা রিতা কিছু না বলো ঘুমিয়ে পরে। 

সকাল হয়ে যায়। ইতা এবং রিতা পুকুর পাড়ে বসে ভাবছিলো কি করে মা কে রাজি করানো যায়। বেশ কিছুদিন কেটে যায়। ঈদের দিন আসতে চলেছে। রিতা ইতাকে বলে,

ইতা তুই কি জানিস কিছুদিন পর ঈদ আসতে চলেছে।

ইতা বলল তাই নাকি! তাহলে তো খুব মজা হবে। মা আমাদেন নতুন জামা বানিয়ে দেবে। রিতা বলল, তাহলে চল মায়ের কাছে জামা চাই। তারপর তারা দুজন মিলে মায়ের কাছে যায়।

তারা দুজন মাকে বলল, সামনে তো ঈদের দিন, এবার তো জামা বানিয়ে দাও। 

তাদের মা বললেন, না, ঈদে বেশি করে জামা বিক্রি হবে। তাই এ সময়টায় জামা বানিয়ে দেওয়া যাবে না। যখন আমরা বেশি টাকা পাব তখন জামা বানিয়ে দেব। 

এই কথা শোনার পর তারা ভাবল আমাদের এমন কিছু করতে হবে যাতে আমরা টাকা রোজগার করতে পারি। কীভাবে টাকা রোজগার করা যায়। সেই বুদ্ধি বের করল।। রিতা ইতাকে বলে, ইতা একটা বুদ্ধি পেয়েছি। ইতা বলল, কি বুদ্ধি পেয়েছ বল।

রিতা ইতাকে বলে, আমরা মাকে সাহায্য করলে মা খুশি হয়ে আমাদেরকে জামা উপহার দেবে। তারপর তারা দুজন মিলে মায়ের কাছে যায়। মাকে বলে, মা আমরা কি তোমাকে সাহায্য করতে পারি? 

মা খুশি হয়ে বললেন, তোমরা আমাকে সাহায্য করতে পারো। তারা খুব খুশি হল। দুজন মাকে সাহায্য করলো। তারপর যখন সব কাপড় বিক্রি হয়ে গেলো তখন তারা দুজন বলল আমরা তো তোমাকে সাহায্য করলাম তুমি আমাদেরকে উপহার হিসেবে জামা উপহার দাও। তাদের মা বললেন অবশ্যই বানিয়ে দেবো দুইটা সুন্দর ফুলওয়ালা জামা। তোমাদের তো আমি জামা বানিয়ে দেবোই কিন্ত একটু সময় লাগবে। তোমরা একটু অপেক্ষা করো। তারপর অল্প দিন কেটে যায়। তাদের জামা তৈরি হয়ে যায়। ঈদের দিন জামা পায়। জামা পেয়ে তারা খুব খুশি হয়। 

ঈদের দিন তারা অনেক ইদি পায়। তাদের নানা-নানী, ফুফা-ফুপী তাদের অনেক ঈদি দেয়। তাদের মা ঈদি দেখে খুশি হয়ে তাদের আরো অনেক জামা বানিয়ে দেয়। 

দ্বিতীয় শ্রেণি, সামিট স্কুল

কাজিহাটা, রাজশাহী