সাগ্নিক সরকার
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:১১ পিএম
অলংকরণটি করেছে ঘুঙুর বন্ধু মোহর। সে নওগাঁ’র কবি শাহ আলম চৌধুরী চারুপাঠের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রতিবছরই আমরা দূরে কোথাও বেড়াতে যাই। সব সময় পারিবারিক ভ্রমণ করে থাকি। মাঝে মাঝে অন্য আত্মীয়-স্বজনও থাকেন। সাধারণত আমরা এটা ডিসেম্বর মাসে করি। গত ডিসেম্বরে আমরা কুয়াকাটায় গিয়েছিলাম। সবচেয়ে ভালোভাবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার স্থান হিসেবে কুয়াকাটা খুব বিখ্যাত। ঢাকা থেকে লঞ্চে করে পটুয়াখালীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলাম। লঞ্চ ছেড়েছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। পটুয়াখালী বন্দরে পৌঁছলাম সকাল সাড়ে ৫টায়। সফরসঙ্গী ছিলেন আমার মামা এবং মামী। মামা আঁকাআঁকি করেন বলে ছোটবেলা থেকেই তাকে ‘আঁকুমামা’ বলে ডাকি। তিনি দেখতেও আঁকুমামার মতোই। লঞ্চঘাট থেকে নেমে সার্কিট হাউসে গিয়ে বিশ্রাম নিই। কিছুক্ষণ পর সরকারি গণগ্রন্থাগারে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক ভালো ভালো পুরোনো বই ছিল। এরপর দুপুর ২টার দিকে কুয়াকাটার একটা রিসোর্টে পৌঁছলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আমরা গেলাম সমুদ্রসৈকতে। আমি, বাবা ও তাতাই সমুদ্রে সাঁতার কাটার জন্য নেমেছিলাম। তার আগে আমাদের অনেকগুলো ছবি তোলা হলো। এর আগে কয়েকবার সমুদ্র দেখলেও এই প্রথম সমুদ্রে সাঁতার কাটলাম। সমুদ্রে সাঁতার কাটার পর আমরা একটি সুন্দর রেস্টুরেন্টে খেতে গেলাম। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা রিসোর্টে ফিরে গেলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সূর্যাস্ত দেখার আশায় আবার সমুদ্রসৈকতে গেলাম। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস! গিয়ে দেখি সূর্য ইতোমধ্যে ডুবে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত সৈকতে ছিলাম। পরের দিন আমি সকাল ৯টায় ঘুম থেকে উঠলাম। ওঠার পরেই আমার পেটব্যথা করছিল। বোধ হয় আগের দিন বিচিত্র খাবার খাওয়ার কারণে এই অবস্থা হয়েছিল। সকালের নাশতা করার পর আমরা সবাই মিলে সুন্দর রিসোর্টটা ঘুরে দেখেছিলাম। আমি অধিকাংশ সময়েই ছবি তোলার বিরুদ্ধে থাকি। এসেছি তো ভ্রমণ করার জন্য, ছবি তোলার জন্য না। কিন্তু বাবার দৃষ্টিভঙ্গি আবার উল্টো। ভ্রমণ নয়, ভ্রমণের স্মৃতিরক্ষাতেই তার সার্থকতা। তাই বাবার কথা শুনে অনেকগুলো ছবি তুলতে হলো। এরপর আমরা গেলাম মিশ্রীপাড়ায়। সেখানে ছিল রাখাইনদের বৌদ্ধমন্দির। আমরা সবাই সেখানে গেলাম। মন্দিরটিতে গৌতম বুদ্ধের একটা মূর্তি ছিল। খুব ভালো লেগেছে সেখানে ঘুরে। বিকাল সাড়ে ৪টায় আমরা সূর্যাস্ত দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। আগের দিন সূর্যাস্ত দেখতে পারিনি বলে এবার অনেক আগে বের হয়ে পড়েছি। তাই সমুদ্রসৈকতে গিয়ে আমাদের অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এই ফাঁকে আমি ঘোড়ার পিঠে চড়েছিলাম। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পরে নেমে পড়েছিলাম। প্রায় ৪৫ মিনিট পর সূযার্স্ত দেখার সুযোগ হলো। আমি ভেবেছিলাম, সূর্য একবারে সমুদ্রের মধ্যে ডুবে যাবে। কিন্তু দেখলাম যে, সমুদ্রের একটু ওপরেই সূর্য মেঘের মধ্যে মিলিয়ে গিয়েছে। তবুও এটা দেখতে অনেক মনোমুগ্ধকর ছিল। শুনলাম গ্রীষ্মকালে নাকি আরও সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়। কুয়াকাটার এই ভ্রমণটি আমার খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে মামা-মামী থাকায় ভ্রমণটি অনেক উপভোগ্য হয়েছে। কুয়াকাটায় সূর্যাস্তের সৌন্দর্য অতুলনীয়। সপ্তম শ্রেণি, ময়মনসিংহ জিলা স্কুল