প্রচ্ছদ
তৌহিদুল ইসলাম তুষার
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:১৭ পিএম
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫৯ পিএম
মডেল: মৌরিতা জুঁই, ছবি: ফারহান ফয়সাল
শীত মানে নিমন্ত্রণ। সঙ্গে উষ্ণতার খোঁজ তো আছেই। শীতের এই সময়টা নিজেকে নতুনরূপে সাজিয়ে তুলতে চান যে কেউ। আর তাই আউটফিট চাই ভিন্নতা। পোশাকে প্রিন্ট তো থাকতেই পারে। তবে তা কলমকারি বা ব্লক প্রিন্ট নয়। ডিজিটাল প্রিন্টে সাজিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। সময়ের ট্রেন্ড যেন হয়ে উঠেছে এই ডিজিটাল প্রিন্ট।
ডিজিটাল প্রিন্টের পোশাকে সাজিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। এক মুহূর্তে আপনি হয়ে উঠবেন আধুনিক। পোশাকে যেন যোগ করবে ভিন্ন মাত্রা। শার্ট, গাউন, ট্রাউজার, জ্যাকেট বা হোক শাড়ি। ডিজিটাল প্রিন্ট আপনাকে দেবে জৌলুস। ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে তাই বেশ জায়গা করে নিয়েছে ডিজিটাল প্রিন্ট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে প্রিন্টের ধরন ও মাধ্যম। তারই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রিন্টের উপস্থিতি এখন পোশাকেও। হ্যান্ড ব্লক বা হ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টের জায়গায় দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে ডিজিটাল প্রিন্ট। একটা ফটো ইমেজকে আমরা কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে কাপড়ে প্রিন্ট দিতে পারছি সরাসরি সমকালীন টেকনোলজি প্রয়োগে। ম্যানমেড ফাইবারের কাপড়, সিল্ক, কটন, লিলেন, ভিসকসসহ যেকোনো ধরনের কাপড়ে প্রিন্ট করতে পারছি এখন।
অনেকেই বলতে পারেন এটা তো নতুন কিছু নয়। হ্যা, প্রিন্ট সব যুগে পোশাকশিল্পের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে তার রয়েছে নানা রূপ ও প্যাটার্ন। কোথাও জ্যামিতিক বৃত্ত, উপবৃত্ত বা ত্রিভুজ। আবার কোথাও তা-ই হয়ে ওঠে ফুল-পাতা। প্রিন্টের পোশাকের এসবই মূল ডিজাইন। মেশিনে প্রিন্ট হওয়ায় পোশাক তৈরিতে খরচও কিছুটা কম হচ্ছে। দামও তাই হচ্ছে পকেট ফ্রেন্ডলি। ফ্যাশনপ্রেমীরা গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুন এসব ডিজাইনে মনোযোগ দিচ্ছে। তাই ডিজিটাল প্রিন্ট নিয়ে এখন বেশ কাজ করছে দেশের নামিদামি পোশাক ব্যান্ড শপগুলোও। তরুণ প্রজন্মের ঝোঁক এখন বেশি ফিউশন ধাঁচের পোশাকে। এ কারণেই তাদের কাছে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ডিজিটাল প্রিন্টের পোশাক। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আমদানি করা কাপড়গুলোতে অ্যাজটেক সংস্কৃতির বিভিন্ন মোটিফ ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল প্রিন্টের আদলে।
এমব্রয়ডারির অনেকটা জায়গা এখন ডিজিটাল প্রিন্টের দখলে। তার অন্যতম কারণ যে কোনো ডিজাইন নিখুঁতভাবে করা সম্ভব। এতদিন যেসব প্রিন্ট হয়ে এসেছে তাতে মূলত দুই বা তিন ধরনের রঙ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু ডিজিটাল প্রিন্টে যত ধরনের রঙ চান সব দিতে পারবেন। দুই বা তিন রঙে প্রিন্টের একঘেয়ে ব্যাপারটা এখানে কাটিয়ে ওঠা যায় নিমেষে। আর এই প্রিন্টে ডিজাইনের সবটাই যেহেতু কম্পিটিউটারে হয়, তাই প্রিন্টের ফিনিশ খুব ফটোজেনিক হয়। প্রিন্টের ডেপথ বেশি থাকায়, পোশাক উজ্জ্বল লাগে। টি-শার্ট থেকে শুরু করে স্যুট সবকিছুতেই মিলছে এখন প্রিন্টের বাহার। পোশাকে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে ফ্লোরাল প্রিন্ট। এ ছাড়া জ্যামিতিক মোটিফও আছে। নতুন নতুন ডিজাইন এসব পোশাকে ফ্যাশনে যুক্ত করছে অন্য মাত্রা।
প্রায় সব ধরনের ফেব্রিকে ব্যবহার হচ্ছে ডিজিটাল প্রিন্ট। বর্তমান সময়ে সিল্ক এবং জর্জেট কাপড়ে বেশি দেখা মিলছে। এ ছাড়াও কটন, লাইক্রা এবং পলিয়েস্টারেও দারুণভাবে ফুটে উঠছে ডিজিটাল প্রিন্ট। ফেব্রিকের পাশাপাশি লেদার জ্যাকেটও এই প্রিন্টের দখলে। শুধু পোশাকেই নয়, ব্যাগ বা টুপি, জুতাতেও এখন ডিজিটাল প্রিন্টের চল। ডিজিটাল প্রিন্টের ফ্যাশনে পিছিয়ে নেই ছেলেরা। শার্ট, টি-শার্ট এবং জ্যাকেটে ডিজিটাল প্রিন্ট এখন অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে। শীত বা গ্রীষ্ম যেকোনো ঋতুতে, যেকোনো অনুষ্ঠানে বেশ মানানসই ডিজিটাল প্রিন্ট। কোট বা প্রিন্স কোটে ডিজিটাল প্রিন্ট পছন্দ করছেন অনেকে। বিভিন্ন পার্টিতে তাই এই প্রিন্ট হয়ে উঠেছে অনেকের কাছে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। গর্জাস লুক চাইলে আগে যেখানে জরির কাজ ভাবা হতো। এখন তাতেও এসেছে ডিজিটাল প্রিন্ট। লেহেঙ্গাতেও মিলছে ডিজিটালের ছোঁয়া।
ডিজিটাল প্রিন্ট নিজেই এত উজ্জ্বল যে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে না পরাই ভালো। এই প্রিন্টের সঙ্গে পালাজো, কুর্তি বা ব্লাউজটা সলিড কালারের নিতে পারেন। ডিজিটাল প্রিন্টের সঙ্গে স্ট্রাইপস বা চেক টিম আপ করতে পারেন। ফ্লোরাল প্রিন্টের বদলে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন ডিজিটালের ছোঁয়ায়।