সম্পর্ক
ওয়াসি তানজীম
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৯ পিএম
শিশুর সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন সঠিক যত্ন নেওয়া। মা-বাবার সান্নিধ্য ও যত্নেই বেড়ে ওঠে একটি শিশু। আজকাল বেশিরভাগ মা-বাবা চাকরি করেন। ফলে তাদের সারা দিন কেটে যায় কর্মব্যস্ততায়। দেওয়া হয় না সন্তানকে পর্যাপ্ত সময়। এতে শিশুমনে কেমন প্রভাব পড়ে জানেন কি?
আগে নানি-দাদিদের কাছে ঠাকুরমার ঝুলি শুনে শুনে বড় হতো শিশুরা। কালের বিবর্তনে এখন একান্নবর্তী পরিবার খুঁজে পাওয়া দায়। ফলে পরিবারের অন্য সদস্যদের সান্নিধ্য পায় না। সময় দিতে না পেরে কিংবা কাজের ব্যস্ততায় সন্তানকে ব্যস্ত রাখতে তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় প্রযুক্তি। তা ছাড়া মা-বাবা বাড়িতে না থাকায় ভিডিও গেম খেলে কিংবা কার্টুন দেখে সময় কাটে অনেকের। এতে কী ধরনের পরিফলন ঘটছে বা শিশুটি আসলে কী শিখছে, কী ভাবছে তা কি একবারও ভেবে দেখেছেন?
একা বেড়ে ওঠা শিশুরা অনেক হীনম্মন্যতায় ভোগে। কখনও খারাপ সঙ্গ পেয়ে লিপ্ত হয় খারাপ কাজে। এ ছাড়া নানা আচরণগত সমস্যাও দেখা যায়। তাই যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, সন্তানের জন্য রাখুন পর্যাপ্ত সময়। সকালে দিনের শুরুটা করতে পারেন আপনার সন্তানের সঙ্গে নাশতা করে। টেবিলে সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। সারা দিনে কী করবে, সে বিষয়ে দিতে পারেন পরামর্শ। সন্তান স্কুল থেকে ঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছেছে কি না, খাবার খেয়েছে কি না, সেই খোঁজখবর রাখুন। আবার বাসায় ফিরে সন্তানের জন্য বরাদ্দ রাখুন কিছু সময়। সারা দিন কী কী করল, স্কুলে নতুন মজার কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, সে আলাপচারিতা সেরে নিন। এ ছাড়া সন্তানের সঙ্গে খেলা করুন। এতে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে আর সন্তান থাকবে হাসিখুশি।
সন্তানরা কিন্তু অনুকরণপ্রিয়। সে তা-ই অনুকরণ করবে, যা আপনি করবেন। তাই আপনার সন্তানের সামনে চেষ্টা করুন প্রযুক্তি বেশি ব্যবহার না করতে। তার মধ্যে ভালো কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন। সৃজনশীল কাজে উৎসাহী করতে পারেন। বই পড়া, ছবি আঁকা, ক্রিয়েটিভ কাজ করুন সন্তানের সঙ্গে। ঘরের কাজে ছোট ছোট দায়িত্ব নিতে শেখান ছোট থাকতেই। ফলে একসঙ্গে সময় কাটবে, আবার সে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানবে। সন্তানের জীবনে কী ঘটছে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। তবে যেন সে বুঝতে না পারে, তার ওপর নজরদারি করছেন। কোনটা ভুল, আর কোনটা ঠিক তা প্রথম থেকেই শিশুকে বন্ধুসুলভভাবে শেখাতে হবে।