মো. জিয়াউর রহমান
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫৭ পিএম
বাউল, ভাটিয়ালি, জারি, সারি, ঘাটুগান, কিসসা-পালাগানসহ লোকসংস্কৃতির সমৃদ্ধ হাওরবেষ্টিত জনপদ নেত্রকোণা জেলা। এ জেলার বালিশ মিষ্টির সুখ্যাতি রয়েছে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্য দেশেও। এখানকার ১০টি উপজেলাতেই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন লোকাচার ও লোকসংস্কৃতি। হস্ত ও কুটিরশিল্পেও পিছিয়ে নেই এ অঞ্চলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী। কৃষিপ্রধান এ জেলার বাসিন্দারা নিজেদের প্রয়োজনেই হাতে তৈরি বাঁশ-বেতের হরেক রকম সামগ্রী, নকশিকাঁথা, হাতে তৈরি জামা-কাপড়, জামা ও শাড়িতে পুতি বসানোসহ বিভিন্ন কারুকাজ এবং নানা প্রকার হস্ত ও কুটিরশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তবে বাণিজ্যিকভাবে এখানে হস্ত ও কুটিরশিল্পের তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি।
লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ উপজেলা কেন্দুয়া। এ উপজেলাটিতে এ বছরই প্রথমবারের মতো কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের আয়োজনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী হস্ত ও কুটিরশিল্প মেলা। কেন্দুয়া পৌর শহরের সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে গত ২১ জানুয়ারি থেকে এ মেলা শুরু হয়। বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। সমাগম ঘটছে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ শত শত মানুষের। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় ২৫টি স্টল রয়েছে। এসব স্টলে রয়েছে বাহারি সব হস্ত ও কুটিরশিল্পের পণ্য। এ ছাড়া শিশুদের আকর্ষণ করার জন্য বসানো হয়েছে ঝুলন্ত নৌকা, দোলনা, খেলনা ট্রেন, মাইক্রোবাস ও ভূতের বাড়ি। বড়দের জন্য রয়েছে গেম অব ডেঞ্জার কার এবং মোটরসাইকেল প্রদর্শনী। রয়েছে দেশীয় পোশাকের দোকান। দেশীয় খাবারের সমাহার নিয়ে বসেছে কয়েকটি স্টলও। ভোজনপ্রিয় লোকজন ভিড় করছেন এসব খাবারের দোকানে। তবে মেলায় শিশু ও নারীদের সমাগম সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
মেলায় ছোট শিশুসন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের আকলিমা আক্তার বলেন, মেলায় দেখার মতো বা কেনার মতো তেমন কিছু নেই। তবুও যা আছে তার মধ্য থেকে কিছু জিনিসপত্র কিনেছি। কিন্তু মেলায় বাইরের চেয়ে দাম অনেক বেশি রাখা হচ্ছে।
দাম বেশি রাখার কথা অস্বীকার করে কিশোরগঞ্জ থেকে মেলায় শিশুদের নানারকম খেলনা ও গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসা ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, মেলাটি এখনও আশানুরূপ জমেনি। তবে বিক্রি মোটামুটি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মেলার আয়োজক কেন্দুয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতির উর্বরভূমি কেন্দুয়া উপজেলা। আমাদের আদি লোকসংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যেই মূলত এ মেলার আয়োজন। মেলায় ৩২টি স্টলের মধ্যে বর্তমানে ২৫টি স্টল বসেছে। অন্য স্টলগুলোও অচিরেই বসবে। এসব স্টলে স্থানীয় হস্ত ও কুটিরশিল্পের বিভিন্ন পণ্য
তোলার জন্য চেষ্টা করছি আমরা।