সাহিদা আক্তার
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৫ পিএম
নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। সময় বের করে নিজের জন্য যেমন ফুল কিনবেন, তেমনি একদিন রান্না করে নিজেকে ট্রিট দিতে ভুলবেন না। ছোটবেলার ঘরজুড়ে ছড়িয়ে থাকে অজস্র স্মৃতি। শীতের রোদে পিঠ দিয়ে বসে অংক করা, গল্পের বই পড়া, রান্নাবাটি, রঙ-পেন্সিলে প্রথম দেয়ালে আঁচড় সাধের পুতুলটাকে পেনের কালি দিয়ে কনে সাজানো আরও কত কিছু। বাড়ির প্রতিটি কোণজুড়েই ঘিরে থাকে গল্পেরা। তবে একটা সময় পর কিন্তু সবারই একটু নিজের জন্য স্পেসের প্রয়োজন হয়।
নিজেকে সময় দিন
বাড়িতে থাকলে যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ মা-বাবাই করে দেন, তেমনি হাতের সামনে খাবার তুলে ধরা, বেরোনোর আগে ব্যাগ গুছিয়ে দেওয়া এসব সুযোগসুবিধার বাইরেও কোথাও গিয়ে নিজের জন্য একটু সময় দরকার হয়। হতেই পারে আপনার একদিন ইচ্ছে করল রুটিন ভাঙা কোনো জীবন। আবার ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটু নিজের মতো করে কোথাও গিয়ে সময় কাটানো... এসব বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে থেকে সব সময় সম্ভব হয় না। কারণ তখন মাথায় থাকে অনেক রকম চিন্তা। কিন্তু নিজেকে ঠিক করে চিনতে, ভেতরের আমিটাকে আরও বেশি করে জানতেই নিজেকে ভালোবাসুন। একটু নিজের মতো একলা থাকুন। আনন্দ খুঁজে নিন নিজের মতো করেই।
তুলনায় যাবেন না
অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন? আজ থেকে আর করবেন না। প্রতিটি মানুষই কিন্তু নিজের মতো করে আলাদা। আর তাই প্রথমেই নিজের শর্তে বাঁচতে শিখুন। কারণ যখনই আপনি নিজেকে ভালোবাসতে শিখবেন, তখনই আপনার মধ্যে বাড়বে আত্মবিশ্বাস। আর নিজেকে ভালোবাসলে তবেই কিন্তু আপনি নিজের জীবন উপভোগ করতে পারবেন। সব সময় সুন্দর বাড়ি, গাড়ি, দেখতে সুন্দর হওয়া মানেই কিন্তু জীবন সুন্দর নয়। তুলনার ঊর্ধ্বে উঠলেই আনন্দে বাঁচতে শিখবেন।
জীবনের মূল্য বুঝতে শিখুন
জীবনের মূল্য কী দিয়ে বিচারক করেন? পরিবার? বন্ধু? সাফল্য? তাহলে বোধহয় আপনার নিজেকে ভালোবাসার কোনো অভ্যেস নেই। পরিবার, মানুষ, চাকরি- এসব কিছু নিয়েই আপনাকে চলতে হবে, কিন্তু এর মধ্যেও নিজেকে ভালোবাসা খুবই জরুরি। যখনই আপনি নিজেকে ভালোবাসবেন, তখন কিন্তু নিদের জন্যেও সময় পাবেন। মনে রাখবেন, কখনই কাউকে কিছু দিয়ে আপনি খুশি করতে পারবেন না। আর তাই অতিরিক্ত কিছু দিয়ে মন জয়ের চেষ্টা না করাই ভালো।
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে
নিজেকে ভালোবাসলে তবেই নিজের মধ্যে বাড়বে আত্মবিশ্বাস। আর আত্মবিশ্বাস বাড়লে তবেই নিজের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারবেন।
চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি...
জীবন মানেই চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে তবেই না লড়াই করে বাঁচা যায়। চার দেয়ালের মধ্যেই জীবন বন্দি নয়। বরং চিনতে শিখুন বিশ্বকে। একা যখনই থাকবেন, তখন অনেক কিছুই নিজেকে একা হাতে সামলাতে হবে। ধরা যাক কোনো দিন বাড়িতে বাজার করেননি। কিন্তু যদি একদিন বাজার করেন, ইলেকট্রিক বিল নিজের দায়িত্বে জমা করেন বা বাড়ির অন্যান্য কাজ দায়িত্ব নিয়ে সামলানÑ তাহলে কিন্তু নিজেও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। জীবনের ছোট ছোট আনন্দ নিজেই খুঁজে নিতে শিখুন।
ভাঙুক অচলায়তন
হঠাৎ কোনো পরিস্থিতিতে খুব মন খারাপ বিষাদ আপনাকে ঘিরে ধরে পারে। অবসাদগ্রস্ত মনে স্থির হয়ে পড়তে পারে সময়। তখন আশপাশের সবকিছুই অসহ্য মনে হয়। জীবনের এসব অস্থিরতাকে একপাশে রেখে অবসাদকে ঝেড়ে ফেলতে সংকোচের অচলায়তন ভেঙে ফেলার সময় তখনই। কোথাও কনসার্ট হচ্ছে ঘুরে আসুন কিংবা কাছেই কোথাও চলছে চিত্রপ্রদর্শনী, ঘুরে আসুন। সিনেপ্লেক্সে হয়তো পছন্দের কোনো মুভি চলছে, একটু ঢুঁ মেরে আসুন। দেখবেন জীবনের হয়তো নতুন কোনো স্বাদ খুঁজে পাবেন।