× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অন্য খবর

৮০ বছর পর পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটায়

মোহাম্মদ শাহ আলম

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:২৯ এএম

আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০৯ পিএম

পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটার সামনে উচ্ছ্বাসিত কমলিকা বসু

পূর্বপুরুষের বাস্তুভিটার সামনে উচ্ছ্বাসিত কমলিকা বসু

কমলিকার চোখে জল। গড়িয়ে পড়েনি। তবে চোখ দুটো ভিজে স্ফীত হয়ে হয়ে আছে তা বুঝতে পারছি। নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে বাড়িটির নামফলকের দিকে। তাতে লেখা ‘দেবোত্তর সম্পত্তি’। বলছিলাম যার কথা, তিনি কমলিকা বসু। ঢাকার একসময়ের বনেদি বসু পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি তিনি। পেশায় একজন স্থপতি। নিজের নামটি লেখেন কমলিকা বোস। সুন্দর করে কথা বলেন। মানুষকে আপন করে নেন সহজে।

কমলিকা, মুম্বাইভিত্তিক স্থাপত্যবিষয়ক সংস্থা ‘হেরিটেজ সিনারজিস’-এর প্রধান। পুরাতত্ত্ব নিয়ে কাজ করেন। এ বিষয়ে বই লিখেছেন বেশ কয়েকটি। এর একটির নাম না বললেই নয় – সিকিং দ্য লস্ট লেয়ারস।

ঢাকায় এসেছিলেন সপ্তাহ দুই আগে। স্থাপত্যবিষয়ক একটি গবেষণার কাজে ভারত, ফ্রান্স ও বাংলাদেশের একদল ছাত্রছাত্রী নিয়ে পুরান ঢাকায় কাজ করেছেন। এ কাজ করতে করতে তিনি যে তার পূর্বপুরুষের ভিটার খোঁজ পাবেন, তা কখনই ভাবেননি। তবে তিনি জানতেন এ ঢাকায়ই তার শেকড়। ওর বাবা, ঠাকুরদা কেউ ঢাকায় এসেছেন বলে জানা নেই। ওর এক জ্যাঠা আসার আগে জানিয়েছিলেন ঢাকায় তাদের বাড়ির কথা।

ভদ্রলোকের নাম সমীর পাল। বয়স ৯২। সম্ভবত ১৯৪২ সালে তিনি শেষ ঢাকায় এসেছিলেন। এই জ্যাঠাদের বাড়ি ছিল পল্টন এলাকায়। মামার বাড়ি পুরান ঢাকার নদীর কাছাকাছি। তবে কমলিকার কাছে যততুকু তথ্য ছিল, তা হলো তাদের বাড়ি ছিল রমনায় অথবা গেন্ডারিয়ায়। গবেষণার কাজে একদিন পুরো দল নিয়ে ঢুঁ মারেন বিউটি বোর্ডিংয়ে। ওদিকটায় হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ে ‘হরিশচন্দ্র বসু স্ট্রিট’ নামের একটি রাস্তা। চোখ তো আটকে যাওয়ারই কথা! কারণ হরিশচন্দ্র বসু নামটি তিনি শুনেছেন। তার পূর্বপুরুষ। ‘ইন্ডিয়ান বায়োগ্রাফিক্যাল ডিকশনারি ১৯১৫’-তে এ নামটি তিনি পেয়েছেন একটি এন্ট্রিতে – করুণা দাস বোস, এমএ, এমএল, রায়বাহাদুর, ১৯০৬, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, পিতা স্বর্গীয় হরিশচন্দ্র বোস, জন্ম ১৮৪৭, ঠিকানা বাংলাবাজার, ঢাকা এবং মির্জাপুর, ক্যালকাটা।

কমলিকা বসুদের বাড়ির ভেতরের একাংশ


‘হরিশচন্দ্র বসু স্ট্রিট’ ধরে এগোতেই তিনি পেয়ে যান পূর্বপুরুষের নিবাস। হরিশচন্দ্র বসু স্ট্রিটে বাড়িটির আয়তন ২ একর। সেখানেই বাস করতেন হরিশচন্দ্র বসু। বংশপরম্পরায় এ বসু পরিবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পৃথিবীর নানান প্রান্তে। বসু পরিবারের কন্যা কমলিকার বসবাস এখন মুম্বাইতে। কমলিকার এক মামাতো বোন সোনালী খান আমাদের ইন্ডিয়ান অফিসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সেই সূত্রে আমার সঙ্গে পরিচয় কমলিকার। পরিবারসহ সময় কাটিয়েছি। সোনারগাঁ ঘুরে বেড়িয়েছি। ঢাকার বিরিয়ানি কমলিকার মন কেড়েছে।

কমলিকা বলছিলেন, একদমই ভাবিনি বাড়ির খোঁজ পাব। বিশাল জায়গা নিয়ে বাড়িটি। অবহেলায় পড়ে আছে। ছাপাখানা আছে কয়েকটা। গুদামখানা আছে। আর আছে একটি মন্দির। শ্রীশ্রীলক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ঠাকুর মন্দির। বাড়িতে ঝোলানো একটি ব্যানার বলছে, শ্রীশ্রী হরিদাশ পাগলের বার্ষিক উৎসব হয় এখানে। শুনেছি এ বাড়িতে দুর্গাপুজো আর কালিপুজো হতো বিশাল আয়োজন করে। বসু পরিবারের জমিদারি ছিল বিক্রমপুরে। হরিশচন্দ্র বসুর পরিবারের একজন স্থায়ী হয়েছিল বিক্রমপুরে। বেশিরভাগই চলে গিয়েছিল কলকাতায়। আগেই বলেছি, কমলিকার বাবার এক পিসাতো ভাই শেষ এসেছিলেন ১৯৪২ সালে মাত্র ১১-১২ বছর বয়সে। তারপর এলেন কমলিকা। জীবন বড়ই বিচিত্র।


লেখক : ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা