× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাঁদপুর থেকে এমআইটি

সিফাত রাব্বানী

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:২৫ পিএম

উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস উল হক সিফাত স্নাতকে এমআইটিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন

উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস উল হক সিফাত স্নাতকে এমআইটিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন

 বিদেশে পড়াশোনা করতে কে না চায়? আর সেই স্বপ্নপূরণ যদি হয় এমআইটির মতো বিশ্বসেরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে, তাহলে তো আনন্দের সীমা থাকে না। বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন বলেছিলেন, পরিশ্রম কখনও নিষ্ফল হয় না। চাঁদপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস উল হক সিফাত স্নাতকে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তির সুযোগ পেয়ে সেই কথা আরও একবার প্রমাণ করলেন।

চাঁদপুরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস সিফাতের। কিশোর বয়স থেকেই কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার আগ্রহ নিয়ে বেড়ে ওঠা সিফাতের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত হয়েছে হাসান আলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, মাধ্যমিক হাসান আলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে, দ্বিতীয় বর্ষে। 

২০২১ ও ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল এই দুই পদকই মূলত তাকে এগিয়ে দিয়েছে এমআইটিতে সুযোগ লাভে। কীভাবে স্বপ্ন দেখা হলো এমআইটিতে সুযোগ লাভের? জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ‘যেহেতু অলিম্পিয়াড কমিউনিটির সঙ্গে আমি অনেকদিন ধরেই সংযুক্ত আছি এবং এই কমিউনিটি থেকে অনেকেই আগে এমআইটিতে পড়েছেন। তাই তাদের দেখেই মূলত স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমার এই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে।’

এমআইটিতে আবেদন করা থেকে ভর্তি প্রক্রিয়াসংক্রান্ত সব বিষয় ইন্টারনেটে ঢু মারলেই পাওয়া যায়। তবে অনেক খুঁটিনাটি বিষয়ে সিফাতকে সহায়তা করেছেন সিনিয়র ভাইরা, যারা পূর্বে আবেদন করে এমআইটিতে টিকে গিয়েছিলেন। আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা কেমন ছিল- জিজ্ঞাসা করায় জবাব এলো কিছুটা লাজুকভাবেই। সিফাত যে আসলে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তা বলা যাবে না। কেননা এমআইটি-তে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে সাধারণত মাত্র ১ জন বা ২ জন আবেদনকারীর সুযোগ হয়। এমন সুযোগ লাভে অনেক সময় নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় শিক্ষার্থীদের, তবে তাকে তেমন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়নি। প্রতিটি ধাপ সতর্কতার সঙ্গেই পার করেছেন তিনি।

ঠিক কতদিনে তিনি সফল হলেন? এতে জানা গেল, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে আবেদন করেছিলেন। স্যাট, রিকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করা, প্রবন্ধ (রচনা) লিখা ইত্যাদি মিলিয়ে মোটামুটি ২ মাসের মতো সময় দিতে হয়েছিল আবেদনের পেছনে। চূড়ান্ত সফলতার পেছনে তার একটাই ধারণা, তাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডের পদক। কেননা তার চেনাজানা যারাই এমআইটি-তে পড়েছেন, তাদের মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় হচ্ছে তারা সবাই কোনো না কোনো অলিম্পিয়াডে পদক জিতেছিলেন। তাই পদক জয়ের প্রতি তার ঝোঁক ছিল বেশ। এই পুরো প্রক্রিয়ায় তাকে সিনিয়র ভাইয়া, যারা পূর্বে আবেদন করেছেন- তাদের থেকে সাহায্য পেয়েছেন। এদের মধ্যে তাসমীম রেজা (এমআইটি)এবং লাজিম (অক্সফোর্ড) নামের দুজনের কথা আলাদা করে বলতে একদমই ভুল করলেন না।

সিফাত জানালেন, যখন কনফার্মেশন লেটার পেলেন ই-মেইলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আনন্দের বন্যা বইছিল। এ যেন সোনার হরিণ পেয়ে গেলেন। রাতে বাসার সবাই তখন ঘুমে ছিলেন, তিনি সবাইকে জাগিয়ে তার এই সাফল্যের কথা জানিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গেই।

যারা এমআইটিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে কোনো পরামর্শ আছে কি না জানতে চাইলে সোজাসাপটা উত্তরে বললেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন অলিম্পিয়াড, গবেষণা, লেখালিখি ইত্যাদি খুব সাহায্য করে। তাই এসব দিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঝুঁকে থাকতে হবে। সার্বিকভাবে আইসিটিতে দক্ষ হওয়ার বিকল্প নেই। অবশ্যই ইংরেজিতে ভালো হতে হবে। কেননা যোগাযোগের ভাষাই হচ্ছে এটি। এর পাশাপাশি দরকার হবে যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানো।’ উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরানো নাফিস বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষে কি করবেন তা এখনও ঠিক করেননি, তবে যখন বুঝতে শুরু করেন তখন থেকেই তার ইচ্ছা দেশে চলে এসে কোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় মনোনিবেশ করা এবং তার জ্ঞানের পরিধির মধ্যে দেশকে কিছু উপহার দেওয়া। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা