হুমায়রা রহমান
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৩ পিএম
বন্যায় ডুবে যাচ্ছে লীলাবালিপুর। সকালে শুরু হলো বৃষ্টি। মিষ্টি বৃষ্টি দেখছে। সুখ এখনও ঘুম থেকে ওঠেনি। কয়েকটা কাক বৃষ্টিতে ভিজছে। কাকগুলো দেখে মিষ্টিরও শখ হলো বৃষ্টিতে ভিজবে। সে সুখকে ডাকল। সুখ, এই সুখ। চল আমরা বৃষ্টিতে ভিজি। সুখও বলল, চল। এরপর তারা সবুজ দুটো ডানা মেলে দিল ওড়ার জন্য। মিষ্টি একটু ওপরে ওপরে, সুখ একটু নিচে নিচে। মিষ্টি সুখকে বলল, সুখ, তুই এত নিচে কেন? ওপরে ওড়।
সুখ বলল, তোর সঙ্গে পেরে উঠছি নারে মিশু। মিষ্টি হেসে ফেলল। এরপর তারা নদী পার হচ্ছিল। তারা দেখল নদীতে অনেক মাছ লাফাচ্ছে। ছোটবড় নানান মাছ। সুখ-মিষ্টির জিবে জল এলো। সুখ মিষ্টির কানে মুখ লাগিয়ে বলল, মিষ্টি, দেখ কত মাছ! আয় এগুলো শিকার করি।
মিষ্টির মুখে হাসি ফুটে উঠল। তারা দুজনে একসঙ্গে নদীর ধারে বসে মাছ শিকার করতে লাগল। সুখ কয়েকটি খেতেও লাগল। এমন সময় তাদের মনে হলো, তারা ডুবে যাচ্ছে। হঠাৎই প্রবল স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গেল মিষ্টিকে। সুখ চিৎকার করে উঠল- মিষ্টি-ই-ই-ই!
মিষ্টিও চিৎকার করল-সু-উ-উ-খ!
সুখ ওড়া শুরু করল। তারপর মিষ্টিকে খুঁজতে লাগল। সুখ দেখল মিষ্টির অন্ধ দাদিটাও পানির স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। কিছু জাম পাড়ার জন্য সে পাশের কলিদের বাগানে গিয়েছিল।
দাদিকে সুখ একটা শুকনো জায়গায় দাঁড় করাল। অন্ধ দাদিটা খুবই খুশি হলো। সুখ বলল, দাদি, আমি আসছি। মিষ্টি ভেসে গেছে।
দাদি বলল, যাও।
সুখ ডানা মেলে উড়ে চলল। এদিকে মিষ্টি সুখ সুখ করে অস্থির। সুখ দেখল মিষ্টি ঝরনার দিকে ভেসে যাচ্ছে। তার সারা শরীর ভেজা। সুখ বলল, মিষ্টি, অ্যাই মিষ্টি।
মিষ্টি সুখ বলে চেঁচিয়ে উঠল।
সুখের মাথা কাজ করছে না। সে কোথা থেকে একটা ডাল জোগাড় করল। বলল, মিষ্টি, ডালখানা ধর।
মিষ্টি ডালটা ধরল। সুখ তাকে টেনে তুলল। মিষ্টির ডানা দুটো ভিজে একসা। উড়তে পারবে না। মিষ্টি বলল, সুখ, আমার ডানা তো ভিজে একদম...!
সুখ বলল, আমার পিঠে ওঠ।
তোর পিঠে? বলল মিষ্টি।
চুপচাপ পিঠে ওঠ। সুখ বলল।
সুখ ও মিষ্টি একটা পাথরের ওপর উঠল।
বৃষ্টি কমে এসেছে। সুখ ওড়ার জন্য পাখা মেলে দিল।
সপ্তম শ্রেণি, নাটোর কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল