কামরুল হাসান
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৫:০৩ পিএম
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি
শিক্ষার্থীদের যুক্তি, মেধা ও মননের চর্চার এক অনবদ্য উপায় বিতর্ক। বিতর্কের মাধ্যমে একদিকে যেমন নিজেকে প্রকাশ করতে শেখা যায়, অন্যদিকে বিতার্কিকের জ্ঞান ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটায় বিতর্ক। বাংলাদেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোয় বিতর্কচর্চার জন্য সংগঠন আছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে সুসংগঠিত একটি সংগঠন। সংগঠনটির নাম- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১২ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এই সংগঠনটি। তবে সেই অনুযায়ী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ঝিমিয়ে পড়া সংগঠনকে ২০১৯ সালে বেগবান করার সিদ্ধান্ত নেয় একদল তরুণ বিতার্কিক। বর্তমানে ডিবেটিং সোসাইটি তাদের তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
এই স্বল্প সময়েই ডিবেটিং সোসাইটি তাদের অর্জনের খাতা যথেষ্ট ভারী করে তুলেছে। ২০১৯ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিক দলকে হারিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দমোহন কলেজসহ অন্যান্য বিতার্কিক দলকে হারিয়েছে এই সংগঠনের বিতার্কিকরা। ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়ের ১১টি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তারা। দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়াতে ভূমিকা রাখছে সংগঠনটি।
ডিবেটিং সোসাইটি প্রতিবছর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্কবিষয়ক কর্মশালা, আন্তঃবিভাগসহ অনেক বিতর্কের আয়োজন করে থাকে। এর পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবস, রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্ভাবনা ও সংকট উপলক্ষ করে বারোয়ারী বিতর্ক, রম্য বিতর্ক, ফিচার লিখন প্রতিযোগিতা, আরও নানা কার্যক্রম আয়োজন করে থাকে ক্লাবটি। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত প্রীতি বিতর্কের আয়োজন করা হয়। প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সাপ্তাহিক অনুশীলন আয়োজিত হয়। কখনও বঙ্গবন্ধু বা নজরুল ভাস্কর্যে, কখনও জয়ধ্বনি মঞ্চে, আবার কখনও-বা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে এসব আয়োজন করে থাকে ক্লাবটি।
ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অনিক বলেন, সেমিস্টার সিস্টেমে অনেক একাডেমিক চাপ সত্ত্বেও আমাদের বিতার্কিকরা পরিশ্রমী হওয়ায় আমরা উন্নতি করছি।
নবীন ব্যাচগুলোতে আমরা বিতার্কিক পাচ্ছি। তাদের হাত ধরে ডিবেটিং সোসাইটি একদিন দেশসেরা বিতার্কিক তৈরি করবে এবং জাতীয় পর্যায়ে ট্রফি নিয়ে আসবে সেই প্রত্যাশা অবশ্যই করি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্যÑ যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে মেধা, মনন ও মূল্যবোধ চর্চা অব্যাহত রাখা। এ ছাড়া ইংরেজি বিতর্ক চর্চাও আমরা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা বিতার্কিক হতে চান, ডিবেটিং সোসাইটি তাদের সর্বদা স্বাগতম জানায়। অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা কথা বলতে দ্বিধাবোধ করত, তারা এখন তুখোড় বিতার্কিক। আমরা সোসাইটিতে ছোট বড় সবাইকে এক কাতারেই মাপি, সবাইকে বিতার্কিক হিসেবে দেখি। প্রতি মঙ্গল ও বুধবার আমাদের সেশন হয় নবীনদের স্বাগতম সেখানে।’