× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কালো মানুষের আলো

সুজি কিং টেইলর।। অনেক প্রথমের একজন

তানিয়া আক্তার

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৩ ১২:২০ পিএম

সুজি কিং টেইলর।। অনেক প্রথমের একজন

আঠারশ শতকে আমেরিকায় যখন দাসপ্রথা চলমান, পাশাপাশি দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ; সেই সময় কৃষ্ণাঙ্গ এক নারী যুদ্ধাহতদের সেবায় নিয়োজিত করেন নিজেকে। আমেরিকান সিভিল ওয়্যারের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নার্স হিসেবে খ্যাত মানুষটির নাম সুজি কিং টেইলর। আরও একটি বিষয়েও তিনি ছিলেন প্রথম। সেটা হলো আফ্রো-আমেরিকান তথা কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে সর্বপ্রথম আত্মজীবনী তিনিই লিখেছিলেন।

অনেক প্রথমের একজন টেইলরের জন্ম জর্জিয়ার লিবার্টি কাউন্টির এক দাস বাবা-মায়ের ঘরে ১৮৪৮ সালের ৬ আগস্ট। মাত্র সাত বছর বয়সে দাদির সঙ্গে জর্জিয়ারই অন্য প্রান্তে বসবাসের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে যাওয়ার পর দাদি তাকে শিক্ষিত করে তোলার বাসনায় কৃষ্ণাঙ্গদের গোপন শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠান। কারণ তখন কৃষ্ণাঙ্গ এবং দাসদের স্কুলে যাওয়ার নিয়ম ছিল না আমেরিকায়। দাদির কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে সেখানকারই আরেকটি স্কুলে যাতায়াত শুরু করেন টেইলর। এভাবে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে টেইলর লিখতে ও পড়তে শিখে যায়। 
এরই মধ্যে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। টেইলর বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসেন। সেখান থেকে পালিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার সময় ঘটনাক্রমে একদিন ইউনিয়ন আর্মির এক কমান্ডারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। লোকটি টেইলরের লেখাপড়ার বিষয়ে জানতে পেরে জর্জিয়ার সেন্ট সিমন আইল্যান্ডে স্থানীয় কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের জন্য একটি স্কুল খোলার পরিকল্পনা করেন এবং টেইলরকে স্কুল চালানোর দায়িত্ব দেন। মাত্র তেরো বছর বয়সে সুজি কিং টেইলর শিশুদের জন্য প্রথম আফ্রো-আমেরিকান একটি স্বাধীন স্কুল খোলেন এবং জর্জিয়ার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এই স্কুল থেকে ৪০ জনেরও বেশি শিশুকে তিনি শিক্ষিত করে তোলেন এবং রাতের বেলা বয়স্কদের জন্য শুরু করেন নাইট স্কুলেরও। 
কিন্তু আমেরিকার গৃহযুদ্ধ বিস্তৃতি লাভ করায় টেইলর পরে কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের নিয়ে গড়ে ওঠা ফার্স্ট সাউথ ক্যারোলিনা ভলান্টিয়ার ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টে আহত সৈনিকদের সেবায় তথা নার্স হিসেবে যোগ দেন। যার মাধ্যমে তার নাম প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নার্স হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়। 
গৃহযুদ্ধ শেষ হলে টেইলর আবার জর্জিয়ায় ফিরে আসেন। ইতোমধ্যে এডওয়ার্ড কিং নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ সৈনিককে বিয়ে করেন। 
জর্জিয়ায় এসে তিনি দাসত্ব থেকে মুক্ত স্বাধীন কালো শিশুদের লেখাপড়ার জন্য স্কুল খোলেন। এভাবে নানা জায়গায় বেশ কয়েকটি স্কুল পরিচালনা শুরু করেন টেইলর। এক মেয়ের জন্মের পর টেইলরের স্বামীর মৃত্যু ঘটে। এদিকে শিক্ষকতা করে চলতে সমস্যা হচ্ছিল বিধায় জর্জিয়ায় এক ধনাঢ্য পরিবারে পরিচারিকার কাজ নেন। ওই পরিবারের মাধ্যমে তিনি বোস্টনে চলে আসেন। এখানে এসে নানা ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তবুও সমাজসেবামূলক কাজ বন্ধ রাখেননি তিনি। ওমেন রিলিফ কর্পস নামের একটি সংগঠনে যোগ দেন। পাশাপাশি কৃষ্ণাঙ্গদের জন্যও করতে থাকেন বিভিন্ন কাজ।
সুজি কিং টেইলর নানা ঘটনায় ঋদ্ধ তার জীবনের গল্প লিখে গিয়েছেন। ১৯০২ সালে প্রকাশিত এই আত্মজীবনীর নাম ‘রেমিনিসেন্স অব মাই লাইফ ইন ক্যাম্প উইথ দ্য থার্টি থার্ড ইউনাইটেড স্টেটস কালারড ট্রুপস, লেট ফার্স্ট এসসি ভলান্টিয়ারস’। যা কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে প্রথম আত্মজীবনী হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯১২ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে কিং টেইলর মৃত্যুবরণ করেন। 
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা