× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পিরোজপুরের জেলেপল্লী ঘুরে এসে

আবীর হাসান

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১২:২৫ পিএম

মাছ ধরতে যাওয়ার আগে জাল ঠিক করে নেন জেলেরা। পিরোজপুরের জেলেপল্লী থেকে তোলা

মাছ ধরতে যাওয়ার আগে জাল ঠিক করে নেন জেলেরা। পিরোজপুরের জেলেপল্লী থেকে তোলা

নদীমাতৃক বাংলাদেশে মাছের অভাব ছিল না কোনোকালেই। মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করতেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখো জেলে। কিন্তু সময়ের পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এই চিত্র অনেকটাই বদলে গিয়েছে। নদীগুলো মারা যাচ্ছে, আগের মতো মাছও মেলে না নদীতে। উপরন্তু মাছ ধরায় বছরের বিভিন্ন সময়ে থাকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। ফলে মাছ ধরা পেশায় নিয়োজিত জেলেদের দিন কাটে কষ্টে।

এমনই অবস্থা পিরোজপুরের সদর উপজেলার ৭নং শংকরপাশা ইউনিয়নের জেলেপল্লির জেলেদের। তাদের জীবন, জীবিকা এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। জানা যায় ভালো নেই জেলেরা। 

এই ইউনিয়নের মৃত তাসেন আলী শিকদারের পুত্র মো. আউয়াল শিকদার। পিতৃপুরুষের এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন শৈশবকালেই। বর্তমানে তার বয়স ৭৪ বছর। জেলেজীবনের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানানÑ ‘বয়স তো অনেক হয়ে গেছে। এখন কাজ তো দূরে থাক, চলতেই কষ্ট হয়। পাশেই কঁচা নদী, এই নদী-সাগরে মাছ ধরে জীবন চলে আমাদের। এখন সাগরে মাছ ধরতে যেতে ভয় হয়। ভেন্ডি, বাধা, সরবরসহ নানা জালের সমারোহে চলে আমাদের জীবন। দুর্যোগ যখন শুরু হয় তখন এলাকায় একটু কম আসলেও সাগরে পড়তে হয় মহাবিপদে। 

আউয়াল শিকদার আরও জানান, ‘পিরোজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ বাদুড়া গ্রামের জেলেপল্লীটি একটি নিচু এলাকা। যার কারণে পানি বাড়লে ঘরবাড়ি ডুবে যায়। মাছ ধরতে যেতে হয় জোয়ারের পানির ওপর নির্ভর করে। নদীতে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। এ দিয়ে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। জালে মাছ উঠলে চুলায় হাঁড়ি চড়ে. নতুবা আধপেটে দিন কাটে। সাগরে ট্রলার পাঠাইতে ২২ থেকে ২৮ জন লোক লাগে। সেই ট্রলার সাগরে যাওয়ার পর ফিরবে কি না, তার কোন নিশ্চয়তা নাই। সন্তান-পরিবার নিয়ে দুই মুঠো খেয়ে ভালো থাকার জন্য আমাদের এই প্রতিদিনের যুদ্ধ। তার মধ্যে সরকার বছরের অর্ধেক সময় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখে। এই সময়গুলোয় সরকার যে সহযোগিতা দেয়, তাতে আমাদের কিছুই হয় না। বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে যে দাদন নেওয়া থাকে, তাতে মাছ ধরে বিক্রি করার পরে আর কোনো টাকাই থাকে না।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘১০ জনের সংসার খেটেখুটে চলতে হয়। নদীর পাড়ে থাকলেও মাছের খুব অভাব। কোনোদিন সংসার চলে, কোনোদিন সংসার খরচও হয় না। সরকারিভাবে যে চাল দেয়, তা আবার সবাইকে দেয় না। আমাদের ঘরে ৪ জনের ১ জনকে দিছে। আবার অনেক ঘরে ৩ জনকে দিছে।’

পুরুষদের কাজে সহযোগিতা করে থাকেন বাড়ির নারী ও শিশুরাও


এ বিষয়ে নিয়ে জেলে ইদ্রিস আকনের স্ত্রী তাসলিমা বেগম বললেন, পাই শুধু জেলে কার্ডের চাল। একটা সামান্য কম্বল চাইছিলাম, দেয় না। ভোট দেওয়ার সময় চেয়ারম্যানÑ মেম্বর চেনে শুধু। সামনে আবার অনেক দিনের অবরোধ। এই সময়ে আমরা যদি কোনো সহায়তা না পাই, তা হলে না খেয়ে দিন পার করতে হবে।’

কথা হয় মিজানুর রহমান নামের আরেকজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক সময় নদীতে প্রচুর মাছ ছিল। অসংখ্য মানুষ জীবিকা নির্বাহ করত এ পেশায়। যেভাবে অবরোধ চলছে এবং মাছ কমে যাচ্ছে, তাতে অনেকে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন। অবরোধ চলাকালে সরকার যে সহায়তা দেয়, সেটা সামান্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবিÑ যাতে আমরা বেশি করে পুনর্বাসন পাইতে পারি। 

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল বারি জানান, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে জেলেদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সহযোগিতা করে থাকি। বিভিন্ন অবরোধে আমরা জেলেদের কাছে খাদ্য সহযোগিতা পৌঁছাই। মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ৬৫ দিনের অবরোধ দেওয়া হয়। পিরোজপুরে ২৪ হাজার ৯৬ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। যাদের প্রথম কিস্তিতে ১৪ হাজার ৭৫০ পরিবারকে ভিজিএফের চাল দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা