× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমিরাতের ইফতার ঐতিহ্য

কামরুল হাসান জনি

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১৩:১২ পিএম

আমিরাতের ইফতার ঐতিহ্য

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসলামিক ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ একটি দেশ। আয়তনের তুলনায় দেশটি বাংলাদেশ থেকে ছোট। অথচ দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মুসলিমবিশ্বের একটি প্রভাবশালী দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে নাগরিকদের জীবনমানের পরিবর্তন হলেও নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চায় এখনও অনড় স্থানীয় অ্যারাবিয়ানরা। দেশটির স্থানীয় বাসিন্দাদের চেয়ে অভিবাসী নাগরিকের সংখ্যা বেশি। তিন বছর আগের এক হিসাব বলছে, স্থানীয় ও অভিবাসী মিলে আমিরাতে বসবাস করেন প্রায় ৯৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ২শটিরও বেশি জাতীয়তার নাগরিক রয়েছে। প্রবাসীদের মধ্যে ভারতীয়রা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এরপর পাকিস্তানি, বাংলাদেশিসহ এশীয়, ইউরোপীয় ও আফ্রিকানরা জীবিকার সন্ধানে ঠাঁই গেড়েছেন দেশটিতে। বহু ভাষাভাষী মানুষের বসবাসের কারণে বৈচিত্র্য এসেছে জীবনধারায়। এই বৈচিত্র্যের ছোঁয়া লেগেছে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায়। কিন্তু পবিত্র রমজান মাসের ইফতারের আয়োজন যেন সেই চিরচেনা ঐতিহ্য ধারণ করে আছে আরব সংস্কৃতির।

পরিবার-পরিজন নিয়ে সম্মিলিতভাবে রোজা খোলা কিংবা ইফতার গ্রহণ করার রেওয়াজ বহু বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। ইফতারিতে আছে খেজুরের বিশেষত্ব। কোরআনে বর্ণিত এই ফল মুখে নিয়ে রোজা খোলেন অধিকাংশ রোজাদার। পানি ও খেজুরের পর দৃষ্টি যায় অন্য খাবারের দিকে। লোভনীয় হরেকরকম খাবারের আয়োজন থাকে অধিকাংশ পরিবারে। বাসাবাড়িতেই তৈরি করা হয় কয়েক পদের বিরিয়ানি। ইফতার আয়োজনে অ্যারাবিয়ানদের অন্যতম পছন্দের তালিকায় রয়েছে ‘শরবত এডাস’ নামের লাল মসুরের ডালের মিশ্রণে তৈরি এক প্রকার স্যুপ। গমের গুঁড়া ও গরুর মাংসে তৈরি ‘কিব্বেহ’ নামক সিরিয়ান জনপ্রিয় খাবার থাকে অনেকের পছন্দের তালিকা। ভাজা রুটির দিয়ে তৈরি ‘ফতুশ’ নামের সালাদের জুড়ি নেই এই সময়। টমেটো, পুদিনা পাতা ও পেঁয়াজের সঙ্গে মাংসের মিশ্রণে তৈরি ‘তাব্বুলেহ’ এবং ইফতারিতে থাকে গম বা চালের গুঁড়া আর বাঁধাকপির আবরণে তৈরি করা লেবানিজ খাবার ‘ম্যালফুফ’ এবং মচমচে ভাজা সমোসা। এ সময় প্রতিটি ঘরে ঘরেই স্থান পায় ‘হারিস’ নামক আমিরাতের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। যা সেদ্ধ গম এবং ধীরে-সিদ্ধ মাংস দিয়ে তৈরি করা হয়। উপসাগর অঞ্চলজুড়ে এই খাবারটি থাকে প্রত্যেকের ইফতারের টেবিলে। পানীয় হিসেবে তাজা ফলের শরবত যেমন টেবিলে শোভা পায়, তেমনি তৃপ্তি মেটায় বিভিন্ন রকমের লাচ্ছি। এসব লাচ্ছি আবার স্থানীয়ভাবে কৃষিজাত প্রক্রিয়ায় তৈরি করা। এ ছাড়া সময়ের সঙ্গে ইফতারের মেন্যুতে কালক্রমে স্থানীয় আরবি খাবারের পাশাপাশি লেবানিজ, ফরাসি ও ইউরোপিয়ান খাবারও প্রবেশে করেছে। 

দেশটিতে থাকা এশিয়ান নাগরিকরা নিজ দেশীয় খাবারের স্বাদ খোঁজে ইফতার আয়োজনে। কেউ কেউ হোটেল, রেস্তোরাঁ থেকে ছোলা, মুড়ি, বেগুনি আর জিলাপি কিনে নেন। তবে করোনার আগেও স্থানীয় আরবিরা অভিবাসীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করতেন। এটিও আরব সংস্কৃতির একটি বৃহৎ ঐতিহ্য। সাধারণত এ জন্য মসজিদ প্রাঙ্গণে বা বাসাবাড়ির উন্মুক্ত জায়গায় তাঁবু টানা হতো। যেখানে শত শত প্রবাসীকে সম্মিলিতভাবে ইফতারে অংশ নিতে দেখা যেত। করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিলে এই আয়োজনের পরিধি সীমিত হয়ে আসে। কিছু কিছু মসজিদে এখন এই ইফতার আয়োজন থাকলেও চলতি বছর রমজানে দুবাইয়ের বাসিন্দাদের জন্য এই আয়োজনের ‘অনুমতি’ নিয়ম চালু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বলা হয়, এমন ইফতারের আয়োজন করতে গেলে দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিস ডিপার্টমেন্টে (আইএসিএডি) আগেই আবেদন করতে হবে। যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, খাবারের নিরাপত্তা ও নির্ধারিত স্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করতে হবে। অনুমতিবিহীন ইফতার বিতরণ করলে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার দিরহাম পর্যন্ত জরিমানার আইন রাখা হয়েছে। আছে ৩০ দিন থেকে এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান। প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছর মাত্র ২২টি ইফতারের তাঁবু তৈরির অনুমতি দিয়েছে। এসব অস্থায়ী তাঁবুতে ইফতারে অংশ নিচ্ছেন বহু প্রবাসী।


প্রতিবেদক, সংযুক্ত আরব আমিরাত 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা