× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কায়াকিং

রোমাঞ্চের খোঁজে

গোলাম কিবরিয়া

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:০২ পিএম

আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫০ পিএম

রোমাঞ্চের খোঁজে

কায়াকিং আমাদের দেশে শুরু হওয়া নতুন এক অ্যাডভেঞ্চারের নাম। দেশের বিভিন্ন স্থানে কায়াকিং পয়েন্ট চালু হয়েছে। 

একবার ভাবুন তো মাথার ওপর নীল আকাশ, নিচে স্বচ্ছ নীলাভ জলরাশি, তার তীরঘেঁষে গজিয়ে ওঠা জনপদ! অথবা ধরুন চারদিকে সবুজের চাদরে মোড়ানো অথই জলে নিজেই চালাচ্ছেন নৌকা। এমন অ্যাডভেঞ্চার নিশ্চয়ই কেউ মিস করতে চাইবেন না। আর সেই রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে আপনাকে করতে হবে কায়াকিং। কায়াকিং আমাদের দেশে শুরু হওয়া নতুন এক অ্যাডভেঞ্চারের নাম। ‘কায়াক’ শব্দটি এ দেশে প্রচলিত নয়। ফাইবার, কাঠ ও পাটের তন্তু দিয়ে তৈরি ১০ ফুট লম্বা সরু নৌকাকে কায়াক বলা হয়। চালাতে হয় বৈঠা দিয়ে। কায়াক দেখতে ছোট্ট একটি ডিঙি নৌকার মতো। সর্বোচ্চ তিনজন বসতে পারে এটিতে। নৌকাটি চালাতে বেগ পেতে হয় না একেবারেই। কেবল নৌকা ডানে-বাঁয়ে নেওয়ার কৌশল রপ্ত করতে পারলেই চলতে শুরু করবে সামনে। কানাডায় প্রথম শুরু হয় কায়াক চালনা। বিদেশে সমুদ্র, নদীতে কায়াক চালনার প্রতিযোগিতা হয়। আমাদের দেশের নৌকা বাইচের মতো। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনোদনের জন্য এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে কায়াকিং অ্যাডভেঞ্চার চালু হয়েছে। আজ এমনই কিছু কায়াকিং পয়েন্টের তথ্য তুলে ধরা হলো।


সাভারে কায়াকিং
রাজধানীর পাশেই পর্যটকদের একটু আনন্দ ও প্রশান্তি দিতে রয়েছে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা। প্রতিদিন সকাল ও বিকালে কায়াকিং করতে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের ইউসুফনগর আবাসন সিটিতে চলে আসেন শত শত পর্যটক। এক একটি কায়াক বোটে কায়াকিংয়ে জনপ্রতি ১৫ মিনিটের জন্য ৫০, ৩০ মিনিটের জন্য ৮০, ৬০ মিনিটের জন্য ১৫০ টাকা নেওয়া হয়। বিলের পানিতে স্রোত না থাকায় কায়াক উল্টে যাওয়ার ভয় নেই। তবে কায়াকিং করতে চাইলে দেওয়া হয় লাইফ জ্যাকেট। যারা সাঁতার জানেন না তাদের জন্য লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক।

যেভাবে যাবেন : রাজধানীর গাবতলী থেকে সাভারমুখী যেকোনো বাসে উঠে নামতে হবে বলিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ডে। বলিয়ারপুর থেকে ইউসুফনগরে যেতে রিকশায় নেবে ৪০ থেকে ৬০ টাকা আর ইজিবাইকে জনপ্রতি ২০ টাকা। 

ডেমরায় কায়াকিং

‘ইয়াস কায়াকিং পয়েন্ট’ খুব অল্প মূল্যে কায়াকিং করার সুযোগ দিচ্ছে। রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এক কিলোমিটার দূরে গ্রিন মডেল টাউনে, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের পাশেই বালুর মাঠ ধার্মিকপাড়ায় পেয়ে যাবেন এই কায়াকিং পয়েন্ট।

কায়াকিং করার জন্য এখানে দু-তিন জনের বসার উপযোগী কায়াক আছে। প্রতি ১৫ মিনিটের জন্য ৫০, ৩০ মিনিটের জন্য ১০০, ৬০ মিনিটের জন্য ১৫০ টাকা খরচ হবে কায়াকিং করতে। এ ছাড়া ৫০ বছরের বেশি বয়সিরা সকাল ৬টা থেকে ৮টা- এ দুই ঘণ্টা সম্পূর্ণ ফ্রি কায়াকিং করতে পারেন সেখানে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এখানে কায়াকিং করা যায়।

যেভাবে যাবেন : ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে বাস অথবা লেগুনায় ৫-১০ টাকায় কোনাপাড়া, কোনাপাড়া থেকে ২০ টাকা রিকশা ভাড়ায় অথবা ১০ টাকায় অটোতে ইয়াস কায়াকিং পয়েন্ট।

কাপ্তাই হ্রদে কায়াকিং

রাঙামাটি ভ্রমণের কথা এলেই প্রথমে চলে আসে কাপ্তাই লেকের কথা। এখানকার সবুজে ঘেরা পাহাড়ি ঝরনা, আঁকাবাঁকা রাস্তা এবং ছোট ছোট পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য আপনার ব্যস্তময় জীবনে আনবে স্বস্তি। ‌কাপ্তাই কায়াক ক্লাব কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাইয়ের স্বচ্ছ জলে দিচ্ছে রোমাঞ্চকর কায়াকিংয়ের সুযোগ। ক্লাবের নিজস্ব কায়াক আছে। আগ্রহীরা নির্ধারিত ভাড়ায় এসব কায়াকে চড়তে পারেন। পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে কায়াকিং করতে যাওয়া অতিথিদের জন্য রাতে থাকারও বন্দোবস্ত করেছে ক্লাবটি। এ শীতে কাপ্তাই কায়াক ক্লাব নিয়ে এসেছে ক্যাম্পিং আর কায়াকিংয়ের দারুণ সুযোগ। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা গ্রুপে ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আর সঙ্গে কায়াকিং তো আছেই।

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে কাপ্তাই যাওয়ার সরাসরি বাস রয়েছে। বাস সরাসরি কাপ্তাই নতুন বাজার চলে যায়। নতুন বাজারের ৭ কিলোমিটার আগে কাপ্তাই কায়াক ক্লাব। জুম রেস্টুরেন্টের টার্নিং পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কায়াক ক্লাবের সাইনবোর্ড/বিলবোর্ড দেখতে পাবেন। সেখানে নামলেই হবে। উল্লেখ্য, ফেসবুকে কায়াক ক্লাবের পেজে আগে থেকে যোগাযোগ করে যাওয়া ভালো। কারণ আবহাওয়া বা বিশেষ কারণে কায়াকিং বন্ধ থাকতে পারে। কায়াকিং করা যায় সন্ধ্যা পর্যন্ত।

ভোলা কায়াকিং পয়েন্ট

প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে সুবিশাল জলরাশির মধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে ভেসে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে ভোলা কায়াকিং পয়েন্টে। জেলায় বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে এ কায়াকিং পয়েন্ট। উপজেলা সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বান্দেরপাড়ে ব্যক্তি-উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এ বিনোদন কেন্দ্রটি। স্বচ্ছ লেকটিতে প্রবেশ করলে চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। বরিশাল বিভাগের প্রথম কায়াকিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত এখানে প্রতিদিনই অনেক পর্যটক আসেন কায়াক করতে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে প্যাডেল বোট, ভাসমান লাভ পয়েন্ট ও ডোরেমন রাইড।

যেভাবে যাবেন : দেশের যেকোনো স্থান থেকে প্রথমে আপনাকে ভোলা সদরে আসতে হবে নদীপথে। সেখান থেকে ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ভেলুমিয়া বাজারসংলগ্ন লেকে এলেই পেয়ে যাবেন ভোলা কায়াকিং পয়েন্ট।

রেজু খালে কায়াকিং

কক্সবাজারে পর্যটকদের বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কায়াকিং। সাগরপাড়ে ঘুরতে ঘুরতে যদি একটু ভিন্ন ধরনের কিছু করতে ইচ্ছা করে অথবা এক পাশে সমুদ্রের নীল জল আরেক পাশে পাহাড়বিস্তৃত কেওড়াবনের পাশঘেঁষে জোয়ারভাটায় কায়াকিং করার অভিজ্ঞতা নিতে ইচ্ছা করে; তাহলে আপনাকে চলে আসতে হবে ‘কক্স কায়াকিং’য়ে।

হিমছড়ির রেজু খালেই এখন পাওয়া যাবে কায়াকিংয়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। খালের স্বচ্ছ পানি মেশে বঙ্গোপসাগরে। আর এ স্বচ্ছ পানিতে কায়াক চালাতে চালাতেই দেখা যাবে দুই পাশের সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্য। লাইফ জ্যাকেট, হেলমেটসহ শান্ত পানিতে একা অথবা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে কায়াকিংয়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে খুব নিরাপদেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যটকরা মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে অবস্থিত রেজু খালে কায়াকিংয়ে মেতে উঠছেন। রেজু খালটি সরাসরি সাগরে সংযুক্ত হওয়ায় সাগরের স্বচ্ছ পানির স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে এখানে। এর এক পাশের পাহাড়ের সৌন্দর্যও বেশ উপভোগ্য। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কায়াকিং করা যাবে এখানে। ৩০ মিনিট কায়াক করতে খরচ পড়বে মাত্র ২৫০ টাকা।

যেভাবে যাবেন : কক্সবাজারের কলাতলী ডলফিন মোড় থেকে ইনানীগামী যেকোনো সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় রেজু খাল বিজিবি-পুলিশ সম্মিলিত চেকপোস্টের পরে রেজু খাল ব্রিজ। ব্রিজের অন্য প্রান্তেই কক্স কায়াকিং সেন্টার।

সতর্কতা

  • কায়াকিং করতে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে রাখতে হবে 
  • কায়াকিংয়ের সময় জোয়ার-ভাটা, আশপাশের জলযান নজরে রাখুন 
  • বৈরী আবহাওয়ায় কায়াক করবেন না 
  • কায়াকিংয়ের সময় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
  • কায়াক বোটে বসে কোনো কিছু পানিতে ফেলে পরিবেশ ও পানি দূষণ থেকে বিরত থাকুন

ছবি : গো যায়ান, নাকিব, ইকরাম

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা